এ দোকান থেকে ও দোকান ঘুরছে হাতি। পিঠে বসা মাহুত। দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে শুঁড় তুলে সালাম দিচ্ছে। তারপর শুঁড় এগিয়ে দিচ্ছে সোজা দোকানদারের কাছে। যতক্ষণ পর্যন্ত শুঁড়ের মাথায় টাকা গুঁজে দিচ্ছেন না, ততক্ষণ পর্যন্ত শুঁড় তুলছে না হাতিটি। এভাবে প্রতি দোকানে ১০ থেকে শুরু করে ১০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। ১০ টাকার কম দিলে নিচ্ছে না টাকা। ভয়ে ও আতংক নিয়ে চলাফেরা করছে ছোট ও বয়স্ক মানুষ।
মোংলা উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে চলছে হাতির চাঁদাবাজি। এমন চাঁদাবাজির কারণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন ব্যবসায়ী ও স্থানীয় মানুষ। শনিবার (২৮ আগস্ট) সকাল থেকে উপজেলার মোংলা পৌরসভার মোংলা বাজার ও শাহাদাৎ এর মোড় এলাকায় খোঁজ নিয়ে ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্টদের কাছে হাতি দিয়ে চাঁদাবাজির কথা জানা যায়।
পৌরসভার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বলেন, সকালে দোকানে একটি বড় হাতি নিয়ে হানা দেয়। দোকানপ্রতি কমপক্ষে ১০ টাকা করে আদায় করা হয়। হাতি নিয়ে সঙ্গে থাকা লোকজন দোকানের সামনে দাঁড়ায়, টাকা না দেয়া পর্যন্ত সেখান থেকে হাতি সরানো হচ্ছে না। হাতি দোকানের সামনে থাকলে ক্রেতারা দোকানে ঢুকতে ভয় পায়। এভাবে টাকা আদায়ের কারণে ব্যবসায় অনেক ক্ষতি হচ্ছে।
আরেক ব্যবসায়ী মো: আশিকুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মাঝে মধ্যেই বিভিন্ন এলাকা থেকে হাতি নিয়ে এসে চাঁদা আদায় করা হয়। বিষয়টি দেখার যেন কেউ নেই। দেখা যায় বড় হাতির পিঠে বসে একজন হাতিটিকে পরিচালনা করছেন। এক সহযোগী। প্রতিটি দোকান থেকে হাতি দিয়ে টাকা তোলা হয়। টাকা না দেয়া পর্যন্ত দোকান থেকে হাতি সরানো হয় না।
বাজারের ব্যবসায়ীরা বলেন, প্রায় প্রতিদিনই অনেক খাতে টাকা দিতে হয়। বর্তমানে হাতিকেও দিতে হচ্ছে। বিষয়টি খুবই পীড়াদায়ক। স্হানীয় জন প্রতিনিধি ও প্রশাসনকে একটু জোর দিয়ে বিষয়টি দেখার অনুরোধ জানান তারা।
টাকা তোলার ব্যাপারে হাতির সঙ্গে থাকা লোকটি বলেন, হাতি নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় যখন আমরা যাই সেখানকার লোকজন হাতি দেখে খুশি হয়ে হাতির খাবারের জন্য কিছু টাকা দেয়। তবে টাকা দিতে কাউকে জোর করা হয় না। লোকজন খুশি হয়ে স্বেচ্ছায় যা দেয়, তা–ই নেয়া হয়।
মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কমলেশ মজুমদার বলেন, যদি বন্যপ্রাণী দিয়ে চাঁদা তোলা হয় অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্হা গ্রহণ করা হবে।
খুলনা গেজেট/এনএম