বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো চলছে দায়সারাভাবে। মাঠ পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তদারকি উদাসিনতায় ভেঙ্গে পড়েছে প্রাথমিক শিক্ষার মান। অধিকাংশ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি খুবই কম। কোনমতে দিন পার করছেন শিক্ষকরা।
সরেজমিনে মঙ্গলবার এসব বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার হোগলাবুনিয়া ইউনিয়নে ৩০৮ নং দক্ষিণ হোগলাবুনিয়া সুরাতন নেছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২য় শিফটের ক্লাশ চলছে। বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী ৩৪। কর্মরত শিক্ষক মন্ডলী ৩ জন থাকার কথা থাকলেও উপস্থিত সহকারি শিক্ষক মেহেদী হাসান পাঠদান দিচ্ছেন ৩টি শ্রেনী কক্ষে।
৫ম শ্রেনীতে শিক্ষার্থী উপস্থিত ২ জন, ৪র্থ শ্রেনীতে ৪ জন, ৩য় শ্রেনীতে কোন শিক্ষার্থী নেই। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. ফরিদ খান রয়েছেন উপজেলা শহরে। আরেক জন সহকারি অনুপ কুমার মন্ডল ইউনিয়নে স্কুল পর্যায়ে খেলায় রয়েছেন।
একইদিনে ৭৯ নং ছোট বাদুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কর্মরত শিক্ষক মন্ডলী ৪ জন। বিদ্যালয়ে উপস্থিত একজন সহকারি শিক্ষক কারিমা আক্তার শিক্ষার্থীদের একটি ক্লাশ কক্ষে পাঠদান করাচ্ছেন। শিক্ষার্থী উপস্থিতি ১৪ জন। প্রধান শিক্ষক মো. দেলোয়ার হোসেন রয়েছেন ৩ দিনের ছুটিতে। বাকি ২জন শিক্ষকের মধ্যে একজন পিটিআই প্রশিক্ষণে, অপরজন স্কুল পর্যায়ের খেলায় রয়েছেন।
অপরদিকে ২১৮নং মধ্যেম তেলিগাতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক মন্ডলীর পদ ৪ জন থাকলেও উপস্থিত রয়েছেন একজন সহকারি শিক্ষক কানিজ ফাতেমা। তিনিও ৩টি শ্রেনীর পাঠদান করছেন ১টি কক্ষে বসে। প্রধান শিক্ষক দিলারা আফরোজ রয়েছেন মাসিক মিটিংএ। একজন সহকারি শিক্ষক রয়েছেন মাতৃত্বকালিন ছুটিতে, সহকারি শিক্ষক রুবি খানম অনুপস্থিত। প্রধান শিক্ষক জানেন তিনি রয়েছেন বিদ্যালয়ে। অথচ তিনি বিদ্যালয়ে অবস্থান করছেন না। শিক্ষার্থীর উপস্থিত অনেক কম।
২৮২ নং দক্ষিণ চরহোগলাবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চিত্র একই। শিক্ষার্থীর উপস্থিতি খুবই কম। ২ জন শিক্ষক রয়েছেন বিদ্যালয়ে।
এদিকে এ উপজেলার ৩০৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ পর্যায়ের চিত্রে দেখা গেছে অধিকাংশ বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীর উপস্থিত খুবই কম। নামে মাত্র চলছে বিদ্যালয়গুলো। কর্মরত অনেক শিক্ষকরা নিয়মিত স্কুলে না গিয়ে নানা অজুহাতে দিন পার করছেন। দায়িত্বরত সংশ্লিষ্ট ক্লাষ্টার সহকারি শিক্ষা অফিসারদের নেই কোন তদারকি।
প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নোয়নের জন্য সরকারের ব্যাপক পদক্ষেপ থাকলেও তদারকির অভাবে তা বাস্তবায়ন না হওয়ায় একাধিক অভিভাবকরা চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. জালাল উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন মহামারি করোনায় বিদ্যালয়গুলো বন্ধ থাকার কারনে শিক্ষার্থীদের উপস্থিত একটু কম হচ্ছে। তবে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখী করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করা হচ্ছে। এ রকম পরিবেশ থাকবে না।
খুলনা গেজেট/ এস আই