বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম লক্ষ্য ছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। দেশে গণতন্ত্র ভূলুন্ঠিত দাবি করে তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বাস্তবায়ন করতে হলে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ের তীব্রতা বাড়াতে হবে। দলগত ও জোটগতভাবে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে পারলে আমরা বিজয়ী হতে পারবো।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে খুলনায় অনুষ্ঠিত শহীদ জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা ও আজকের বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। রবিবার (২৭ মার্চ) বিকেলে খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে বিএনপি মহানগর ও জেলা শাখার যৌথ আয়োজনে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির আহবায়ক শফিকুল আলম মনা।
প্রধান অতিথি আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, তথাকথিত উন্নয়নের নামে দেশে লুটপাট চলছে। দেশ আবারও এক কঠিন সংকটে নিপতিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক বাজট প্রণয়ন না হলে সংকট সমাধান সম্ভব হবেনা। সরকার পতনের লক্ষ্য স্থির ও কৌশল নির্ধারণ করতে না পারলে আমরা ফ্যাসিবাদের পতন ঘটাতে পারবো না। সরকারের সাজানো পাতানো মামলার রায়ে আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে। আমাদের নেতা তারেক রহমান বিদেশে। কিন্তু জনতার আদালতে তাদের মামলা মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে।
দেশে ইতিহাসের বিকৃতি ঘটানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, আজ অনেকেই জিয়াকে পাকিস্তানের চর বলে আখ্যায়িত করেন। কিন্ত সেদিন জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা না দিলে পরিণতি হতো ভয়াবহ। জিয়া স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন বলেই তা মুক্তিযুদ্ধে রূপ নেয়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আক্রমণ চালালে রাজনৈতিক নেতাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি। রাজনেতিক শূণ্যতার কারণে জিয়া তার নিজের নামে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, অনেকেই সেদিন স্বাধীনতা চাননি। চেয়েছিলেন বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র এবং স্বায়ত্বশাসনের মাধ্যমে পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে থেকে যেতে।
মহানগর ও জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব মোঃ শফিকুল আলম তুহিন ও এসএম মনিরুল হাসান বাপ্পীর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবীদ শামীমুর রহমান শামিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা, খান রবিউল ইসলাম রবি, জেলা বিএনপি’র আহবায়ক আমীর এজাজ খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক সংসদ সদস্য স ম বাবর আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রবীন আইনজীবী আ ফ ম মহসিন, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এ্যাড. এস আর ফারুক, জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক শেখ আবু হোসেন বাবু, নগর বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক সৈয়দা রেহেনা ঈসা ও এ্যাড. নূরুল হাসান রুবা।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় আজিজুল বারী হেলাল বলেন, ১৯৭১ এ জিয়াউর রহমান সেনা কর্মকর্তা হিসেবে জীবনের সর্বোচ্চ ঝুঁকি নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন। কোন কারণে যুদ্ধে পরাজিত হলে কিংবা সমঝোতার কারণে যুদ্ধ থেমে গেলে নিশ্চিত ফাঁসি অথবা ফায়ারিং স্কয়াডে তার মৃত্যুদন্ড হতো। দেশে ইতিহাসের বিকৃতি চলছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, আমরা মূল ইতিহাসে বিশ্বাসী। পরিবর্তিত ইতিহাসে বিশ্বাসী না।
জয়ন্ত কুমার কুন্ডু বলেন, ১৯৭০ সালে এ দেশের ৮ কোটি মানুষ যেমন সংকটে ছিলেন, আজ দেশের ১৮ কোটি মানুষ তার চাইতে ভয়াবহ সংকটে। এখন আর একজন মেজর জিয়াকে প্রয়োজন। গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের শত্রুদের বিরুদ্ধে আর একটি যুদ্ধের ডাক দিতে হবে।
কৃষিবীদ শামীমুর রহমান শামীম বলেন, আগামীতে দেশে ইভিএম এ কোন ভোট হতে দেয়া হবেনা। নির্দলীয় সরকার ছাড়া কোন ভোট হবেনা।
সভার শুরুতেই কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন ক্বারী মোঃ জাহিদ হোসেন। এরপর মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক সংগ্রামে জীবন উৎসর্গকারী সকল শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া মোনাজাত করা হয়।
কর্মসূচিকে সফল করতে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি এবং অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের বিশাল বিশাল মিছিল কর্মসূচিস্থলে এসে হাজির হয়। সূত্র: প্রেস বিজ্ঞপ্তি।
খুলনা গেজেট/ টি আই