নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় মসজিদের ইমাম আব্দুল মালেকসহ এ পর্যন্ত ২১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আবাসিক সার্জন পার্থ সংকর পাল।
শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিস্ফোরণের পর দগ্ধ ৩৭ জনকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। দগ্ধ বাকি ১ ৬ জনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। ডা. সামন্তলাল সেন জানান, তারাও রয়েছেন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তিনি বলেন, আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দগ্ধদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি গভীর শোকও প্রকাশ করেছেন।
মৃতরা হলেন- মসজিদের ইমাম আবদুল মালেক (৬০), মুয়াজ্জিন দেলোয়ার হোসেন (৪৮), সাব্বির (২১), মোস্তফা কামাল (৩৪), রিফাত (১৮), জুবায়ের (১৮), কুদ্দুস ব্যাপারী (৭০), হুমায়ুন কবীর (৭০), ইব্রাহিম (৪৩), জুনায়েদ (১৭), জামাল (৪০), জুয়েল (০৭), রাশেদ (৩০), জয়নাল (৫০), মাইনউদ্দিন (১২), কাঞ্চন হাওলাদার (৫০), নয়ন (২৭), রাসেল (৩৪), বাহাউদ্দিন (৬২) ও নিজাম (৪০), নাদিম (৪৫)।
ডাক্তাররা জানিয়েছেন, সবারই অবস্থা সংকটাপন্ন, কমবেশি সবারই পুড়েছে শ্বাসনালী।
এদিকে, হাসপাতালে দগ্ধদের দেখতে এসে স্থানীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সব কিছুই তদন্ত করে দেখা হবে। এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটিকে ১০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার পশ্চিম তল্লার বাইতুছ সালাত জামে মসজিদে শুক্রবার (০৪ সেপ্টেম্বর) এশার নামাজের সময় হঠাৎ বিকট শব্দে মসজিদের কাছের বৈদ্যুতিক ট্রান্সফর্মারে বিস্ফোরণ ঘটে। সঙ্গে সঙ্গে মসজিদের ভেতরে এসির বিস্ফোরণও ঘটে। মুহূর্তে মসজিদের ভেতরে আগুন ধরে যায়। আগুনের ফুলকি ছড়িয়ে পড়লে মুসল্লিরা দগ্ধ হতে থাকেন।
দগ্ধ হন মসজিদের ইমাম মালেক আনসারী ও মুয়াজ্জিন দেলোয়ার হোসেন, ফটো সাংবাদিক নাদিম হোসেনসহ ৪০ জন। আহতদের প্রথমে নারায়ণগঞ্জ ১০০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে তাদের ঢাকা মেডিকেলের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।
এদিকে তিতাসের গ্যাস কর্তৃপক্ষের গাফিলতি বিস্ফোরণের ঘটেছে বলে দাবি করছে স্থানীয়রা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অনেকদিন ধরেই এই মসজিদের নিচে তিতাসের লাইনের লিকেজ থেকে গ্যাস বের হবার গন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। এ নিয়ে বারবার অভিযোগ করেও কোনো পদক্ষেপ না নেয়ার অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
প্রাথমিকভাবে অনেকেই এসি বিস্ফোরণের ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করলেও মূলত তা গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে ঘটেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
স্থানীয়দের অভিযোগ, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। অনেকদিন ধরেই এ মসজিদের নিচে তিতাসের লাইনের লিকেজ থেকে গ্যাস বের হওয়ার গন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। এ নিয়ে বারবার অভিযোগ করেও কোনো পদক্ষেপ না নেয়ার অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।