খুলনা, বাংলাদেশ | ১৫ কার্তিক, ১৪৩১ | ৩১ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১১৫৪
  দ্রুতই সিটি করপোরেশন, জেলা-উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভায় স্থায়ীভাবে প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হবে : স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা

মেয়েদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে খুলনা সরকারি মহিলা কলেজ

একরামুল হোসেন লিপু

দেশের অন্যতম দুইটি বৃহত্তম মহিলা কলেজের মধ্যে একটি খুলনা সরকারি মহিলা কলেজ। রাজধানী ঢাকায় অবস্থিত ইডেন মহিলা কলেজের পরেই কলেজটির অবস্থান। এটি খুলনার সবচেয়ে প্রাচীনতম এবং পদ্মার এপারের সর্ববৃহৎ মহিলা কলেজ। কলেজটির মনোরম পরিবেশ, নিয়ম-শৃঙ্খলা, নিরাপত্তা, শিক্ষার গুণগত মানের কারণে এসএসসি এবং ইন্টারমিডিয়েট পাশ করা মেয়েদের ভর্তি হওয়া কলেজ গুলোর মধ্যে পছন্দের তালিকায় শীর্ষে থাকে এ কলেজটি।

কলেজের একটি সূত্র জানায়, প্রতিষ্ঠার ৮২ বছর পরও কলেজটির কাঙ্খিত উন্নয়ন হয়নি। ১৪ সহস্রাধিক ছাত্রীর জন্য আবাসিক হল রয়েছে ৩ টি। ৩ টি আবাসিক হলে মাত্র ৬’শ ছাত্রীর আবাসন সুবিধা রয়েছে। ছাত্রী পরিবহনের জন্য ৩ টি বাস রয়েছে যা মোটেও পর্যাপ্ত নয়। কলেজটিতে একাডেমিক ভবনের সংকট রয়েছে। রয়েছে জনবল সংকট।

জানা যায়, কলেজটিতে পাশের হার শতভাগ। বর্তমানে কলেজটিতে ১৪ সহস্রাধিক ছাত্রী পড়াশোনা করছে। কলেজটিতে পড়াশোনা করা ছাত্রীরা অত্যন্ত মেধাবি এবং যোগ্যতাসম্পন্ন। প্রতি বছর কলেজটিতে থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করা ছাত্রীর মধ্য থেকে ১’শ থেকে দেড়’শ মেধাবী ছাত্রী দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাচ্ছে।

সাংস্কৃতিক বিভিন্ন কর্মকাণ্ড ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে কলেজটির ছাত্রীরা বেশ পারদর্শী। বর্তমানে কলেজের পাঁচজন ছাত্রী দেশের বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে উপস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কলেজে পাশ করা অনেক ছাত্রী কর্মক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন থাকেন। এ ক্ষেত্রেও তারা অত্যন্ত যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন। সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদেও তারা দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমান সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপ-মন্ত্রী হাবিবুন নাহার এ কলেজের ছাত্রী ছিলেন।

৮২ বছর পূর্বে ব্রিটিশ শাসনামলে ১৯৪০ সালের ১৮ জুলাই রায় বাহাদুর মহেন্দ্র কুমার ঘোষ কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেন। ইন্টারমিডিয়েট কলেজ হিসেবে শুরুতে কলেজটির কার্যক্রম শুরু হয়। শুরুতে কলেজটির নামকরণ করা হয় রাজেন্দ্র কুমার মহিলা কলেজ। পরবর্তীতে পাকিস্তান শাসনামলে ১৯৬৪ সালে ডিগ্রী এবং অনার্স কোর্স চালু হয়। এর ৪ বছর পর ১৯৬৮ সালের ২৫ এপ্রিল কলেজটি সরকারিকরণ হয়। খুলনা মহানগরীর বয়রা এলাকায় ১৬ একর জায়গার উপর কলেজটির অবস্থান। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত কলেজটিতে ৪১ জন অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর মধ্যে ১০ জন মহিলা অধ্যক্ষ ছিলেন। বাকি সবাই পুরুষ অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। কলেজটিতে প্রথম অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন মিস লীলাবতী ঘোষ।

কলেজটিতে ইন্টারমিডিয়েট, ডিগ্রি (পাস) বিএ বিএসসি, বিএসএস, ১২ টি বিষয়ে অনার্স যেমন বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস এবং সংস্কৃতি, দর্শন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, অর্থনীতি, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, উদ্ভিদবিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা, গণিত এবং ৬ টি বিষয়ে মাস্টার্স যথাক্রমে বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস, দর্শন রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর চালু রয়েছে। ৮৮ জন শিক্ষক তাদের মেধা এবং মননের সমন্বয় ঘটিয়ে নিয়মিত ছাত্রীদের পাঠদান এবং জ্ঞানের মশাল প্রজ্জ্বলন করে চলেছেন।

কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর টি এম জাকির হোসেন খুলনা গেজেটকে বলেন, পদ্মার এপারের দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কলেজ এটি। কলেজের ছাত্রীরা অত্যন্ত মেধাবী, পাশের হার শতভাগ, সাংস্কৃতিমনা, খেলাধুলার প্রতি খুবই আগ্রহী। জাতীয় পর্যায়ে আন্তঃকলেজ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় প্রতিবছর বেশ কয়েকটি ইভেন্টে তারা চ্যাম্পিয়ন হয়। শান্তিপূর্ণ ক্যাম্পাস। নিয়ম-শৃঙ্খলা খুবই কঠোর। ছাত্রীদের নিরাপত্তায় সর্বদা সচেষ্ট থাকে কলেজ প্রশাসন।

তিনি বলেন, দীর্ঘ সময়ে কলেজটির বেশ উন্নয়ন হয়েছে এখনো কিছু উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। ৬ তলা বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মিত হবে। তবে কাঙ্খিত উন্নয়ন হয়নি। ছাত্রীদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে ২টি বহুতলবিশিষ্ট আবাসিক হল, পরিবহনের জন্য আরো ২ টি বাস এবং একাডেমিক ভবন খুবই প্রয়োজন।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!