যশোরের একটি আদালত এবার একইদিনে ৪১ মামলার রায় ঘোষণা করেছেন। সোমবার যুগ্ম দায়রা জজ ২য় আদালতের বিচারক শিমুল কুমার বিশ্বাস এ রায় ঘোষণা করেন। এরআগে এ আদালত গত ১০ নভেম্বর একইদিনে ১৬ মামলার রায় ঘোষণা করেছিলেন। এদিন ৪১ মামলার রায় ঘোষণার পর আদালত চত্বরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট লতিফা ইয়াসমিন ও ভীমসেন দাস। এপিপিদ্বয় জানান, যশোরের আদালতে একদিনে ৪১ মামলার রায় ঘোষণার ইতিহাস এটিই প্রথম। এ ধরণের রায় ঘোষণায় আদালতে মামলার জট নিরসন হবে বলে তারা অভিমত ব্যক্ত করেন।
আদালত সূত্র জানায়, ৪১টি মামলার রায় ঘোষণার মধ্যে ২৬ টি মামলায় ২৭ জনকে পৃথক মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করেছেন আদালত। এছাড়া অপর ১৫ মামলায় ১৬ আসামিকে খালাশ প্রদান করা হয়েছে। মাদক, চোরাচালান, অস্ত্র, এনআই এক্টের এসব মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা পলাতক রয়েছেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে যশোর সদর উপজেলার সীতারামপুর গ্রামের শেখ আব্দুল করীমের ছেলে কবীর হোসেন ঠান্ডুকে অস্ত্র মামলায় সাতবছরের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেছে আদালত।
এছাড়া সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের মনিরুল ইসলামের মেয়ে পলাতক রেশমা বেগমকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও দুই হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে দুই মাসের সশ্রম কারাদন্ড, শংকরপুর এলাকার ইবাদ আলীর ছেলে পলাতক ইমরান খানকে মাদক মামলায় চার বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও দুই হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই মাসের সশ্রম কারাদন্ড, অভয়নগর উপজেলার গোয়াখোলা গ্রামের আব্দুল গণির ছেলে পলাতক আবুল কালাম ওরফে মাসুদ রানাকে চার বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও দুই হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই মাসের সশ্রম কারাদন্ড, শার্শা উপজেলার রাড়ীপুকুর গ্রামের মৃত কওসার আলীর ছেলে পলাতক মফিজুল ইসলামকে তিন বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও দুই হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই মাসের সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেন আদালত।
একই আদালত অপর একটি মামলায় দুই বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও এক হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন।
এ আদেশের সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, শার্শা উপজেলার ইছাপুর গ্রামের আফছার আলীর ছেলে মিজানুর রহমান, বেনাপোল ভবেরবেড় গ্রামের মৃত মোকছেদ সরদারের ছেলে আলী কদর, মাদারীপুর জেলার পূর্বস্বর গ্রামের কবির মাতব্বরের স্ত্রী মমতাজ বেগম, বেনাপোল ঘিবা গ্রামের ইউনুস আলী মোড়লের ছেলে আব্দুল আলীম ও একই এলাকার আব্দুল আলীমের স্ত্রী আলেয়া বেগম, ফরিদপুর সদর উপজেলার খাবাসপুর গ্রামের মাধব কুন্ডুর ছেলে প্রদীপ কুন্ডু, বেনাপোল বালুন্ডা গ্রামের আকবরের ছেলে আলমগীর হোসেন, ঝিকরগাছা উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের নাজিম উদ্দিনের ছেলে সিজান মাহমুদ, ঝিকরগাছার মোবারকপুর গ্রামের আলাউদ্দীন আলীর ছেলে সালাউদ্দীন, পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলার বাহেরচর গ্রামের মুকুন্দ কুমার দাসের ছেলে সনজিৎ দাস, যশোর শহরের চোপদারপাড়ার আকামত আলীর স্ত্রী মালেকা বেগম, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার গোবিন্দকাঠী গ্রামের আমজেদ মিস্ত্রির ছেলে সিরাজুল মিস্ত্রি, যশোর শহরের শংকরপুর এলাকার শ্রাবন রহমান হাসিবের স্ত্রী পারভীন আক্তার, শার্শার বাগআঁচড়া গ্রামের কাদের ধাবকের ছেলে মিঠু ধাবক, কাশিপুর গ্রামের মৃত জয়নালের ছেলে আশাদুল ইসলাম আশা, অভয়নগরের বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের মৃত মহর আলীর ছেলে পলাতক ওহিদুল ইসলাম গাজী, বেনাপোল সাদিপুর গ্রামের মৃত এরশাদ আলীর ছেলে মোহাম্মদ আলম।
এছাড়া, এক বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও এক হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের সশ্রম কারাদন্ড প্রাপ্ত পলাতক আসামিরা হলেন সদর উপজেলার মালিরহাট মাঠপাড়া গ্রামের মৃত আসানুল হকের ছেলে পলাতক হাসিবুল ইসলাম, সাতক্ষীরার সুবারিঘাটা গ্রামের কালীদাসের ছেলে পলাতক অশোক কুমার দাস।
চেক জালিয়াতি মামলায় যশোর সদর উপজেলার ভেকুটিয়া গ্রামের রুহুল আমিন মুন্সির ছেলে হাফেজ নুর মোহাম্মদকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও চেকে বর্ণিত পাঁচ লাখ টাকা, মণিরামপুর উপজেলার দূর্গাপুর গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে রুহুল আমিনকে তিন মাসের বিনাশ্রম ও চেকে বর্ণিত দেড় লাখ টাকা, ঢাকার পুরানা পল্টন এলাকার আজহার আলীর ছেলে ইমাম হাসান সাইফীর এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও ১১ লাখ ৩০ হাজার টাকা অর্থদন্ডে দন্ডিত করা হয়।
আদালত ২৬ মামলায় ২৭ আসামির সাজা প্রদানের পর তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। এছাড়া একই আদালত পৃথক আরো ১৫টি মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত। ওই মামলায় ১৬ আসামির খালাশ প্রদান করেন আদালত।
খুলনা গেজেট/ এস আই