খুলনা, বাংলাদেশ | ২৪ ভাদ্র, ১৪৩১ | ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  জাতীয় নাগরিক কমিটির আত্মপ্রকাশ আজ

যশোরে ক্লিনিকের কেবিনে ফোঁড়াকাটা রোগী ৫৩ দিন !

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

যশোরে এক রোগী ছাড়ছেন না প্রাইভেট ক্লিনিকের কেবিন। একটানা ৫৩ দিন পার হলেও রোগী বাড়ি ফিরতে চাচ্ছেন না। স্বজনরাও তাদের রোগীকে বাড়ি নিয়ে যেতে নারাজ। যা নিয়ে গোটা ক্লিনিকপাড়ায় তুমুল হৈ-চৈ সৃষ্টি হয়েছে। বাধ্য হয়ে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ অভিযোগ দিয়েছে সিভিল সার্জন অফিসে। এরপর মঙ্গলবার ডেপুটি সিভিল সার্জন নাজমুস সাদিক রাসেলসহ একটি টিম ক্লিনিকটি পরিদর্শনে গিয়ে দু’পক্ষের বক্তব্য শুনেছেন।

শহরের ঘোপ জেলরোড়ের কুইন্স হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে, সামান্য একটি ফোঁড়ার অপারেশন করা হয়েছে ওই রোগীর। যাতে সর্বোচ্চ তিনদিন ভর্তি থাকার প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু ওই রোগীর ছাড়পত্র দেয়া হলেও হাসপাতাল ছাড়ছে না। একাধিকবার তাগাদা দিলেও রোগী ও তার স্বজনরা একটি কেবিন দখল করে আছে। এমনকি পরিশোধও করেছেন না হাসপাতালের বিলও। ইতিমধ্যে এ ঘটনা ৫৩ দিন পার হয়ে গেছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, রোগী এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। তবে রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, তাদের রোগী অপচিকিৎসার শিকার হয়েছে। এখনো সুস্থ হয়নি। সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তারা হাসপাতাল ছাড়বেন না।

কুইন্স হাসপাতাল সূত্র বলছে, চলতি বছরের ১৭ মে শহরের বকচর এলাকার মতিয়ার রহমানের স্ত্রী মাহমুদা খাতুন পেটে একটি ফোঁড়া নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। ওইদিন অধ্যাপক ডাক্তার সৈয়দ মাহবুবুল আলম তার অপারেশন করেন। এরপর থেকে রোগী হাসপাতালের ৭০৩ নম্বর কেবিনে চিকিৎসাধীন ছিলেন। কর্তৃপক্ষ তাকে ২২ মে ছাড়পত্র দিয়ে বাড়িতে চলে যেতে বলেন। কিন্তু রোগীর স্বজনরা নানা তালবাহানায় হাসপাতালে থেকে গেছেন। এরপর একে একে ৫৩ দিন পার হলেও তারা হাসপাতাল ছাড়তে ও বিল পরিশোধ করতে চাচ্ছেন না। ফলে রোগী নিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

রোগীর মেয়ে রাবেয়া বসরী বলেন, তার মা এখনও সুস্থ হয়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অন্য ডাক্তারের দিয়ে লেখা ছাড়পত্র দিচ্ছেন। যে ডাক্তার তার মাায়ের অপারেশন করেছেন ওই ডাক্তারের লেখা ছাড়পত্র দিতে চাচ্ছেন না। কারণ তার মায়ের অপচিকিৎসা করা হয়েছে। তার মা এখনো সুস্থ হয়নি। মায়ের চিকিৎসার পরিবর্তে হাসপাতাল ছাড়তে বাধ্য করা হচ্ছে। রোগীর ফাইলপত্র গায়েব করে টাকা দিয়ে মীমাংসা করতে চাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে কুইন্স হাসপাতালের এডমিন আইটি হাসান ইমাম শিমুল জানান, মিথ্যাচার করছে রোগীর স্বজনরা। ফাইল গায়েব করা বা টাকা দিয়ে মীমাংসার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। রোগীর স্বজনদের অভিযোগের উপর ভিত্তি করে সাতজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দিয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে ওই রোগীর বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। সেখানে কোনো সমস্যা পাওয়া যায়নি। তারপর রোগীরকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। নিজেরা ফাইল থেকে রোগীর বিভিন্ন তথ্য গায়েব করেছে। এটি সামান্য একটি ফোঁড়ার অপারেশন। কোনো অপচিকিৎসার সুযোগ নেই।

ছাড়পত্র দেয়ার পরও রোগীর স্বজনরা কেনো বাড়ি যাচ্ছে না বিষয়টি রহস্যজনক। ফলে বাধ্য হয়ে সিভিল সার্জন বরাবরে একটি দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে ডেপুটি সিভিল সার্জন নাজমুস সাদিক রাসেল বলেন, ক্লিনিকটিতে এ জাতীয় অভিযোগ পেয়ে মঙ্গলবার পরিদর্শনে যাই। এসময় তার সাথে স্বাস্থ্য বিভাগের অন্যান্য কর্মকর্তারাও ছিলেন ও দু’পক্ষের বক্তব্য শুনেছেন। এ ঘটনায় বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। সেই রিপোর্ট হাতে পেলে বলা সম্ভব হবে রোগী বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কার কথা সত্যি।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!