সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ তৈয়েবুর রহমানের দূর্নীতি ও অনিয়মের তদন্ত শুরু হয়েছে। তার অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের ভিত্তিতে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন কর্তৃক গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি রোববার (১১ জুলাই) থেকে তদন্ত শুরু করেন। তদন্তের প্রথম দিন অভিযোগকারীদের কয়েকজনের মৌখিক ও লিখিত সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। তদন্তকার্যক্রম এখনো অব্যহত রয়েছে।
একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পোষ্টিং থাকা ডাঃ তৈয়েবুর রহমান ডেপুটেশনে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার হিসাবে কর্মরত রয়েছেন। সদর হাসপাতলে যোগদানের পর তিনি প্যাথোলজি ও এক্সরে বিভাগের অতিরিক্ত দায়িত্ব নেন। একই সাথে তিনি জড়িয়ে পড়েন নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে।
হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসকরা কেউ রুমে এসি ব্যবহার না করলেও ডাঃ তৈয়েবুর রহমান তার রুমে এসি ব্যবহার করেন। এসময় তার বিরুদ্ধে এক্সে রুম থেকে ৩ প্যাকেট এক্সে প্লেট ও ২৬ প্যাকেট ক্যমিকেল চুরি, তিন শ’ টাকার সাধারণ এক্সে ফিল্মের পরিবর্তে রশিদ বইতে দুই শ’ টাকা লেখা এবং সরকারি রশিদ বইতে মাত্র ৭০ টাকা লিখে বাকি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে টাকার বিনিময় মিথ্য মেডিকেল রির্পোট প্রদান করারও একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
ডাঃ তৈয়েবুর রহমানের এসব দূর্নীতি ও অনিয়মের প্রতিকার দাবি করে সদর হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট মোঃ জাকির হোসেন ও স্বেচ্ছাসেবক মোঃ আব্দুর রাকিব পৃথকভাবে সিভিল সার্জন বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। স্বাস্থ্য বিভাগের উর্দ্ধতন বিভিন্ন দপ্তরেও এসব অভিযোগের অনুলিপি প্রদান করা হয়েছে। তাদের দু’জনের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডাঃ হোসেন সাফায়াত সদর টিএইচএ ডাঃ মাহবুুবুর রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। তদন্ত কমিটি রোববার (১১ জুলাই) থেকে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেছেন।
তদন্ত কমিটির সদস্য সাতক্ষীরা সদর হাসপতালের মেডিকেল অফিসার ও জেলা করোনা বিষয়ক তথ্য কর্মকর্তা ডাঃ জয়ন্ত কুমার সরকার বলেন, ডাঃ তৈয়েবুর রহমানের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রথমদিন অভিযোগকারী দুই জনের মৌখিক ও লিখিত সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। তদন্তকার্যক্রম অব্যহত রয়েছে। আগামী দুই/তিন দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করে সিভিল সার্জন বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে মেডিকেল অফিসার ডাঃ তৈয়েবুর রহমান বলেন, যেহেতু বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হচ্ছে সেকারণে আমি কোন মন্তব্য করতে চাই না। তদন্ত কমিটি তদন্ত করে জানতে পারবেন আমি দোষী না নির্দোষ। এবিষয়ে এই মুহুর্তে আমি কিছু বলতে চাই না।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডাঃ হোসেন সাফায়াত সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডাঃ তৈয়েবুর রহমানের বিরুদ্ধে পৃথক অভিযোগ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে বলেন, তার অনিয়ম তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে কমিটি তাদের তদন্তের কাজ শুরু করেছেন। শিঘ্রই তারা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবেন। অভিযোগ প্রমানিত হলে তার বিরুদ্ধে অধিদপ্তরের প্রয়োজনীয় বিধি অনুযায়ি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি