যবিপ্রবির উপাচার্য, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রার, হল প্রভোস্ট, প্রক্টর, রিজেন্ট বোর্ড সদস্য ড. ইকবাল কবির জাহিদসহ সকল দুর্নীতিবাজদের পদত্যাগের দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ মিছিল ও ‘মার্চ টু প্রশাসনিক ভবন’ কর্মসূচি পালন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাদের বেধে দেওয়া সময়ের মধ্যে উপাচার্য পদত্যাগ না করায় যবিপ্রবির প্রশাসনিক ভবন ও উপাচার্যের বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয় শিক্ষার্থীরা।
শনিবার দুপুর ১২টায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল ‘মার্চ টু প্রশাসনিক ভবন’ শুরু করে শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাস ঘুরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে সমাবেশ করে আন্দোলনকারীরা। সমাবেশে বক্তারা উপাচার্য ড. আনোয়ার হোসেনসহ, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রার, হল প্রভোস্ট, প্রক্টর, রিজেন্ট বোর্ড সদস্য ড. ইকবাল কবির জাহিদ ও উপাচার্যের সকল অনুসারীদের পদত্যাগের দাবি জানান।
পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ উসামাহ বলেন, আমাদের একটিই দাবি, আমরা স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের মদদপুষ্ট দালাল ভিসি চাই না। উনি কখনোই শিক্ষার্থীবান্ধব উপাচার্য নন। আমরা উপাচার্য ড. আনোয়ারসহ সকল দালাল সিন্ডিকেটকে বলতে চাই আপনারা সম্মানের সাথে পদত্যাগ করুন। নতুবা আমরা আপনাদের পদত্যাগে বাধ্য করাবো।
ফিজিওথ্যারাপি অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের শিক্ষার্থী ফরিদ হাসান বলেন, এই ক্যাম্পাসে যে সকল শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী যারা দুর্নীতির মাধ্যমে চাকরি নিয়েছেন তাদেরকেও স্বসম্মানে পদত্যাগের দাবি জানাই। শিক্ষার্থীদের পূর্ণ মতপ্রকাশের স্বাধীনতা দিতে হবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় একটি গবেষণাধর্মী বিশ্ববিদ্যালয়, তাই আমরা এই ক্যাম্পাসে কোন ধরনের রাজনীতি চাই না।
একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের শিক্ষার্থী আকিব ইবনে সাইদ বলেন, পদত্যাগের বিষয়ে কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না। আমরা সেই দুর্নীতিবাজ শিক্ষকদেরকেও ছেড়ে দেবো না, যারা ডিনস্ কমিটিতে বসে শিক্ষার্থীদের সাথে অমানবিক আচরণ করেছে। শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার খাতায় সেই দুর্নীতিবাজ শিক্ষকরা আধিপত্য দেখায়। আজ শিক্ষার্থীরা রাজপথে তাদেরকে আধিপত্য দেখাবে। শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী কারও বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির খোঁজ পাওয়া গেলে তাকে ছেড়ে দেবে না সাধারণ শিক্ষার্থীরা। দুর্নীতিবাজ ভিসি এবং শিক্ষকরা আপনারা স্বসম্মানে পদত্যাগ করুন। সমাবেশ শেষে শিক্ষার্থীরা যবিপ্রবির প্রশাসনিক ভবন ও উপাচার্যের বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
পদত্যাগের বিষয়ে যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি গুচ্ছ ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে ভর্তি কার্যক্রম ৯৭ শতাংশ সম্পন্ন করেছি। এ ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন হলেই আমি ক্যাম্পাসে এসে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলব। শিক্ষার্থীরা যদি চায় তাহলে আমি থাকব, অন্যথায় থাকব না।
উল্লেখ্য, যবিপ্রবি উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে এ নিয়ে তৃতীয় দিনের মতো ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা। এর আগে গত বুধবার বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে যবিপ্রবি উপাচার্যকে শনিবারের মধ্যে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দেন শিক্ষার্থীরা।
খুলনা গেজেট/কেডি