গাজীপুরের মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে বহিষ্কারের পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। জানিয়েছেন, বিষয়টি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে ঘরোয়া আলোচনায় কটূক্তির ভিডিও ফাঁসের মাস দুয়েক পর শুক্রবার ক্ষমতাসীন দলের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক।
কাদের এই ব্রিফিংয়ে আসার আগেই জাহাঙ্গীরকে দল থেকে বহিষ্কারের তথ্য গণমাধ্যমে চলে আসে। এর প্রতিক্রিয়ায় গাজীপুর আওয়ামী লীগে মেয়রের বিরোধীপক্ষ মাতে উল্লাসে। মেয়রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ায় আনন্দ প্রকাশ করে বিরোধীরা তার পদ কেড়ে নেয়া এবং আইনি ব্যবস্থা নেয়ার দাবিও জানাচ্ছেন।
ওবায়দুল কাদের জানান, জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে। সিটি করপোরেশনের স্থানীয় সরকারের একটি শাখা। ফলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত এই মন্ত্রণালয়ই নিয়ে থাকে।
এক প্রশ্নের ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘তার (জাহাঙ্গীর) বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে। যেহেতু তার বক্তব্য বঙ্গবন্ধু ও আমাদের ইতিহাসকে কটাক্ষ করে। কাজেই এটা প্রশাসনিকভাবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে আজকের দলীয় সিদ্ধান্ত অফিশিয়ালি জানানো হবে।’
গত ২২ সেপ্টেম্বর যখন ফেসবুকে ভিডিও এবং অডিওর মিশেলে রেকর্ডটি ফাঁস হয়, তখন জাহাঙ্গীর ছিলেন দেশের বাইরে। দেশে ফিরে দুই দিন পর তিনি দাবি করেন, এর সব বানোয়াট। আওয়ামী লীগ যখন তার কাছ থেকে ব্যাখ্যা দাবি করে, সে সময়ও তিনি সব ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেন।
তবে আওয়ামী লীগ তার এই ব্যাখ্যায় আস্থা রাখেনি। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যাচাই বাছাই করে অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় মেয়র জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাবে আত্মপক্ষ সমর্থনে জাহাঙ্গীর আলম তার বক্তব্য দিয়েছিল। সেটা আমি আজকের মিটিংয়ে পড়ে শুনিয়েছি। এরপর গোটা হাউস কঠোর শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহণের পক্ষে মতামত দিয়েছে।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সবার মতামত নিয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জানিয়ে কাদের বলেন, ‘সবাই এক বাক্যে তার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানায় এবং সে প্রেক্ষিতে জাহাঙ্গীর আলমকে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তো বটেই, তাকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদে বহিষ্কার করা হয়েছে।’
গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি থাকছে কীনা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, একজনের জন্য পুরো কমিটি ভেঙে যাবে নাকি?
‘আমার বক্তব্য সুপার এডিট করা হয়েছে’- মেয়র জাহাঙ্গীরের এমন বক্তব্যের বিষয়ে আওয়ামী লীগ থেকে কোনো তদন্ত করা হয়েছে কীনা জানতে চাইলে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, অনেকদিন পরে দলের কেন্দ্রীয় মিটিং হয়েছে। দলের সভাপতি শেখ হাসিনা নিজেও বিষয়টি ভালোভাবে খোঁজখবর নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও যাচাই-বাছাই করার পর এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।