খুলনা নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে ২০১৪ সালে প্রায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ময়ূর নদ খনন করা হলেও কোন সুফল মেলেনি। একই অবস্থা হতে যাচ্ছে প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকা ব্যয়ে চলমান ময়ূর নদ খনন প্রক্রিয়া। আসন্ন বর্ষা মৌসুমে ময়ুর নদ খনন কাজ নতুন করে বেগবান করার পরিকল্পনা শুধু হাস্যকর ছাড়া আর কিছু নয় বলে দাবি করেছেন নাগরিক নেতারা। প্রকল্পের এ টাকা শুধু পানিতে যাবে বলে নাগরিক নেতারা মনে করেন। তাদের মতে, সঠিক সিদ্ধান্ত, খননে অনিয়ম, দখল, পরিবেশ বিষয়ে অসচেতনতা, অপর্যাপ্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পর্যাপ্ত পানি প্রবাহ না থাকা, জবাবদিহিতার অভাবসহ নানা কারণে ময়ূর নদ খননে সুফল পাওয়া নিয়ে সংশয় রয়েছে। বর্ষা মৌসুমের কারণে প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করতে না পারলেও আবারো প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে বর্ষা মৌসুমকে সামনে রেখে। এতে করে ময়ূর নদ খনন পূর্বের ন্যায় হতে পারে। ময়ূর নদই এখন খুলনা নগরীর জলাবদ্ধতার অন্যতম কারণ বলে নাগরিক নেতাদের অভিমত।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার (০৬ জুন) সকালে খুলনা প্রেসক্লাবে পরিবেশ সংরক্ষণে ময়ূর নদ দখল, দূষণরোধ ও চলমান খনন প্রকল্প নিয়ে নাগরিক নেতাদের নিয়ে পরামর্শ সভায় বক্তারা এসব কথা তুলে ধরেন।
পরিবেশ সুরক্ষা মঞ্চ খুলনার আয়োজনে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন মঞ্চের সভাপতি এড. কুদরত ই খুদা, অতিথি ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবেদীন বাদল, সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজনের জেলা সভাপতি অধ্যক্ষ জাফর ইমাম ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আনোয়ারুল কাদির। সংগঠনের সাঃ সম্পাদক সুতপা বেদজ্ঞের পরিচালনায় সভায় মূল প্রবন্ধ উপাস্থাপন করেন মঞ্চের সদস্য ও বেলার বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান মুকুল। অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন সুজনের বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাসুদুর রহমান রঞ্জু, সিপিবি নেতা মিজানুর রহমান বাবু, পরিবর্তনের নাজমুল আজম ডেভিড, আইআরভির নির্বাহী প্রধান মেরিনা যুথি, এস এম সোহরাব হোসেন, এড. জাহাঙ্গীর আলম সিদ্দিকী, ফিরোজ আহমেদ, নাসরিন হায়দার, আফজাল হোসেন রাজু, খলিলুর রহমান সুমন, শাহ অহিদুজ্জামান, এফএম ইকবাল, মাহবুব আলম বাদশা, সাব্বির আহমেদ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, খুলনার বিল পাবলা এলাকা থেকে রূপসার আলুতলা পর্যন্ত ময়ূর নদের দৈর্ঘ্য প্রায় ১১ কিলোমিটার। রূপসার আলুতলায় ১০ বেন্টের একটি গেট নির্মাণ করে এই নদীটিকে বদ্ধ করে রাখা হয়েছে। ফলে এখানে কোনো জোয়ার ও ভাটা হয় না। খুলনা শহরের মধ্যে এই নদের ৬টি শাখা ছড়িয়ে রয়েছে। শহরের গৃহস্থ ও বর্জ্য মিশ্রিত দূষিত পানির ৮০ শতাংশ ২২টি ড্রেনের মাধ্যমে এই নদে পতিত হয়। যার কারণে নদের দূষণের মাত্রা অনেক বেশি। খুলনা নগরীর হৃদপি- ময়ূর নদ আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের রক্ষা করতে হবে। – খবর বিজ্ঞপ্তির
খুলনা গেজেট/কেডি