খুলনা, বাংলাদেশ | ২ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৭ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গ্রেপ্তার

মিয়ানমারের প্রধান বিচারপতিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র-বৃটেন-কানাডার নিষেধাজ্ঞা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

সামরিক অভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তিতে মিয়ানমারের প্রধান বিচারপতি তুন তুন ওও’সহ কমপক্ষে ৭ কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন ও কানাডা। সামরিক জান্তার অভ্যুত্থান এবং তাদের দ্বারা সংঘটিত সহিংসতার জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে এ অবরোধ দেয়া হয়েছে। 

যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবরোধ দেয়া হয়েছে তারা হলো- প্রধান বিচারপতি তুন তুন ওও, এটর্নি জেনারেল থিডা ওও, দুর্নীতি বিষয়ক কমিশনের চেয়ারম্যান ইউ তিন ওও, সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা ইউ থেইন সোয়ে, কেটি গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জোনাথন মাইও কাইওয়া থাউং, বেশ কিছু কোম্পানির মালিক তাই জা, তার দুই ছেলে হতু হটেট তাই জা এবং পাই ফাইও তাই জা। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।

এতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট অবরোধ দিয়েছে মিয়ানমারের এটর্নি জেনারেল থিডা ওও, সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি তুন তুন ওও এবং দুর্নীতি বিষয়ক কমিশনের চেয়ারম্যান ইউ তিন ওও’র বিরুদ্ধে। গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেত্রী অং সান সুচির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিচারের সঙ্গে তারা ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত বলে এতে বলা হয়েছে।

অন্যদিকে বৃটেন বলেছে তারা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে থিডা ওও, তিন ওও এবং সেনাবাহিনীর সাবেক এক কর্মকর্তা ইউ থেইন সোয়ে’র বিরুদ্ধে। সামরিক অভ্যুত্থানের পরে নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল ইউ থেইন সোয়ে’কে।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন বিবৃতিতে বলেছেন- মিয়ানমারের জনগণের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের তীব্র সমর্থন আছে। তা প্রদর্শনের জন্যই বৃটেন ও কানাডার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে আমরা এসব ব্যবস্থা নিয়েছি। এতে শাসকগোষ্ঠীর অভ্যুত্থান ও সহিংসতার জবাবদিহিতাকে নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।

মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে অব্যাহতভাবে কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে শাসকগোষ্ঠীকে সহিংসতা বন্ধে চাপ দেয়া হবে। অন্যায়ভাবে আটক করা ব্যক্তিদের মুক্তি দিতে হবে। অবাধ মানবিক সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। মিয়ানমারে গণতন্ত্র পুনঃস্থাপন করতে হবে।

ওদিকে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা জনগণকে সন্ত্রস্ত করে তাদেরকে আত্মসমর্পণে চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস। সামরিক জান্তার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেছেন, ভীতি ও সহিংসতার মাধ্যমে তারা বিভক্তি এবং সংঘাত সৃষ্টি করেছে। স্বাধীনতা, গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের অধিকারের পক্ষে সব সময়ই অবস্থান করবে বৃটেন। সমমনা দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে আমরা এই নিষ্পেষণ এবং নৃশংস শাসকগোষ্ঠীকে জবাবদিহিতায় আনবো।

কানাডা সরকারও এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, গত একটি বছর মিয়ানমারে মানবতা এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে চায় সামরিক বাহিনী- এমন কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি। ওয়াশিংটনের সঙ্গে কানাডাও ওই তিনজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, তারা আইনের শাসনকে লঙ্ঘন করতে এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল করছে। এর মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক শান্তি ভয়াবহভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতির আরো অবনতি হচ্ছে।

আলাদাভাবে বেশ কিছু ব্যবসায়িক নেতা ও কোম্পানির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। অভিযোগ, তারা মিয়ানমারের সামরিক জান্তাকে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে। এর মধ্যে আছে কেটি গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, কেটি গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান কেটিএসএল-এর পরিচালক জোনাথন মাইও কাইওয়া থাউং। মিয়ানমারের সবচেয়ে বড় শহর ও বাণিজ্যের প্রাণকেন্দ্র ইয়াঙ্গুনে একটি বড় বন্দর পরিচালনা করছে কেটিএসএল। নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে বেশ কিছু কোম্পানির মালিক তাই জা’র বিরুদ্ধে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে অস্ত্র, বিভিন্ন সরঞ্জাম ও সার্ভিস সুবিধা দিয়ে আসছে এসব কোম্পানি। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের নিষেধাজ্ঞায় যাদের নাম আছে তারা হলো তাই জা’র দুই ছেলে হতু হটেট তাই জা এবং পাই ফাইও তাই জা। নিষেধাজ্ঞা দেয়ার ফলে এসব ব্যক্তির সব সম্পদ জব্দ করবে যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের সঙ্গে কোনো মার্কিন নাগরিক বাণিজ্য করতে পারবে না।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!