বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে খুলনার ৯ উপজেলায় আরও এক হাজার তিনশ’ ৫১ গৃহহীন পরিবার ঘর পাচ্ছেন। আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় ২য় ধাপের এসব ঘরের জন্য প্রত্যেক ভূমিহীন দুই শতক করে জমি পাবেন। ৭ এপ্রিলের মধ্যে ঘরের নির্মাণ কাজ শেষ হবে। ১ম ধাপে খুলনায় নয়শ’ ২২ ভূমিহীন পরিবার ঘর পান।
আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের সূত্রে জানা যায়, ২য় ধাপের ঘরগুলোর নকশার কিছু পরিবর্তন হচ্ছে। ১ম ধাপের প্রতি ঘরের জন্য এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়। ২য় ধাপে প্রতিটি ঘরের জন্য আরও ২০ হাজার টাকা বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ১ম ধাপের ঘর দেয়ার পর বিদেশি কূটনৈতিকরা প্রধানমন্ত্রীর এ উদ্যোগকে স্বাগত জানান। খুলনা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভূমিহীন এক হাজার তিনশ’ ৫১ পরিবারের নাম আশ্রয়ন-২ প্রকল্পে পাঠানো হয়েছে। ২য় ধাপে ডুমুরিয়ায় পাঁচশ’, পাইকগাছায় তিনশ’, রূপসায় দুইশ’ ১৫, দাকোপে দুইশ’, তেরখাদায় ৪০, দিঘলিয়া, বটিয়াঘাটা ও কয়রায় ৩০টি করে এবং ফুলতলা উপজেলায় ছয়টি গৃহহীন পরিবার ঘর পাবেন।
তেরখাদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া ইসলাম জানান, ২য় ধাপের জন্য উপজেলা সদর, সাচিয়াদাহ ও ছাগলাদাহ ইউনিয়নে ঘর নির্মাণের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করা হয়েছে। ভূমিহীনদের তালিকা দিতেও ইউপি চেয়ারম্যানদের বলা হয়েছে। ১ম ধাপে শুধুমাত্র ছাগলাদাহ ইউনিয়নে ৪০টি ভূমিহীন পরিবার ঘর পায়।
রূপসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন আক্তার জানান, আইচগাতী, শ্রীফলতলা, টিএস বাহিরদিয়া, ঘাটভোগ ও নৈহাটী ইউনিয়নে ২য় ধাপে ভূমিহীনদের জন্য ঘর নির্মাণ করা হবে। ১ম ধাপে এখানে ৭২টি গৃহহীন পরিবার মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়েছে।
ফুলতলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন জানান, দামোদর ইউনিয়নে ২য় ধাপের ঘর নির্মাণের জন্য স্থান চূড়ান্ত করা হচ্ছে। ৭ এপ্রিলের মধ্যে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে। ১ম ধাপে উপজেলার ৪ ইউনিয়নে ৪০টি গৃহহীন পরিবার প্রধানমন্ত্রীর এ উপহার পেয়েছেন।
দিঘলিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মাহবুব আলম জানান, ৩০টি গৃহহীন পরিবার ২য় ধাপে ঘর পাবে। বারাকপুর ও দিঘলিয়া ইউনিয়নে স্থান নির্বাচন করা হয়েছে। ১ম ধাপে ৭০টি গৃহহীন পরিবার ঘর পায়।
দাকোপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিন্টু বিশ^াস জানান, সুতারখালী, কৈলাশগঞ্জ, বানিশান্তা ও দাকোপ ইউনিয়নের দুইশ’ ভূমিহীন পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর উপহার দেয়ার জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। ১ম ধাপে তিলডাঙ্গা, পানখালী, বাজুয়া, লাউডোব ও বানিশান্তা ইউনিয়নের একশ’ ৪০টি গৃহহীন পরিবার ঘর পায়। গৃহহীনদের দলিল হস্তান্তর করা হয়েছে। ১ম ধাপে গৃহ নির্মাণের মিস্ত্রি মজুরির একাংশ বকেয়া রয়েছে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, ঘর হারাদের নতুন স্বপ্ন ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনের লক্ষে ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আশ্রয়ন নামে একটি প্রকল্প নেয়া হয়। প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধায়নে পরিচালিত হচ্ছে। আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় নেয়া তাদের জীবন-জীবিকা বদলের উদ্যোগ। ভূমিহীন, গৃহহীন, অসহায় ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন, তাদের ঋণ প্রদান, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জীবন-জীবিকা নির্বাহে সক্ষম করে তোলা এবং আয় বর্ধক কার্যক্রম সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র দূর করাই এ প্রকল্পের লক্ষ্য।