মোংলা বন্দরে অবস্থানরত সংযুক্ত আরব আমিরাতের পতাকাবাহী এমভি ফাজা-১ জাহাজে গত এক সপ্তাহ ধরে ধারাবাহিকভাবে দস্যুতা সংগঠিত হয়েছে। এতে চুরি হওয়া আংশিক মালামাল পুলিশ উদ্ধারও করেছে। তবে কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। জব্দকৃত মালামাল পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৮ জুলাই এমভি ফাজা-১ মেশিনারী মালামাল নিয়ে বন্দরের ৮নং হাড়বাড়ীয়ায় লঙ্গর করে অবস্থান নেয়। এ সময় জাহাজে থাকা ফিলিপাইন ও ভারতীয় ৮ জন নাবিকের করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়। এরপর তাৎক্ষণিকভাবে জাহাজের স্থানীয় শিপিং এজেন্ট শুন শাইন শিপিং বাংলাদেশ ও পোর্ট হেলথ বিভাগ জাহাজে থাকা সকল এদেশের শ্রমিক-কর্মচারীদের জাহাজ থেকে নামিয়ে আনে এবং জাহাজের ডেক সাইটের ৮ জন বিদেশী নাবিককে চিকিৎসার জন্য খুলনায় পাঠায়। জাহাজটিতে রাশিয়ান, ইউক্রেন, ফিলিপাইন ও ভারতীয় নাবিকদের আংশিক করোনা পরিলক্ষিত হওয়ায় ১৫ দিনের জন্য জাহাজ ও নাবিকদেরকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। অন্য আটজন নাবিক উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনার গাজী মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জাহাজের ডেকে নাবিক স্বল্পতা ও ওয়াচম্যান না থাকায় মোংলার চাঁদপাই ইউনিয়নের বাইদ্যাপাড়া কেন্দ্রিক ১টি দস্যুদল জাহাজে লুটপাট শুরু করে। কয়েক দফায় করা লুটপাটে দস্যুরা জাহাজের ডেক সাইডের স্টোরের তালা ভেঙ্গে মুল্যবান যন্ত্রাংশ, লৌহজাত দ্রব্য, রং ও মবিল ভর্তি ড্রাম নামিয়ে নিয়ে আসে। সে সকল মালামাল দস্যুরা মোংলা বন্দরের পশুর নদীর পাড়ে বিভিন্ন বাড়ীতে লুকিয়ে রাখে। পরে সেই সকল এলাকার বাসিন্দাদের দেয়া খবরে পুলিশ শুক্রবার সন্ধ্যায় মোংলার চিলা ইউনিয়নের তেলীখালী গ্রামের চায়না হারবারের জেটি সংলগ্ন একটি বাড়ী হতে কিছু রংয়ের ড্রাম উদ্ধার করে।
এর কিছুদিন আগেও একটি চায়না টাকবোট থেকে মালামাল খোয়া যাওয়ার ঘটনা ঘটে। সে সময়ও পুলিশ চুরি হওয়া সেই মালামাল উদ্ধার করে চায়না নাবিকদের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মোংলার চাঁদপাই ইউনিয়নের কানাইনগর গ্রামের বাইদ্যাপাড়া এলাকার সজীব (২৮), কবির (৩৫), সবুর (৩৩), নাজমুল (৩০), আজিজুল (২৮), আসিক (৩৪), রানা (৩৫) বিদেশী ওই জাহজাটিতে চুরি সংগঠিত করেছে।
বাইদ্যাপাড়া কেন্দ্রিক কয়েকটি চোরাকারবারী ও দস্যুদলের এমন কর্মকান্ডে মোংলা বন্দরের সুনাম মারাত্মকভাবে ক্ষুন্ন হচ্ছে।
এ ঘটনায় মোংলা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা মো: ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, উদ্ধারকৃত মালামাল পুলিশের জব্দ তালিকায় নেয়া হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে এ ঘটনার তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্তে যাদের নাম পাওয়া যাবে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি আরো বলেন, মোংলা বন্দরের সুনাম রক্ষায় পুলিশ সর্বদা তৎপর ও সজাগ রয়েছে।
খুলনা গেজেট/এনএম