খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ পৌষ, ১৪৩১ | ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  গাজীপুরের শ্রীপুরে বোতাম তৈরির কারখানায় আগুনে নিহত ১
  শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশের বিষয়ে নিশ্চিত নয় ট্রাইব্যুনাল

মোংলায় সন্ত্রাসী হামলায় আহত গৃহবধূর অবস্থা আশংঙ্কাজনক : সপ্তাহেও মামলা হয়নি

মোংলা প্রতিনিধি

মোংলায় স্বামীর বসত ভিটা দখলে বাধা দেয়ায় ভুমি সন্ত্রাসীদের দায়ের কোপে গুরুতর আহত গৃহবধূর অবস্থা দিন দিন অবনতি হচ্ছে। এ ব্যাপারে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে থানায় অভিযোগ দিলে ঘটনার ৭দিন অতিবাহিত হলেও মামলা আকারে রুজু করেনি পুলিশ। সন্ত্রাসীদের দায়ের কোপে রক্তাক্ত জখম ওই গৃহবধূ উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে এখনও তার অবস্থা শংঙ্কা মুক্ত নয় বলে জানিয়েছে চিকিৎসক ও তার পরিবারের সদস্যরা।

থানার অভিযোগ ও পরিবার সুত্রে জানা যায়, গত ২৯ জুলাই দুপুর ২টার দিকে টিএ ফারুক স্কুল সংলগ্ন মোর্শেদ সড়কের বাড়ী একাই ছিল গৃহবধূ রুপা বেগম। এসময় বাড়ীতে ঢুকে স্থানীয় সন্ত্রাসীরা বাড়ীটি দখলে নেয়ার চেষ্টা করে। সন্ত্রাসীরা বসত ঘরে ঢুকে মুল্যবান আসবাবপত্র ভাংচুর ও গাছপালা কেটে ফেলে এবং লুটপাট চালায়। এসময় রান্না ঘরে থাকা গৃহবধূ রুপা বেগম তাদের বাধা দিলে সন্ত্রাসীরা ‘দা’ দিয়ে মাথায় আঘাত করে। এতে গৃহবধূ রুপা রক্তাক্ত জখম হয়। তার ডাক চিৎকারে এলাকাবাসী ছুটে আসলে সন্ত্রাসীরা পালিযে যায়। রক্তাক্ত অবস্থা রুপা বেগমকে এলাকাবাসী উদ্ধার করে প্রথমে মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। তবে রুপার অবস্থা অবনতি দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয় বলে জানায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ডাঃ জোহরা তাবাসসুম। খুলনা হাসপাতালে দীর্ঘ ৭দিন চিকিৎসারত রুপা বেগম মৃত্যর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।

খুলনা মেডিকেলের চিকিৎসকরা বলছেন, রুপা বেগমের মাথায় ধারালো আস্ত্রের আঘাতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। শরিরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত প্রাপ্ত হয়েছে, যার কারনে সুস্থ্য হতে সময় লাগবে।

আহত গৃহবধূর শাশুড়ী নুর নাহার বেগম জানায়, বাড়ির জমি নিয়ে আদালতে মামলা করা হয়েছে, আমার পক্ষে রায় দিয়েছে। আমি আদালতের রায়ের ফলে দীর্ঘদিন ঘর বাড়ী তৈরী করে বসবাস করার পরেও এলাকার এক প্রভাবশালী ব্যক্তির ইন্দোনে মহিদুল ভুয়া মালিক সেজে তার লোকজন নিয়ে এ জমি দখলে নেয়ার চেষ্টা করে। যার বাধা দেয়ায় আমার পুত্রবধু আজ মৃত্যু শয্যায়।

এদিকে, আহত গৃহবধূর স্বামী মোঃ রাজু বাদী হয়ে অজ্ঞাত ২/৩ জন ছাড়াও ৯ জনকে অভিযুক্ত করে মোংলা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। কিন্ত ঘটনার ৭দিন পেরিয়ে গেলেও মামলা রুজু বা আসামীদের গ্রেফতার করা হয়নি বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী পরিবারের। সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এনিয়ে এলাকা জুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এ ঘটনায় অভিযুক্ত মহিদুল জানান, নুর নাহার বেগমের জমির উত্তর পাশে তার সাড়ে ৫ শতক ক্রয়কৃত জমি রয়েছে, যা নিয়ে তার সাথে দীর্ঘদিন বিরোধ চলছিল। এটি সমাধান জন্য সহকারী পুলিশ সুপার (মোংলা সার্কেল) বরাবর একটি আবেদন করা হয়েছে কিন্ত বার বার তার দপ্তরে ডাকা সত্যেও নুর নাহার বেগমের লোকজন হাজির হয়নি। এছাড়া মারামারীর ঘটনা তার জানা নাই বলে জানায় মহিদুল।

মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ ইকবাল বাহার চৌধুরী জানান, টিএ ফারুক স্কুল সংলগ্ন এলাকায় মারামারীর বিষয়টি শোনার সাথে সাথে সহকারী পুলিশ সুপারসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ নিয়ে তদন্ত চলছে। আহত গৃহবধূ খুলনায় চিকিৎসাধীন থাকায় একটু বিলম্ব হচ্ছে। তবে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (মোংলা সার্কেল) মোঃ আসিফ ইকবাল জানান, একটি লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি সমাধানের জন্য উভয় পক্ষকে উপস্থিত হওয়ার জন্য বলা হয়েছিল, কিন্ত বিরোধী পক্ষ আসেনি। পরে দু’পক্ষের মারামারির ঘটনা ঘটে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানায় পুলিশের এ কর্মকর্তা।

 

খুলনা গেজেট / এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!