শারদীয় দুর্গোৎসবে প্রস্তুত যশোরের মন্ডপগুলো। এ বছর জেলায় ৬শ’ ৯৯টি মন্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। শেষ মূহুর্তে চলছে প্রতিমায় রং তুলির আঁচড় ও সাজ-সজ্জার কাজ। সোমবার মহাষষ্ঠীর মাধ্যমে ঢাকে কাঠি পড়া মাত্রই শুরু হবে সনাতনদের বৃহৎ এ উৎসব। গত বছর করোনায় উৎসব তেমন জমে না উঠলেও, এবার নতুন মাত্রা যোগ হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
যশোর শহরের পূজা মন্দিরগুলোতে এখন চলছে শেষ সময়ের সাজগোজ। বিশেষ করে আলোকসজ্জা, তোরণ নির্মাণসহ অন্যান্য কাজ। বেজপাড়া পূজা সমিতি মন্দির, রামকৃষ্ণ আশ্রম, বকচরের লক্ষ্মী নারায়ণ বিগ্রহ মন্দির, সিদ্ধেশ্বরী পুরাতন কালীবাড়ি মন্দির, রাধাগোবিন্দ পূজা মন্দির, শহীদ সুধীর ঘোষ পূজা মন্দির, নীলগঞ্জ মহাশ্মশান পূজা মন্দিরসহ শহরের অন্যান্য মন্দিরেও চলছে একই কর্মযজ্ঞ।
এ বছর জেলায় ৬শ’৯৯টি মন্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় একশ’ ৪৫টি, মণিরামপুরে একশ’ তিন, বাঘারপাড়ায় ৯৪, অভয়নগরে একশ’২৬, কেশবপুরে ৯৮, ঝিকরগাছায় ৫৫, শার্শায় ২৯ ও চৌগাছায় ৪৯টি মন্ডপে এবার দুর্গোৎসব হবে।
এবারের পূজায় পঞ্চমি পড়েছে ১০ অক্টোবর, ১১ অক্টোবর হবে ষষ্ঠী, ১২ অক্টোবর সপ্তমী, ১৩ অক্টোবর অষ্টমী, নবমী পড়েছে ১৪ অক্টোবর। এরপর ১৫ অক্টোবর বিজয়া দশমী।
ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে একাধিক মতবিনিময় সভা করেছে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দ। এবার যশোরের আট উপজেলাতে তিনটি স্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
শহরের বেজাপাড়া পূজা সমিতি মন্দিরের পুরোহিত নরেন্দ্র নারায়ণ চক্রবর্তী জানান, শারদীয় দুর্গোৎসবের শুভ মহালয়া শেষ হয়েছে বুধবার। মহালয়ার মাধ্যমে ভক্তকুল মর্তে আমন্ত্রণ জানানো হয় দেবী দুর্গাকে। মহালয়া মানেই দুর্গাপূজার দিন গোনা শুরু হয়ে যাওয়া। পঞ্জিকা মতে, জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার পৃথিবীতে আসবেন ঘোড়ায় চড়ে। এর ফল হচ্ছে ছত্রভঙ্গ। আর দেবী সপরিবারে স্বর্গালোকে বিদায় নেবেন দোলায় বা পালকিতে চড়ে।
বকচরের লক্ষ্মী নারায়ণ বিগ্রহ মন্দিরের ভাস্কর গোপাল পাল বলেন, এ বছর তিনি ২৫টি পূজা মন্দিরের জন্যে প্রতিমা তৈরি করেছেন। যার মধ্যে যশোরের মণিরামপুর, কেশবপুর, চৌগাছা, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর থেকে অর্ডার দেয়া প্রতিমাও রয়েছে।
পূজা উদযাপন পরিষদ পৌর কমিটির সভাপতি ও সিদ্ধেশ্বরী পুরাতন কালীবাড়ি মন্দিরের সভাপতি সুজিত কাপুড়িয়া বাবলু বলেন, গত বছর করোনা মহামারিতে দুর্গাপূজায় কিছুটা মলিনতা থাকলেও এবার জাকজমকপূর্ণই হবে। কারণ বর্তমানে দেশে করোনার প্রকোপ খানিকটা কমেছে।
জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক যোগেশ চন্দ্র দত্ত বলেন, দুর্গোৎসবের সার্বিক প্রস্তুতির ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। প্রশাসনের পাশাপাশি তাদেরও একটি টিম কাজকর্ম তদারকি করছে।
সভাপতি অসীম কুন্ডু বলেন, যশোরের সকল উপজেলায় প্রশাসনের সাথে একাধিক সভা হয়েছে সংশ্লিষ্ট পূজা কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে। একইসাথে সরকারিভাবে বরাদ্দও দেয়া হয়েছে পূজা মন্ডপগুলোতে। তবে গত বছরের চেয়ে এবার পূজা যথেষ্ট জমজমাট হবে বলে তারা আশা করছেন।
খুলনা গেজেট/এএ