খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  হাইব্রিড মডেলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, রাজি পাকিস্তান; ভারতের ম্যাচ দুবাইয়ে : বিসিবিআই সূত্র
  গুমের দায়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ২২ সদস্য চাকরিচ্যুত, গুম কমিশনের সুপারিশে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে

মোংলায় কবি রুদ্র’র ৩১তম মৃত্যু বার্ষিকী পালন

মোংলা প্রতিনিধি

তারুন্যের দীপ্ত প্রতীক কবি রুদ্র মুহাম্মদ শহিদুল্লার ৩১তম মৃত্যু বার্ষিকী আজ। ১৯৯১ সালের এই দিনে লক্ষ কবিতা প্রেমিদের কাঁদিয়ে (১৯৫৬-১৯৯১) মাত্র ৩৫ বছর বয়সে চির বিদায় নিয়ে চলে যান না ফেরার দেশে। বাংলাদেশের কবিতায় এক অবিস্মরণীয় নাম রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ।

মাটি ও মানুষের প্রতি আমূল দায়বদ্ধ এই কবির শিল্পমগ্ন উচ্চারণ তাকে দিয়েছে সত্তরের অন্যতম কবি-স্বীকৃতি। অকাল প্রয়াত এই কবি তার কাব্যযাত্রায় যুগপৎ ধারণ করেছেন দ্রোহ ও প্রেম, স্বপ্ন ও সংগ্রামের শিল্পভাষ্য। সাহস ও স্বপ্নে, শিল্প ও সংগ্রামে আপদমস্তক সমর্পিত এই কবি তার স্বল্পায়ু জীবনকে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন তারুণ্যের দীপ্ত সড়কে। নিজেকে মিলিয়ে নিয়েছিলেন আপামর নির্যাতিত মানুষের আত্মার সঙ্গে; হয়ে উঠেছিলেন তাদেরই কন্ঠস্বর।

‘জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরোনো শকুন’– এই নির্মম সত্য অবলোকনের পাশাপাশি ততোধিক স্পর্ধায় তিনি উচ্চারণ করেছেন- ‘ভুল মানুষের কাছে নতজানু নই’। যাবতীয় অসাম্য, শোষণ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে অনমনীয় অবস্থান তাঁকে পরিণত করেছে ‘তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক’-এ। একই সঙ্গে তাঁর কাব্যের আরেক প্রান্তর জুড়ে রয়েছে স্বপ্ন, প্রেম ও সুন্দরের মগ্নতা।

মাত্র ৩৫ বছরের স্বল্পায়ু জীবনে তিনি সাতটি কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও গল্প, কাব্যনাট্য এবং ‘ভালো আছি ভালো থেকো’ সহ অর্ধ শতাধিক গান রচনা ও সুরারোপ করেছেন।প্রয়াত এই কবি ও গীতিকার ‘প্রতিবাদী রোমান্টিক’ হিসাবে খ্যাত ছিলেন।

আশির দশকে কবিকণ্ঠে কবিতা পাঠে যে কয়জন কবি বাংলাদেশী শ্রোতাদের কাছে প্রিয় হয়ে উঠে ছিলেন তাঁদের মধ্যে তিনি অন্যতম। তাঁর জনপ্রিয় কবিতার মধ্যে অন্যতম কবিতা ‘বাতাসে লাশের গন্ধ’।

তার কবিতায় বারবার উঠে এসেছে মানুষ, সমাজ, চেতনার ত্রিকোনো উঠান আর জীবনের শুভ্র কঙ্কাল। রুদ্রের কবিতা নিজেই এক মহান ইতিহাস।

সময়ের চিলেকোঠায় ‘কবিতা’ নাম্নি বর্গক্ষেত্রের মধ্যেই রুদ্র মানুষের একাকিত্বতা, নিমগ্নতা, লৌকিক সভ্যতার মানচিত্র এঁকেছেন দক্ষ হাতে।

রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ কবি, কবি এবং কবি। কবির ঊর্ধ্বে আর কিছুই নন তিনি। রুদ্রের কবিতা স্বপ্ন দেখায় কবিতার আড়ালে এক বিশুদ্ধ সময়ের। রুদ্র তার কবিতায় অপ্রতিরোধ্য গতি সৃষ্টি করে সহজেই পৌঁছে গেছেন কালোত্তীর্ণের কাতারে।

‘চলে যাওয়া মানে প্রস্থান নয়- বিচ্ছেদ নয়, চলে যাওয়া মানে নয় বন্ধন ছিন্ন-করা আর্দ্র রজনী। চলে গেলে আমারও অধিক কিছু থেকে যাবে, আমার না-থাকা জুড়ে’।

মোংলার মিঠেখালির বুকে শুয়ে আছেন কবিতার এই খেয়ালী চাষা। সব বাঁধা ছিঁড়ে যে কবি বেরিয়ে এসেছেন, তাঁর কাঁধে এখন বাংলা কবিতার জোয়াল!

দিনটি উপলক্ষে রুদ্র স্মৃতি সংসদ মিঠেখালী, মোংলা নাগরিক সমাজ, প্রথম আলো বন্ধু সভা, মোংলা স্টুডেন্টস ক্যাটারস্, শিরিয়া বেগম মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যাপীঠ, রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন যৌথ ভাবে দিনটি পালন করে।

মঙ্গলবার (২১ জুন) সকাল ৯টায় মোংলার মিঠেখালী বাজার থেকে শোভাযাত্র সহকারে কবির সমাধিতে পুস্পমাল্য অর্পণ করে কোরআন খতম ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে সংগঠনগুলি।

স্মরণানুষ্ঠান শেষে রুদ্রের গান পরিবেশন ও রুদ্রের কবিতা আবৃতি করা হয়।

 

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!