যশোরে একটি মামলার আসামি আটক করানোর কথা বলে বাদীর কাছ থেকে ২৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে আইনজীবীর সহকারী ভবতোষের বিরুদ্ধে। শুধুই তাই নয়, মামলাটি খারিজের পরও চলমান বলে প্রতিবার হাজিরার জন্য আরও ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকা করে হাতিয়ে নেবার অভিযোগ করা হয়েছে। এসব অভিযোগ এনে যশোর শহরের বকচর এলাকার নাজমুল ইসলামের মেয়ে সালমা সুলতানা মঙ্গলবার যশোর জেলা আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী সমিতির টাউট উচ্ছেদ ও শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির আহবায়ক খোন্দকার মোয়াজ্জেম হোসেন মুকুল। তিনি বলেন, অভিযোগের বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। জড়িত হলে কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।
লিখিত অভিযোগে সালমা সুলতানা উল্লেখ করেন, ২০১৮ সালের ২৩ মে তিনি বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেন। যার নম্বর-১০৮। মামলাটি পরিচালনা করছিলেন যশোর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহানুর আলম শাহীন। সেই সুবাদে তার সহকারী ভবতোষ মামলার আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করানোর নামে ২৫ হাজার টাকা নেন। কিন্তু ওই মামলায় আসামি আটক না হয়ে ২০২০ সালের ৬ অক্টোবর মামলাটি খারিজ হয়ে যায়। এরপর বাদীকে মামলা চলছে বলে হাজিরার কথা বলে প্রতিবারই ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকা করে হাতিয়ে নিচ্ছেন। শেষমেষ তিনি জানতে পারেন মামলাটি খারিজ হয়ে গেছে। এ ঘটনায় তিনি ভোবতোষের কাছে প্রতারণার শিকার এবং আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি সুবিচার পেতে জেলা আইনজীবী সমিতিতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এ বিষয়ে অভিযোগকারী সালমা সুলতানা বলেন, ২০১৮ সালের ৮ মে তার বাড়িতে দিনে দুুপুরে চুরি হয়। চোরেরা বাড়ি থেকে আটভরি সোনার গহণা, আড়াই লাখ টাকা ও একটি মোবাইল নিয়ে যায়। এ ঘটনায় তিনি অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেন। তৎকালীন এসআই হাসান মামলাটি তদন্ত করেন। ভবতোষ তাকে জানায়, তার মোবাইল ট্রাকিং করে পুলিশ একজনকে শনাক্ত করেছে। সব মালামালই উদ্ধার হবে। আসামিকে এ মামলায় আটক করতে টাকা লাগবে। এ জন্য তিনি সর্বমোট ২৫ হাজার টাকা নেন। অথচ ওই মামলায় পুলিশ আসামির সন্ধান না পেয়ে ফাইনাল রিপোর্ট দেয় এবং মামলাটি খারিজ হয়ে যায়। কিন্তু এসব বিষয়ে গোপন করে ভোবতোষ নিয়মিত হাজিরার নামে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ বিষয়ে আইনজীবী শাহানুর আলম শাহীনের কাছে গেলে তিনিও কোন সমাধান দেননি। উল্টো ভবতোষের পক্ষে কথা বলেছেন। এরপর টাকা ফেরত চাইলে নানা ধরণের হুমকি ধামকি দিতে থাকেন ভবতোষ। বাধ্য হয়েই তিনি আইনজীবী সমিতিতে এ অভিযোগ দেন।
এ বিষয়ে ভোবতোষ বলেন, ওই মামলায় একজন আসামি আটক হয়েছিলো। কিন্তু পুলিশ তদন্ত করে আসামির সম্পৃক্ততা না পেয়ে মামলার ফাইনাল রিপোর্ট দেয়। মামলাটি খারিজ হয়ে যায়। তার বিরুদ্ধে টাকা হাতানোর অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন ভবতোষ।
খুলনা গেজেট/ এস আই