যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (যবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগে সংঘর্ষের ঘটনায় কমিটি স্থগিত করেছে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ। শনিবার রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংগঠনবিরোধী, শৃঙ্খলা-পরিপন্থী ও সংগঠনের মর্যাদা ক্ষুন্ন হওয়ার মতো কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করা হলো। একইসঙ্গে পরবর্তী সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ না করার ব্যাপারে সাতদিনের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে নির্দেশ দেওয়া হলো।
এরআগে যবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মণিরামপুর উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের সোহেলের ইন্দনে সহসভাপতি আল মামুন শিমন ও আরেক কর্মী আশরাফুল আলমকে মারপিট করা হয়। এসব অভিযোগ এনে কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সদ্য স্থগিত হওয়া কমিটির সহসভাপতি ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার গড়া গ্রামের আল মামুন শিমন ।
অভিযুক্ত অন্যরা হলেন, যশোর শহরের কাজীপাড়ার মনিরুল ইসলাম হৃদয়, ঝিনাইদহ মহেশপুরের দূর্গাপুর গ্রামের ইছাদ হোসেন, ঝিনাইদহ শৈলকুপা গাড়াগঞ্জ গ্রামের রনি, এছাড়া রাইসুল হক রানা, রাফি ও বেলাল।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, শনিবার দুপুর আড়াইটায় শিমন ও ওই প্রতিষ্ঠানের ছাত্র ঢাকা লালবাগের আশরাফুল আলম যবিপ্রবির শহীদ মশিউর রহমান হলের সামনে দাড়িয়ে ছিলেন। এসময় সোহেলসহ অন্যরা দা, চাপাতি, হকিস্টিক, লোহার রড, বাঁশের লাঠিসহ তাদের দু’জনকে ধাওয়া করে। পরে হত্যার উদ্দেশ্যে আক্রমন চালায়। এক পর্যায় তাদেরকে মারতে মারতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে নিয়ে যায়। তাদের দু’জনকে হকিস্টিক, লোহার রড, বাঁশের লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ী মারপিট করে। এ সময় শিমনের পকেটে থাকা ছয় হাজার ৭শ’ টাকা, গলায় থাকা ১২ আনা ওজনের সোনার চেইন।
এছাড়া এসময় আশরাফুলের কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন ও ১২ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। শেষমেষ হত্যার হুমকি দিয়ে অভিযুক্তরা তারা চলে যায়। পরে সহপাঠী ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিজেদের পরিবহনে যশোর হাসপাতালে ভর্তি করে। শিমন হাসপাতালে গুরুতর অসুস্থ থাকায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএমই বিভাগে অধ্যায়নরত খন্দকার আশিকের মাধ্যমে এ অভিযোগ থানায় জমা দেন। এসময় ছাত্রলীগ নেতা বিপ্লব দে শান্তও উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান বলেন, অভিযোগ দিয়েছে। পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিষয়টি নিয়ে তারা তদন্ত শুরু করেছেন। প্রমাণ পেলেই এ বিষয়ে নিয়মিত মামলা রুজু হবে।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ৩১ জুলাই রাতে ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের সোহেল রানাকে সভাপতি ও পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের তানভীর ফয়সালকে সাধারণ সম্পাদক করে ১১ সদস্যের আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়। সর্বশেষ শনিবার সভাপতি ও সহসভাপতি দ্বন্দ্ব তা স্থগিত ঘোষনা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। দুই নেতাই যশোর-৩ আসনের এমপি কাজী নাবিল আহমেদের অনুসারি।
খুলনা গেজেট/এমএম