যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে পিটিয়ে হত্যার পর আত্মহত্যার প্রচার দেওয়া ঘাতক স্বামীসহ হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে ভিকটিমের বৃদ্ধ বাবা। রোববার (২ জানুয়ারি) দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে নিহত গৃহবধুর বাবা তালা উপজেলার আমানুল্যাহপুর গ্রামের সূর্যকান্ত দাস এই দাবি জানান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ৫ বছর পূর্বে আমার মেয়ে শিখা রানী দাসকে তালা সদরের আটারই গ্রামের অনিল দাসের ছেলে গোবিন্দ দাসের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে প্রায়ই গোবিন্দ আমার মেয়েকে যৌতুকের দাবিতে মারপিট করতো। আমার অর্থনৈতিক অবস্থার কথা চিন্তা করে মেয়ে শিখা সব নির্যাতন সহ্য করে আসছিলো। কিন্তু স্বামী গোবিন্দ, তার শ্বশুড়ি বিল্ব দাসী, শ্বশুর অনিল রিশি একত্রে আমার মেয়েকে মারপিটসহ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। কোন উপায় না পেয়ে মেয়ে আমাদের জানালে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের কাছে অভিযোগের ভিত্তিতে একাধিকবার শালিস করেও তেমন কোন সমাধান হয়নি। এরই মধ্যে গোবিন্দের ঔরশে আমার মেয়ের গর্ভে দুটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে। কন্যাদের মুখের দিকে তাকিয়ে শিখা রানী সংসার করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল।
সূর্যকান্ত দাস আরো বলেন, গত শনিবার (১ জানুয়ারি) সকালে মেয়ে শিখা রাণী আমাকে ফোন করে জানায় যৌতুকের টাকার জন্য স্বামী গোবিন্দ, তার শাশুড়ি বিল্ব দাসী, শ্বশুর অনিল দাস তাকে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজসহ মারপিট করছে। একপর্যায়ে আমাকে ফোন দেওয়ার খবর জানতে পেরে উত্তেজিত হয়ে গোবিন্দ, শাশুড়ি বিল্ব দাসী, শ্বশুর অনিল দাস আমার মেয়েকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং এ হত্যাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার জন্য তার মরদেহটিকে ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে রাখে। পরবর্তীতে গোবিন্দ আমাকে ফোনে জানায় আমার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমি গোবিন্দদের বাড়িতে গিয়ে দেখি গোবিন্দ তার মা বিল্ব দাসী ও বাবা অনিল দাস পলাতক রয়েছে এবং আমার মেয়ের লাশ বারান্দায় পড়ে রয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ ইতিমধ্যে মেয়ের শাশুড়ি বিল্ব দাসীকে আটক করেছে। কিন্তু মূল হত্যাকারী মেয়ের স্বামী গোবিন্দ দাস ও শ্বশুর অনিল দাস এখনও পলাতক রয়েছে।
তিনি এ সময় একজন অসহায় পিতা হিসাবে তার মেয়ের হত্যাকারী স্বামী গোবিন্দ, শ্বশুর অনিল ও শাশুড়ি বিল্ব দাসীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন নিহতের মাতা ও ভাইসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা।
খুলনা গেজেট/ এস আই