স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রেস থেকেই বারবার ফাঁস হয়েছে মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন। প্রেসের মেশিনম্যান সালাম ও তার খালাতো ভাই জসীম-এ দু’জন মিলে দেশব্যাপী গড়ে তুলেছিলেন বৃহৎ এক সিন্ডিকেট। যে চক্রের মাধ্যমে শত শত শিক্ষার্থী টাকার জোরে ভর্তি হয়েছে মেডিকেল কলেজগুলোতে। স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে অজস্র প্রকৃত মেধাবীর। দীর্ঘদিনের অনুসন্ধানে পুরো চক্রটিকে চিহ্নিত করে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল। এঘটনায় সিআইডি’র হাতে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন মাস্টারমাইন্ড জসিম উদ্দিন ভূঁইয়াসহ চক্রের ৪ সদস্য।
সূত্রমতে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে রয়েছে স্বাস্থ্যশিক্ষা ব্যুরোর নিজস্ব ছাপাখানা। গত তিন যুগ ধরে ম্যালেরিয়া, ডায়রিয়া, ডেঙ্গু-এমনকি হালের করোনা মহামারিরও বিভিন্ন সচেতনমূলক লিফলেট ও পোস্টার ছাপা হয় এই ছাপাখানায়। ছাপা হয় মেডিকেল ও ডেন্টাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নও। অধিদপ্তরের ক্ষমতাবান কর্তাদের মদদে এই প্রেস থেকেই বহু বছর ধরে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করতেন মেশিনম্যান আবদুস সালাম। প্রেসের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী এই সালামের আপন খালাতো ভাইয়ের নাম জসিমউদ্দিন ভূইয়া মুন্নু, যাকে প্রশ্ন ফাঁস চক্রটির মাস্টারমাইন্ড হিসেবে চিহ্নিত করেছেন চক্রের আরেক সদস্য সানোয়ার হোসেন।
দীর্ঘ অনুসন্ধানে মেডিকেল খাতের অন্যতম বৃহৎ এই কেলেঙ্কারির তথ্য উঠে এলে গত ১৯ জুলাই মিরপুরের বাসা থেকে জসিমকে গ্রেপ্তার করে সিআইডির সাইবার পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর অকপটে নিজের অপকর্মের কথা স্বীকারও করেন তিনি। দেশজুড়ে চক্রটির প্রায় অর্ধশত সহযোগীর খোঁজ পাওয়া গেছে। প্রত্যেককেই আইনের আওতায় আনতে প্রশ্নফাঁস মামলার পাশাপাশি মানিলন্ডারিং মামলাও প্রস্তুতি নিচ্ছে সিআইডি।
বিভিন্ন সময়ে মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নফাসের অভিযোগ উঠলেও শক্ত প্রমাণের অভাবে বরাবরই পাশ কাটিয়ে গেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এমন একসময়ে এসে প্রমাণ মিললো যখন দুর্নীতির দায়ে একের পর এক পতন ঘটছে স্বাস্থ্যখাতের শীর্ষ কর্তাদের।
খুলনা গেজেট/এআইএন