খুলনা, বাংলাদেশ | ১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৬ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ভারতে হাসপাতালে আগুন লেগে ১০ শিশুর মৃত্যু
মোটরসাইকেলে দু'জন তাদের অনুসরণ করে

‘মিরপুর থেকেই ডিসকানেক্টেড হয়ে যান আদনান’

গেজেট ডেস্ক

আলোচিত ইসলামী বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান নিখোঁজ হওয়ার পাঁচদিন পরও পুলিশ তার কোন হদিস করতে পারেনি। তার পরিবারের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী এবং পুলিশ ও র‌্যাব প্রধানদের বরাবরে চিঠি দিয়ে মি: আদনানকে খুঁজে বের করার দাবি জানানো হয়েছে। আদনানের স্ত্রী বলেছেন, পুলিশ এবং র‌্যাবের সাথে দফায় দফায় যোগাযোগ করার পরও তারা কিছু জানতে পারছেন না।

গত বৃহস্পতিবার রাতে রংপুর থেকে ঢাকায় ফেরার পথে মি: আদনান তার দু’জন সহকর্মী, গাড়ি চালক সহ চারজন নিখোঁজ হন। তাদের বহনকারী গাড়িটিরও কোন খোঁজ মেলেনি।

নিখোঁজ আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানের স্ত্রী সাবেকুন নাহার মঙ্গলবার ঢাকায় পুলিশ এবং র‌্যাব সদর দপ্তরে গিয়ে বাহিনী দু’টির প্রধানদের বরাবরে চিঠি জমা দিয়েছেন।

এর আগে তিনি প্রধানমন্ত্রী বরাবরেও চিঠি লিখেছেন। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের গেটে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের কাছে তিনি সেই চিঠি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।

সাবেকুন নাহার বলেছেন, তিনি তার স্বামী নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছ থেকে কিছুই জানতে পারছেন না। সেজন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা চেয়ে চিঠিগুলো লিখেছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।

“চিঠিতে আমার বক্তব্য হচ্ছে, আমি আমার স্বামীকে ফেরত চাই। যদি আমার স্বামী কোন ভুল করে থাকে বা তার যদি কোন অন্যায় থাকে, তারপরওতো আমাকে তথ্য জানাতে হবে যে সে কোথায় আছে। আমার তো এতটুকু জানার অধিকার আছে। কিন্তু আমি কোন কিছু জানতে পারছি না” – বলেন মিজ নাহার।

তিনি অভিযোগ করেছেন, তার স্বামী নিখোঁজ হওয়ার পর মামলা করার জন্যও তাকে থানায় থানায় ঘুরতে হয়েছে। মি: আদনান রংপুর থেকে ঢাকায় আসার পথে নিখোঁজ হন। কিন্তু ঠিক কোথা থেকে নিখোঁজ হয়েছেন – এই প্রশ্ন তুলে ঢাকার মিরপুর এলাকার দু’টি থানায় প্রথমে তাদের জিডিও নেয়া হয়নি। শেষপর্যন্ত ঘটনার পরদিন শুক্রবার নিখোঁজ ঐ ব্যক্তির মা এবং স্ত্রী রংপুরে থানায় গিয়ে দু’টি জিডি করেছিলেন।

রংপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার আবু মারুফ হোসেন বলেছেন, ঢাকার কাছাকাছি এলাকা থেকে নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারে তারা নিশ্চিত হয়েছেন। তবে এখনও ঘটনার কোন সূত্র পাওয়া যায়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন।

“আসলে সে নিখোঁজ হয়েছে ঢাকা থেকে। আমাদের কাছে দুটো জিডি হয়েছে। গাড়ির চালক এবং মি: আদনান ও তার দু’জন সহকর্মীসহ চারজন নিখোঁজ হয়েছে। তারা ভাড়া করা গাড়িতে একইসাথে ছিল।”

পুলিশ কর্মকর্তা মি: হোসেন আরও বলেছেন, “সর্বশেষ যোগাযোগ অনুযায়ী তারা ঢাকার গাবতলী পার হয়ে মিরপুর ১১ নম্বরের কাছাকাছি ছিল। সেখান থেকে তার পরিবারের সাথেও কথা হয়েছে। সে বলেছে তারা আর ১০ বা ১৫ মিনিটের মধ্যে পৌঁছে যাবে। কিন্তু এরপর থেকেই তারা ডিসকানেক্টেড হয়ে যায়। তাদের আর ট্রেস পাওয়া যায়নি।”

আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানের স্ত্রী সাবেকুন নাহার গত সোমবার মিরপুরের পল্লবী থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। তবে পল্লবী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেছেন, ঢাকা থেকে নিখোঁজ হওয়ার ব্যাপারে তারা এখনও নিশ্চিত হতে পারেননি। তিনি জানিয়েছেন, অভিযোগ এখনও মামলা হিসাবে তারা গ্রহণ করেননি। কিন্তু তারা অভিযোগ খতিয়ে দেখছেন বলে তিনি দাবি করেন।

মি: আদনানের একটি ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে। সেখানে তিনি ইসলাম সম্পর্কে বক্তব্য দিতেন। এছাড়া তিনি দেশের বিভিন্ন জায়গায় ধর্মীয় সমাবেশে যেতেন বক্তা হিসাবে। কোরআন শিক্ষা দেয়ার জন্য তার একটি মাদ্রাসা ছিল। তার পরিবারের কাছ থেকে এসব তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ।

পুলিশ কর্মকর্তা আবু মারুফ হোসেন বলেছেন, মি: আদানানের কর্মকাণ্ড, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে এসবের ওপর ভিত্তি করে তারা অনুসন্ধান কার্যক্রম চালাচ্ছেন। “তার পেশাগত কিছু বিষয় থাকতে পারে বা ব্যক্তিগত জীবন- কোথাও কোন বিরোধ ছিল কিনা – এসব আমরা খতিয়ে দেখছি।”

মি: আদনানের স্ত্রী বলেছেন, তার স্বামীর নিখোঁজ হওয়ার পেছনে কি কারণ থাকতে পারে- সেটা তারা ধারণা করতে পারছেন না। একইসাথে তিনি ঘটনা সম্পর্কে বলেছেন, “উনি (মি: আদনান) আসলে রংপুর থেকে বগুড়ায় একটা প্রোগ্রামে আলোচক হিসাবে গিয়েছিলেন। সেই প্রোগ্রামটি কোন কারণে হয়নি। সেখান থেকে দু’জন সহকর্মীসহ গাড়িতে ঢাকা আসছিলেন।”

“উনি টেলিফোনে আমাকে বলেছিলেন যে, দু’টি মোটরসাইকেলে দু’জন লোক তাদের অনুসরণ করছিলো। একপর্যায়ে অনুসরণকারীদের তারা আর দেখতে পায়নি। তবে নিখোঁজ হওয়ার কোন কারণ আমি বুঝতে পারছি না” বলেন সাবেকুন নাহার।

পুলিশ কর্মকর্তারা সব বিষয়ই খতিয়ে দেখার কথা বলছেন। (সূত্র : বিবিসি বাংলা)

খুলনা গেজেট/ এস আই

 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!