এহসান এস বাংলাদেশ সংস্থার বিরুদ্ধে এবার যশোরের আট গ্রাহক আদালতে মামলা করেছে। সংস্থা তাদের কাছ থেকে ৬২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাত করেছে বলে মামলায় বলা হয়েছে। মামলায় সংস্থার চেয়াম্যান, প্রধান নির্বাহী, জিএম, পরিচালকসহ ২৭ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। সোমবার যশোর শহরের শংকরপুর চোপদারপাড়ার সাহিদা বেগম, চাঁচড়া রাজা বরদাকান্ত রোডের মাসুদ মিয়া, সদরের ফরিদপুর গ্রামের নাহার খাতুন, বালিয়া ভেকুটিয়া গ্রামের শফিকুল ইসলাম, আব্দুল মতিন, শাখারিগাতি গ্রামের আব্দুল জলিল, বালিয়া গ্রামের আনোয়ারা বেগম ও রূপদিয়া কয়লাপট্টির নুর ইসলাম মিয়া বাদী হয়ে পৃথক এ মামলা করেন। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুদ্দীন হোসাইন অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, সংস্থার চেয়ারম্যান চট্টগ্রাম পটিয়া দক্ষিণ গোবিন্দদারখিল আল জামিরিয়ার প্রিন্সিপাল মুফতি আবু তাহের নাদভী, সংস্থার প্রধান নির্বাহী ব্যবস্থাপক মাগুরা সদরের সাজিয়ারা কাজী রবিউল ইসলাম, সংস্থার জিএম মাগুরা সদরের শিমুলিয়া গ্রামের জুনায়েদ আলী, পরিচালক মাগুরা সদরের রাউতলা গ্রামের আজিজুর রহমান, পরিচালক কুষ্টিয়া মিরপুরের লক্ষীধরদিয়াড় গ্রামের মঈন উদ্দীন, পরিচালক খুলনা লবনচরার হরিনটানা রিয়াবাজারের মুফতি গোলাম রহমান, পরিচালক গাজীপুর টঙ্গী খাঁপাড়া সৌদী মসজিদের পাশের আব্দুল মতিন, মহাপরিচালক প্রশাসন টঙ্গী ঘুরুলিয়া এহসান সিটির আমিনুল হক, চট্টগ্রাম শহরের জামানকান রোডের কলিমউল্লাহ কলি, পরিচালক ঢাকা তুরাগ থানার নিশাতনগরের মিরাজুর রহমান, পরিচালক খুলনা খানজাহান আলী থানার শিরোমনির মিজানুর রহমান, পরিচালক যশোর সদরের রামনগরের মুফতি মুহাম্মদ ইউনুস আহম্মেদ, পরিচালক খুলনা পাইকগাছার মরল গ্রামের মনিরুল ইসলাম, পরিচালক মাগুরা সদরের শিমুলিয়া গ্রামের আইয়ুব আলী, পরিচালক যশোর বাঘারপাড়ার ধান্যপাড়ার সামসুজ্জামান টিটু, যশোর শাখার ম্যানেজার মাগুরা সদরের শিমুলিয়া গ্রামের আতাউল্লাহ, কেশবপুরের বেতিখোলা গ্রামের আব্দুল হালিম, মাঠকর্মী যশোর শহরের কারবালা রোডের সিরাজুল ইসলাম সোনামিয়া, এফও কমিটির সভাপতি নতুন উপশহরের এ বøকের ৪৭ নম্বর বাড়ির শামছুর রহমান, এফও কমিটির সেক্রেটারি শেখহাটি জামরুলতলা তারা মসজিদ এলাকার বাবর আলী, প্রচার সম্পাদক জামরুলতলার আব্দুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক আরবপুর বিমানবন্দর রোডের এসএম সেলিমউল চৌধুরী, এফও অর্থ সম্পাদক মাছ বাজার রোডের খাদেম মোকছেদ আলী, এফও কমিটির সাবেক সেক্রেটারি সদরের রামনগর গ্রামের মুফতি ফুরকান আহম্মেদ, উপশহর ই-ব্লকের আক্তারুজ্জামান, পুলিশ লাইন টালিখোলার মোহাম্মদ আলী ও বালিয়া ভেকুটিয়া গ্রামের হাফেজ কামরুল।
আটটি মামলায় উল্লেখ করা হয়, আসামিরা সুন্নতি পোশাক পরে হাদিস-কোরআনের নাম ভাঙ্গিয়ে সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করে অর্থ আত্মসাতকারী। আসামিরা যশোরে এহসান এস বাংলাদেশ কোম্পানির বিভিন্ন শাখা অফিস খুলে ধর্মীয় লেবাসের লোক নিয়োগ দেয়। এরপর তারা যশোরের বিভিন্ন লোকজনকে অধিক মুনাফা দেয়ার আশ্বাস দিয়ে তাদের কোম্পানিতে টাকা বিনিয়োগ করতে প্রলুব্ধ করে। এরপর কোম্পানির মাঠকর্মী থেকে চেয়ারম্যান পর্যন্ত সকলে প্রতি গ্রাহককে টাকা ফেরত দেয়ার অঙ্গীকার করে। তাদের কথা বিশ্বাস করে কয়েক দফায় নাহার খাতুন ৩ লাখ, সাহিদা বেগম ১৬ লাখ ৫০ হাজার, মাসুদ মিয়া ১১ লাখ ৫০ হাজার, শফিকুল ইসলাম ৪ লাখ, আব্দুল মতিন ৫ লাখ ৮৫ হাজার, আব্দুল জলিল ১৩ লাখ ৫০ হাজার, আনোয়ারা বেগম ৫ লাখ, নুর ইসলাম মিয়া ৩ লাখ টাকা এহসান সংস্থায় আমানত রাখেন।
সংস্থা তাদের শর্ত অনুযায়ী কয়েক মাস লভ্যাংশ দিতে থাকে গ্রহকদের। এরপর কয়েক মাস যেতে না যেতেই চুক্তি অনুযায়ী লভ্যাংশ না দেয়ায় তারা আমানতের টাকা ফেরত দাবি করে। আসামিরা টাকা ফেরত না দিয়ে তালবাহানা শুরু করে। পরে বাধ্য হয়ে তারা আদালতে এ মামলা করেন। ওই টাকার কিছু অংশ বিদেশে পাচার করা হয়েছে বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়।
উল্লেখ্য, এরআগেও এহসান এস সংস্থার বিরুদ্ধে আদালতে একাধিক মামলা হয় এবং আসামি করা হয় ওইসব কর্মকর্তাদের।
খুলনা গেজেট/কেএম