খুলনা, বাংলাদেশ | ৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২১ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ডেঙ্গুতে একদিনের ৯ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১ হাজার ২১৪
৮৬ সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত

মোরেলগঞ্জ উপকূলের ৪ লাখ মানুষ ‘দানা’র আতংকে

মোরেলগঞ্জ প্রতিবেদক

বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র আতংকে উপকূলীয় বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের ৪ লাখ মানুষ ।পানগুছি নদীর তীরবর্তী ৩০ গ্রামের শত শত পরিবারের কাটছে নির্ঘুম রাত। চোখে মুখে দুশ্চিন্তার ছাপ, দুর্যোগ মোকাবেলায় বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) বেলা ১০ টায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সভা করা হয়েছে। প্রস্তুত ৮৬ টি স্কুল-কাম-সাইক্লোন শেল্টার। ফায়ার সার্ভিস, স্কাউটস, স্বেচ্ছাসেবক টিম, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি, ১০টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।

জানা যায়, উপকূলীয় এ উপজেলার ১৬ টি ইউনিয়নসহ পৌরসভার প্রায় ৪ লাখ মানুষের বসবাস। ভৌগলিক অবস্থানে নদীর তীরবর্তী এ উপজেলাটি গঠিত হওয়ায় প্রতিনিয়ত প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে মোকাবেলা করে সংগ্রামী যাদের জীবন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে একদিকে নদীর অব্যাহত ভাঙ্গন, অন্যদিকে প্রতি বছরই ২/১ বার সিডর, আইলা, আম্পান, ফনি, রেমালসহ অসংখ্যা ঘূর্ণিঝড় দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হয় উপকূলীয় এ অঞ্চলের মানুষকে।

নদীর তীরবর্তী তেলিগাতি ইউনিয়নের হেড়মা, মিস্ত্রীডাঙ্গা, পুটিখালীর ইউনিয়নের সোনাখালী, পঞ্চকরণ ইউনিয়নের দেবরাজ, সদর ইউনিয়নের গাবতলা, কাঠালতালা, খাউলিয়া ইউনিয়নের সন্ন্যাসী, ফাসিয়াতলা, চিপা বারইখালী, বলইবুনিয়ার ইউনিয়নের শ্রেনীখালী, বহরবুনিয়ার ফুলহাতা, ঘষিয়াখালী, উত্তর ফুলহাতা, বারইখালী ইউনিয়নের, কাষ্মির, উত্তর বারইখালী, তুলাতলা, হোগলাবুনিয়া ইউনিয়নের বদনীভাঙ্গা, পাঠামারা, সানকিভাঙ্গা, পৌর শহরের কুঠিবাড়ী, সানকিভাঙ্গা, বারইখালী, ফেরীঘাট সংলগ্ন এলাকার নদীর পাড়ের ১০ টি ইউনিয়নের ৩০টি গ্রামের হাজার হাজার পরিবার প্রতিবছর পানগুছি নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনের কারনে বসতবাড়ি ঘর, বসতভিটা, শত শত বিঘা ফসলি জমি হারিয়ে নিঃস্ব হচ্ছে। অভিবাসন হয়ে অন্যত্র বসতি স্থাপন করছেন। নদীর তীরবর্তী সাইক্লোন শেল্টারে যথাযত ব্যবস্থা খারাপ থাকায় ২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড় সিডরে এ উপজেলায় প্রাণ হারিয়েছে ৯৩ জন মানুষকে।

কথা হয় নদীর তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দা বখতিয়ার হোসেন, বৃদ্ধ সাইফুল মুন্সী, ইয়াসমিন বেগম, রুহুল আমীন গাজীসহ একাধিক ব্যাক্তিরা বলেন, পানির মধ্যেই জীবন, দুর্যোগ এলে আমাদের মত গরীর মানুষের দুর্ভোগে পড়তে হয়। রান্না খাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। কষ্টের আর সীমা থাকে না। কয়দিন আগে রেমাল গেছে, এখন আবার নাকি ঘূর্ণিঝড় দানা আসছে। ছেলে-মেয়ে পরিবার নিয়ে সাইক্লোনে যেতে হবে। বাড়িঘরে আসার নেই রাস্তা ঘাট।

পৌর শহরের ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. শাহিন শেখ বলেন, ফেরীঘাট সংলগ্ন ১নং ওয়ার্ডে ৬০০ পরিবারের ৭/৮ হাজার মানুষের বসবাস। প্রাইমারী স্কুলে একটি মাত্র সাইক্লোন শেল্টার দুর্যোগের মুর্হুতে সমস্যা হয়। সরকারিভাবে এ ওয়ার্ডে আরও একটি সাইক্লোন শেল্টারের দরকার। সাধারণ মানুষের চলাচলের রাস্তা ভেঙ্গে নদীগর্ভে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। স্থায়ী ভেরিবাঁধ হলে এ সমস্যা আর থাকবে না বলে তিনি জানান।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল জাবির বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ মোকাবেলায় ইতোমধ্যে সকল প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরী সভা করেছেন। এ উপজেলায় দুর্যোগে আশ্রয় নিতে ৮৬ টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত ও সার্বক্ষনিক মনিটরিংয়ের জন্য কন্টোলরুম খোলা হয়েছে।

এ সর্ম্পকে মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, দুর্যোগ ও পরবর্তী সময়ে করনীয় বিষয়ে ইতোমধ্যে সভাকরে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সকল ছুটি বাতিল করে নিজ কর্মস্থলে থাকার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবক, ফায়ার সার্ভিস, একাধিক মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। ইউনিয়নগুলোতে সচিব ও গ্রাম পুলিশকে উপস্থিত থেকে সাইক্লোনে মানুষ কোন প্রকার যেতে সমস্যা না হয় তদারকির করার ও কন্টোল রুমে যোগাযোগ রাখার জন্য বলা হয়েছে।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!