দু’দিন আগেই হাজার কোটি টাকায় জ্যাক গ্রিলিশকে দলে ভেড়ানো নিশ্চিত করেছিল ম্যানচেস্টার সিটি। দেওয়া হয়েছিল দশ নম্বর জার্সিও। কিন্তু সূচনাটা নিশ্চিতভাবে ভুলেই যেতে চাইবেন ইংলিশ তারকা। নিজের অভিষেক ম্যাচেই যে দল ১-০ হেরে বসেছে লেস্টার সিটির কাছে।
করোনাকালকে পেছনে ফেলার ইংগিত দিয়ে এদিন স্টেডিয়ামে আসতে দেওয়া হয়েছিল আধ-গ্যালারি দর্শককে। তাদের সামনে এই হারকে অবশ্য খুব একটা ‘সিরিয়াস’ভাবে দেখার প্রয়োজন নেই সিটির। নেহায়েতই একটা কমিউনিটি শিল্ডের ম্যাচই তো! তার ওপর চোটের কারণে দলে ছিলেন না কেভিন ডি ব্রুইনা, আর জন স্টোন্সের মতো নিয়মিত একাদশের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়রাও।
তবে লেস্টারের আছে বৈকি। শেষ মৌসুমের প্রিমিয়ার লিগ শিরোপাজয়ী আর এফএ কাপ জয়ীর মধ্যকার লড়াই দিয়ে শুরু হয় নতুন মৌসুমের সূচি। সে সূচিতে যে দল জেতেনি গেল ৫০ বছর।
সিটির আবার এই ম্যাচ থেকে একেবারে খালি হাতেও ফেরা হয়নি। গেল মৌসুমে কেভিন ডি ব্রুইনার অনুপস্থিতিতে ইলকায় গুন্দোয়ান দলের ‘টালিসম্যান’ ভূমিকায় বেশ সফলই ছিলেন। এবার সেই ভূমিকায় না হলেও যে কার্যকরি ভূমিকায় থাকবেন জার্মান এই মিডফিল্ডার, তার একটা নমুনাই যেন দিয়ে রাখলেন তিনি। খেলার শুরুতেই তার একটা দারুণ ফ্রি কিক কোনোক্রমে ঠেকান লেস্টারের ড্যানিশ গোলরক্ষক ক্যাসপার স্মেইকেল। নাহয় ম্যাচের তৃতীয় মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত গার্দিওলার দল।
বিরতির ঠিক আগে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ এসেছিল লেস্টারের সামনেও। জেইমি ভার্ডি লক্ষ্যে শটটা যখন নিলেন, সিটির ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক এডারসন তখন ছিলেন ভুল পায়ে ভর করে। তবু শেষ মুহূর্তে সামলে নিয়ে তাতে পা ছোঁয়ান, তাতে বলটা গিয়ে লাগে পোস্টে। বিরতিতে দুই দল যায় গোলশূন্য অবস্থানে থেকে।
বিরতির পরেও দুই দল প্রতিপক্ষ গোলমুখে হামলা চালিয়েছে সমানতালে। কিন্তু রক্ষণের দৃঢ়তায় গোল হজম করেনি কেউই। তখনই কোচ গার্দিওলা শরণাপন্ন হন ক্লাবের রেকর্ড দলবদল অর্থে কেনা গ্রিলিশের কাছে। যে নিঃসন্দেহ ফুটবলীয় ক্ষমতার কারণে তাকে দলে ভেড়ানো, তার ঝলকানি দেখিয়েছেন বটে; কিন্তু ম্যাচে নামানো হয়েছিল যে কারণে, সে গোলের দেখাটা সিটিকে পাইয়ে দিতে পারেননি তিনি। সঙ্গে সিটি উইঙ্গার রিয়াদ মাহরেজও ২০ মিনিট বাকি থাকতে নষ্ট করেছেন সুবর্ণ এক সুযোগ।
ওদিকে লেস্টারও বলার মতো কিছু করতে পারেনি। সব মিলিয়ে ম্যাচটা যখন এগিয়ে যাচ্ছিল যোগ করা অতিরিক্ত সময়ের দিকে তখনই সিটি ডিফেন্ডার নাথান আকে করে বসলেন অমার্জনীয় এক ভুল।
বল পায়ে বিপদসীমায় আগুয়ান লেস্টার ফরোয়ার্ড কেলেচি ইহেনাচোকে ফাউল করে বসেন তিনি। তাতেই পেনাল্টি পেয়ে যায় লেস্টার। নিজেদের বিপক্ষে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত যাওয়ায় প্রতিবাদ করেছিল সিটি। তবে তাতে তো কাজের কাজ হয়ইনি, উল্টো হলুদ কার্ড দেখেন সিটির ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার ফের্নান্দিনিও আর রুবেন ডিয়াজ।
পেনাল্টি থেকে সেই ইহেনাচোর কল্যাণে গোলটাও পেয়ে যায় লেস্টার, যিনি এককালে ছিলেন এই সিটিরই খেলোয়াড়! সেই একটা গোলেই নিষ্পত্তি হয়েছে শিরোপার। তাতেই ৫০ বছর পর আবারও কমিউনিটি শিল্ডের শিরোপা ওঠে লেস্টার সিটির হাতে।
খুলনা গেজেট/কেএম