ভোট বড় বালাই। পাঞ্জাব ও উত্তরপ্রদেশ সহ ভারতের ৫ রাজ্যে পর পর বিধানসভা নির্বাচন। আর সেই নির্বাচনকে সামনে রেখে শুক্রবার শিখ ধর্মগুরু নানকের জন্মদিন পালনে শ্রদ্ধা জানাতে এসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জনবিরোধী তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার করার কথা ঘোষণা করেন। এদিন ছিল ভারতের অন্যতম ডায়ানেমিক প্রধানমন্ত্রী শহীদ ইন্দিরা গান্ধীর জন্মদিন। আবার আজকের দিনটি স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ে ব্রিটিশ বিরোধী লড়াকু কৃষক নেতা মীর নিসার আলী ওরফে তিতুমীরের শাহাদত দিবস।
সবমিলিয়ে মোদীজী এমন একটি দিনে কৃষি আইন প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করলেন যা সত্যিই তাৎপর্যপূর্ণ। সর্বভারতীয় রাজনৈতিক মহল মোদীর এই ঘোষণাকে স্বাগত জানালেও এর বাস্তবতা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। রাজনৈতিক মহল মনে করছে এটা ৫ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে মোদীজী প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করে একটি চমক সৃষ্টি করেছেন।
দিল্লিতে কৃষক আন্দোলন সংগঠিত করার যিনি অন্যতম সংগঠক সেই সংযুক্ত কৃষক সংঘর্ষ সমন্বয় সমিতির অন্যতম আহ্বায়ক রাকেশ টিকায়েত বলেন, ভারতীয় সংসদের দুই কক্ষ রাজ্যসভা ও লোকসভায় বিশেষ আইন করে পুরো কৃষি আইন বাতিল করতে হবে। নইলে কৃষক-ক্ষেতমজুরদের আন্দোলন চলবে। মৌখিক কোনো ঘোষণাকে আমরা আমল দিতে চাই না। তবে দেশের বিজেপি সরকার কৃষি আইন নিয়ে খুব চাপে আছে। আমাদের মনে রাখতে হবে, আগামী ২৬ নভেম্বর এই আন্দোলনের বর্ষপূর্তি। আন্দোলন এখন একটি বড় পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। কোনো একটি মৌখিক ঘোষণায় আমরা আন্দোলন তুলে নিতে পারি না।
কৃষক সংঘর্ষ সমন্বয় সমিতির আরেক আব্বায়ক সিপি আইএম পলিটব্যুরোর সদস্য প্রাক্তন সাংসদ হান্নান মোল্লা বলেন, ঘোষণাকে স্বাগত জানাই। বিজেপি সরকার চাপে আছে। তাই নতি স্বীকার করছে। কিন্তু সংসদে আলোচনা করে এই আইনকে বাতিল ঘোষণা করতে হবে।
মোদী সরকার নোট বাতিলের সময় বলেছিলেন, সবার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ১৫ লাখ টাকা দেওয়া হবে। কিন্তু তা আজো বাস্তবায়িত হয়নি। কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী বলেন,কৃষকদের জেদ ও সত্যাগ্রহের কাছে মোদীজীর নতি স্বীকার।
তৃণমূল সুপ্রীমো মমতা ব্যানার্জি বলেন, সারা দেশে কৃষক-খেতমজুরদের সঙ্ঘবদ্ধ আন্দোলনের কাছে বিজেপি সরকার নতি স্বীকার করলেন। কিন্তু এখনো পরীক্ষা বাকি আছে।
লোকসভার বিরোধী দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেন, স্বাধীনতার পর এতবড় একটি কৃষক-খেতমজুর আন্দোলনের কাছে মোদীজী হার স্বীকার করলেন। এখনো অনেক কিছু দেখার আছে।
কৃষক-ক্ষেতমজুর আন্দোলনের দুই সংগঠক অতুল আনজান ও অভীক সাহা বলেন, ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর আন্দোলন শুরু দিল্লি সহ সমগ্র দেশব্যাপী। নানা নির্যাতন ভোগ করেছেন কৃষক-খেতমজুররা। সমগ্ৰ কৃষি আইন বাতিল করতে হবে। সংসদে এ নিয়ে পাল্টা আইন করতে হবে। কৃষি আইনকে পুরোপুরিভাবে বাতিল করে তা কৃষক স্বার্থবাহী করতে হবে।
খুলনা গেজেট/ এস আই