খুলনা, বাংলাদেশ | ১৩ পৌষ, ১৪৩১ | ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  আগামী বিজয় দিবসের আগে জুলাই গণহত্যার বিচার সম্পন্ন করা হবে : আসিফ নজরুল
  সচিবালয়ের নিরাপত্তার স্বার্থে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার সীমিত : প্রেস উইং
  কুড়িগ্রামে বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষ, যুবদল নেতা নিহত
খাদ্য গোডাউনে চাল দেবার চুক্তিভঙ্গ

যশোরের ১৯৩ রাইস মিলের লাইসেন্স স্থগিত হচ্ছে

যশোর প্রতিনিধি

যশোরে বোরো মৌসুমে ২৭ হাজার ৩১২ মেট্রিকটন চাল দেবে বলে চুক্তি করেন ৩৬১ জন রাইস মিল মালিক। অথচ ধানের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে দিয়েছে মাত্র ১৫ হাজার একশ’ পাঁচ মেট্রিকটন। এসব রাইসমিল মালিকের মধ্যে ৮১ জন মিলার একেবারেই চাল দেননি। আংশিক চাল দিয়েছেন ১১১ জন। আর সম্পূর্ণ চাল দিয়েছেন ১৪৫ জন মিল মালিক। এটি হাসকিং মিলের ক্ষেত্রে। ২৪ জন অটো মিল মালিকের মধ্যে একজন একেবারেই চাল দেননি। ১৩ জন মিলার আংশিক দিয়েছেন। আর চুক্তি অনুযায়ী সম্পূর্ণ চাল দিয়েছেন ১০ জন অটো রাইস মিল মালিক। গত বোরো মৌসুমে সরকারের সাথে চুক্তি করার পরও চাল না দেয়া যশোরের ১৯৩ মিল মালিকের তালিকা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

অধিদপ্তর থেকে পাঠানো নির্ধারিত ছকে এসব মিলারের তথ্য পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে চুক্তি ভঙ্গ করা এসব মিলের লাইসেন্স স্থগিত হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। বাজারে ধানের দাম বেশি বলে সুবিধাবাদী রাইসমিল মালিকরা চাল প্রদান করেননি। তারা খোলা বাজারে চাল বিক্রি করে অধিকমাত্রায় লাভবান হয়েছেন। গত বছর এসব মিল মালিক কেজিতে সর্বোচ্চ নয় টাকা পর্যন্ত লাভ করেছিলেন বলে খাদ্য ও কৃষি বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। চুক্তিভঙ্গ করা রাইসমিল মালিকরা মনে করেছেন, তারা চুক্তিভঙ্গ করলেও কিছুই হবে না! পার পেয়ে যাবেন অবলীলায়। কিন্তু সেই সুযোগ চুক্তিভঙ্গকারীরা পাবেন না বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

জেলা খাদ্য বিভাগ থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, যশোরে কোন মিলার কী পরিমাণ চাল দিয়েছেন সেই তালিকা চেয়ে পাঠায় খাদ্য অধিদপ্তর। নির্দিষ্ট ছকে তথ্য চাওয়া হয় অধিদপ্তর থেকে। সেই অনুযায়ী, মিলারদের তথ্য পাঠানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, যারা চুক্তি করার পরও কোনো চাল দেয়নি তাদের মিলের লাইসেন্স স্থগিত করা হতে পারে। লাইসেন্স স্থগিত হওয়ার তালিকায় আংশিক চাল প্রদানকারী রাইসমিল মালিকরাও পড়তে পারে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

এ বছর বোরো মৌসুমে যশোরে ১০ লাখ ৩০ হাজার ৭৬৬ মেট্রিকটন ধান উৎপাদন হয়েছে। আর চাল উৎপাদন হয়েছে ছয় লাখ ৮০ হাজার তিনশ’ ছয় মেট্রিক টন। অথচ খাদ্য গুদামে চাল সংগ্রহের চিত্র হতাশাজনক। দাম বৃদ্ধির অজুহাতে ১৯৩ জন মিলার চুক্তি অনুযায়ী চাল দেননি। এ কারণে ২৭ হাজার ৩১২ মেট্রিক টনের জায়গায় সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ১৫ হাজার একশ’ পাঁচ মেট্রিক টন চাল। বোরো মৌসুমে চাল দেয়ার জন্য যশোরে ৩৬১ জন মিলার চুক্তিবদ্ধ হন। তারা ২৭ হাজার ৩১২ মেট্রিকটন চাল দিবেন বলে চুক্তি করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই চুক্তির প্রতি বুড়ো আঙুল দেখিয়েছেন মিলাররা। ধানের দাম বেশি উল্লেখ করে পুরোপুরি চাল দেননি অধিকাংশ মিলার। অথচ চুক্তি অনুযায়ী প্রত্যেক মিলারের চাল দেয়া বাধ্যতামূলক। যশোরে এ বছর ২৪টি অটো রাইসমিল এবং ৩৩৭টি হাসকিং মিল মালিক চাল দিবেন বলে চুক্তিবদ্ধ হন।

যশোর সদর খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদের কাছে সংগ্রহ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ’বোরো মৌসুমে তার গুদামে তিন হাজার ৮৫৮ মেট্রিকটন সিদ্ধ চাল ও ৬৭৩ মেট্রিক টন আতপ চাল কেনা হয়েছে।’ সংগ্রহ নিয়ে খুশি তিনি।

সংগ্রহ নিয়ে জেলা খাদ্য কর্মকর্তা আব্দুর রহমান বলেন, ধানের দাম বেশির কথা বলে চুক্তিবদ্ধ মিলারদের অনেকেই পুরোপুরি চাল দেননি। এমনকি ৮১ জন মিলার একেবারেই চাল দেননি বলে জানান তিনি। জেলা খাদ্য কর্মকর্তা দু’জন মিলারের নাম উল্লেখ করে বলেন, তাদেরকে চাল দেয়ার জন্যে অনুনয় বিনয় করা হয়। কিন্তু কোনো কথা শোনেননি। চুক্তিভঙ্গ করা মিলারদের তালিকা অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। অধিদপ্তর তাদের বিরুদ্ধে শান্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এমনকি তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হতে পারে বলে তিনি জানান।

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!