সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর সিনহা পুলিশের গুলিতে টেকনাফে নিহত হওয়ার ঘটনায় প্রকৃত তথ্য উদঘাটন ও নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনে আইনি নোটিশ দেয়া হয়েছে।
ন্যাশনাল ‘ল’ ইয়ার্স কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জুলফিকার আলী জুনু ৪ আগষ্ট মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র সচিব ও আইন সচিবকে এ আইনি নোটিশ দেন ।
নোটিশে বলা হয়, জাতীয় পত্রিকা থেকে প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি যে, দেশের একজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা পুলিশের গুলিতে বিচারবহির্ভুত হত্যার শিকার হয়েছেন। পুলিশের ভাষ্য, শুক্রবার (৩১ জুলাই) রাত ৯টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফের বাহারছড়া শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে সিনহা মো. রাশেদ খান নিহত হন। জেলা পুলিশ জানিয়েছে, এদিন সাবেক ওই সেনা কর্মকর্তা ব্যক্তিগত গাড়িতে করে অপর এক সঙ্গীসহ টেকনাফ থেকে কক্সবাজার যাচ্ছিলেন। মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া চেকপোস্টে পুলিশ গাড়িটি থামিয়ে তল্লাশি করতে চাইলে সেনা কর্মকর্তা বাধা দেন। এ নিয়ে তর্ক-বিতর্কের একপর্যায়ে সেনা কর্মকর্তা তার কাছে থাকা পিস্তল বের করলে পুলিশ গুলি চালায়। এতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান গুরুতর আহত হন। পরে তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। শনিবার সকালে নিহতের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
পত্রিকার ভাষ্যমতে এবং নিহত মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খানের সামাজিক মর্যাদা ও পূর্ববর্তী জীবন বৃত্তান্ত থেকে জানা যায় যে, তিনি ছিলেন একজন দেশপ্রেমিক ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ। তার বিরুদ্ধে পুলিশ কর্তৃক যে অভিযোগ এনে গুলি করা হয়েছে যা দেশের বিশিষ্টজনের চোখে কাল্পনিক।
পুলিশ কর্তৃক গুলি চালানোর কিছু আইনগত প্রক্রিয়া রয়েছে। পিআরবি ১৫১ বিধি অনুসারে ঘটনাস্থলে ম্যাজিস্ট্রেট উপস্থিত থাকলে ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশেই অধিনায়ক পুলিশ অফিসার আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের গুলিবর্ষণ করার আদেশ দিতে পারেন। মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খানের ওপর পুলিশ কর্তৃক গুলি চালিয়ে হত্যার সময় পুলিশ কর্তৃক আরোপিত আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের বিধি নিয়ম অনুসরণ করা হয়েছে কিনা? নাকি অপপ্রয়োগের মাধ্যমে সরাসরি গুলি করে হত্যা করা হয়েছে তার একটি নিরপেক্ষ সুষ্ঠু তদন্ত ও ঘটনার মূল রহস্য জনস্বার্থে ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সরকার কর্তৃক প্রকাশ করা উচিৎ।
পুলিশ কর্তৃক সাবেক সামরিক কর্মকর্তা মেজর (অব.) সিনহা মো. রাশেদ খানকে গুলি করে নিহত করার ঘটনার বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের অনুরোধ জানাচ্ছি। অন্যথায় জনস্বার্থে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে একটি রিট পিটিশন দায়ের করা হবে বলে ওই নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে। (সূত্র- দৈনিক যুগান্তর)
খুলনা গেজেট / এনআইআর