যশোরের আলোচিত সন্ত্রাসী হত্যা, চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলার পলাতক আসামি আনিসুর রহমান লিটন ওরফে ফিঙে লিটন আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। বুধবার(৪ সেপ্টেম্বর) সকালে একটি অস্ত্র মামলার ১০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৩য় আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন জানালে বিচারক তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লিটনের আইনজীবী বিএম অনিক ইসলাম।
আদালত সূত্র জানায়, ১৯৯৮ সালে একটি অস্ত্র আইনের মামলা করেন আনিসুর রহমান লিটনের বাবা বারান্দীপাড়া আমতলার বদরুদ্দীন খন্দকার। মামলায় অস্ত্রসহ আটক হয় সিটি কলেজপাড়ার প্রদীপ কুমার দাস ওরফে ভোম্বল লিটন। অভিযোগ করা হয়, আনিসুর রহমান লিটনকে হত্যার উদ্দেশ্যে তিনি গুলি করতে এসেছিলেন। পরবর্তিতে স্থানীয়রা প্রদীপকে আটক করেন। এসময় তার কাছ থেকে একটি রিভলবার ও গুলি উদ্ধার হয়। এসআই মিজানুর রহমানসহ আরও কয়েকজন দফায় দফায় মামলাটি তদন্ত করেন। শেষমেষ এ ঘটনার ১০ মাস পর ১৯৯৯ সালের ১৩ জুন কোতোয়ালি থানার তৎকালীন এসআই এমদাদুল হক মূল আসামিদের অব্যাহতির সুপারিশ করেন এবং উল্টো আনিসুর রহমান লিটনের বিরুদ্ধেই অস্ত্র আইনে একটি মামলা করেন। সেখানে উল্লেখ করা হয় পূর্ব শক্রতার জেরে অস্ত্র দিয়ে ওই আসামীদের ফাঁসানোর চেষ্টা করেন আনিসুর রহমান লিটন। পরে লিটনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন।
সর্বশেষ ২০০৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি স্পেশাল ট্রাইবুনাল-৪ এর বিচারক এমএম আমিনুল ইসলাম মামলার রায়ে আনিসুর রহমান লিটনকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেন। এরপর থেকেই লিটন পলাতক ছিলেন। তিনি যশোর ছেড়ে ভারতের কলকাতায় আস্তানা গেড়ে বসবাস শুরু করেন ও গোটা বারান্দিপাড়া, মোল্লাপাড়া এবং খুলনা বাসস্ট্যান্ড এলাকা নিয়ন্ত্রণ করতে থাকেন। পরে তিনি কলকাতা ছেড়ে বর্তমানে দুবাইতে বসবাস করছিলেন। সেখান থেকে চলতি সপ্তাহে যশোরে আসেন বলে গুঞ্জন চলছিল। শেষমেষ বুধবার তিনি আদালতে আত্মসমর্পন করে জামিনের আবেদন জানালে বিচারক ফারজানা ইয়াসমিন তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এ বিষয়ে আইনজীবী বিএম অনিক ইসলাম বলেন, আনিসুর রহমান লিটন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নির্যাতিত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা রয়েছে যা ষড়যন্ত্রমূলক। অস্ত্র মামলাটিও ষড়যন্ত্রমুলক বলে দাবি করেন তিনি। আইনজীবী আরও জানান, বর্তমানে দেশের পরিস্থিতি অনুকূলে আসায় লিটন আদালতে আত্মসমর্পন করেছেন। তারা এ রায়ের বিপক্ষে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন। তাদের বিশ্বাস লিটন ন্যায় বিচার পাবেন।
খুলনা গেজেট/এমএম