খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ পৌষ, ১৪৩১ | ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  খুলনা-ঢাকা রুটে নতুন ট্রেন ‘জাহানাবাদ এক্সপ্রেস’ চলাচল শুরু

মোরেলগঞ্জে ২৩শ’ হেক্টর আমন বীজতলা ক্ষতির আশংকা, ৫ শতাধিক পরিবার পানিবন্ধী

মোরেলগঞ্জ প্রতিনিধি

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে টানা পাঁচ দিনের প্রবল বর্ষণ ও পূর্নিমার জোয়ারের পানিতে ২৩শ’ হেক্টর ফসলী জমিতে ৩/৪ ফুট পানি বৃদ্ধি হওয়ায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষতির আশঙ্কায় কৃষক। বিভিন্ন ইউনিয়নে ৫ শতাধিক পরিবার পানিবন্ধী হয়ে পড়েছে। ১৫ শ’ মৎস্য ঘের পানির নিচে নিমজ্জিত হওয়ার আশংকায় ঘের মালিকেরা। সোমবার ভোর ৬ টা থেকে পল্লী বিদ্যুতের ৩৩ কেবি বিদ্যুৎ সংযোগ লাইনে ঝড়ে গাছ পড়ে ১১ ঘন্টা বিদ্যুৎ বন্ধ রয়েছে।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন সহ পৌরসভায় টানা ৫ দিনের প্রবল বর্ষণে বারইখালী, হোগলাবুনিয়া, নিশানবাড়িয়া, পঞ্চকরন ইউনিয়ন সহ নিম্ন অঞ্চল প্লাবিত হয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলো কালিকাবাড়ি গুয়াবাড়িয়া, সানকিভাঙ্গা, পাঠামারা, বদনি ভাঙ্গা, পঞ্চকরনের খারইখালী কুমারিয়া জোলা, সদর ইউনিয়নে গাবতলা, কাঠালতলা, ভাইজোড়া, বহরবুনিয়ার ইউনিয়নের উত্তরফুলতা, বারইখালীর উত্তর সুতালড়ী, কাশ্মীর, মধ্য বারইখালী, বলই বুনিয়ার শ্রেণীখালি গ্রাম সহ ৩০ টি গ্রামে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ৫ শতাধিক পরিবার পানিবন্ধী হয়ে পড়েছে। সদর ইউনিয়নের পূর্ব ভাইজোড়া গ্রামের সরকারি পুকুর সংলগ্ন দেড় কিলোমিটার কাচা রাস্তা ভেঙে গিয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করছে।

ফসলি মাঠে ৩/৪ ফুট পানি জমে থাকায় পানির নিচে দেশী আমন ১৯শ’ হেক্টর ও উফসী আমন ৩৭০ হেক্টর মোট ২৩শ’ ৩০ হেক্টর পানির নিচে নিমজ্জিত৷ পঞ্চকরন ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রাজ্জাক মজুমদার জানান, দেবরাজের ১২০০ মিটার বেড়িবাঁধটি দুর্বল হয়ে পড়েছে। শুভরাজ খালি খালে স্লুইসগেট ও বেড়িবাঁধে ফ্লাস গেট না থাকায় প্রবহমান খালটির পানি চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। ওই এলাকার দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্ধী হয়ে পড়েছে। জরুরীভাবে খালটিতে একটি স্লুইসগেট নির্মাণন হলে ওই এলাকার শত শত পরিবার পানিবন্ধী থাকবে না।

হোগলাবুনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আকরামুজ্জামান বলেন, বন্দিনীভাঙ্গা, ছোটবাদুরা, পাঠামারা, দুই শতাধিক পরিবার বৃষ্টির পানি জমে বাড়িঘরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে।

ভাইজোড়া গ্রামের কৃষক আব্দুর রহিম, চরহোগলা বুনিয়া গ্রামের মোস্তফা তালুকদার, মাওলানা শহিদুল ইসলাম, মোশারেফ চৌকিদার, ফেরদাউস মাতুব্বর সহ একাধিক কৃষক জানান, ৩/৫ দিনের ভারী বর্ষনে আমন ফসলের মাঠে ৩/৪ ফুট পানির নিচে শত শত বিঘা জমবতে আমনের বীজতলা রয়েছে। এ রকম আবহাওয়া ২/৩ দিন থাকলে বীজতলা পচে গিয়ে অপূরনীয় ক্ষতি হবে।

এদিকে চরহোগলা গ্রামের বাসিন্দারা কালীবাড়ি হয়ে বটতলা ৪ কিলোমিটার বটার খালটি পুন:খননের দাবি জানান।
এ সম্পর্কে উপজেলা কৃষি অফিসার আকাশ বৈরাগী জানান, কয়েকদিনের প্রবল বর্ষনে বিভিন্ন ইউনিয়নে নিম্নঞ্চলের প্লাবিত হয়ে আমন বীজতলার খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে৷ তবে, কৃষকদেরকে মাঠ থেকে পানি নিষ্কাশনের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ এখনও পরিমাপ করা যায়নি। আরও ২/৩ দিন এরকম বৃষ্টি থাকলে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য অফিসার বিনয় কুমার রায় বলেন, কয়েক দিনের টানা বর্ষণে বহরবুনিয়া, জিউধরা ও পঞ্চকরনের অধিকাংশ মৎস্য ঘের গুলোতে পানি বৃদ্ধি হয়ে পড়েছে। এ রকম আবহাওয়া থাকলে প্রায় ১৫ শ’ ঘের পানিতে নিমজ্জিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷

মোরেলগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম মো. ওয়াদুদ খন্দকার বলেন, প্রবল বর্ষন ঝড়ে ৩৩ কেবি বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ঝড়ে পড়া গাছগুলো অপসারণ করা হচ্ছে। বিকেল ৫ টা নাগাদ বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া যেতে পারে।

খুলনা গেজেট/ বিএম শহিদুল




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!