মোংলায় করোনা ভাইরাস প্রভাবের মধ্যেও থেমে নেই সুন্দরবন থেকে বন্যপ্রাণী ও গাছ পাচার। প্রতিনিয়ত চলছে হরিণ শিকার, বিষ দিয়ে মাছ
আহরণ ও বন্যপ্রাণী নিধন। বুধবার বনের গহিন থেকে পাচার হওয়ার সময় ইঞ্জিন চালিত একটি ট্রলার বোঝাই সুন্দরি গাছ উদ্ধার করেছে পুর্ব বন বিভাগ। মোংলা বন্দরের পশুর নদীর কাটাখালী খাল সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ট্রলারসহ প্রায় ৫শ’ ঘনফুট (৪৮ পিচ) সুন্দরির গাছ জব্দ করলেও এর সাথে জড়িত কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
পূর্ব সুন্দরবনের চাদঁপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ এনামুল হক জানান, সারা দেশে করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউন চলছে। অন্যদিকে দুই মাস সুন্দরবনের মাছধরা নিষিদ্ধ করেছে সরকার, তাই বনের মধ্যে মানুষের বিচরণ কম থাকায় চোরাকারবারিরা স্বোচ্চার হয়ে উঠছে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বনের গহিনে গিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির মূল্যবান গাছ কেটে পাচার করছে একদল চোরা কারবারিরা। গত কয়েকদিন ধরে একটি সংবাদের ভিত্তিতে বন সংলগ্ন পশুর নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে অভিযান চালানো হচ্ছে পাচারকারবারীদের ধরার জন্য। হঠাৎ খবর আসে সুন্দরবনের গহিন থেকে একদল চোরাকারবারি গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে এমন গোপন সংবাদের সূত্র ধরে পশুর নদীর কাটাখালী নামকস্থানে অভিযান চালায় একদল বন কর্মীরা।
বুধবার দিনগত রাত সোয়া ৩টার দিকে পশুর চ্যানেলের নিচ থেকে উঠে আসা একটি ইঞ্জিন চালিত ট্রলার পশুর নদী দিয়ে খুলনার দিকে যাচ্ছিল। ট্রলারটির উপরে বস্তা ভর্তি তুষ এবং গাছের গুড়ি বোঝাই করা। কিন্ত ট্রলারটি দেখে সন্দেহ হয় এবং ট্রলারে থাকা লোকদের থামাতে বলে এবং তল্লাশী করার জন্য চ্যালেন্স করা হয়। এসময় বনরক্ষীদের উপস্থিতি বুঝতে পেরে ট্রলারটিতে থাকা মাঝি ও অন্যান্যরা দ্রুত চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে পাচারকারীরা। ট্রলারটিকে ধাওয়া দিলে বনের কিনারায় নদীর পাশে ট্রলার ফেলে নদীতে ঝাপ দিয়ে বনের মধ্যে পালিয়ে যায় চোরাকারবারীরা। পরে ট্রলাটিতে তল্লাশী চালিয়ে তুষ ও গাছের গুড়ির নিচে থেকে বড় (৪৮পিচ) প্রায় ৫শ’ ঘনফুট মুল্যবান সুন্দরি গাছ উদ্ধার করে বন বিভাগ। তবে গভীর রাত হওয়ায় ট্রলারে থাকা চোরাকারবারীদের আটক করা বা নাম পরিচয় জানা যায়নি।
এ ব্যাপারে পরিত্যক্ত গাছ উদ্ধারের বন আইনে মামলার প্রস্তুতি চলছে, তবে গাছ পাচার, বনের নদী ও খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকার ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের জন্য অভিযান কঠোর ও অব্যাহত রেখেছে বলে জানায় এ রেঞ্জ কর্মকর্তা।
খুলনা গেজেট/এনএম