নিউজিল্যান্ড সিরিজের আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি শুরু করেছে বাংলাদেশ দল। শুক্রবার (২৭ আগস্ট) সকালে মিরপুরে ঘাম ঝরান নিউজিল্যান্ড সিরিজের স্কোয়াডে থাকা সদস্যরা। একই সাথে ঘাম ঝরিয়েছে নিউজিল্যান্ডের খেলোয়াড়রাও।
এদিকে টাইগারদের প্রথম দিনের অনুশীলনে ছিলেন না সাকিব। বিদেশ ভ্রমণ শেষে সাকিব বাংলাদেশে ফিরেছেন ২৫ আগস্ট (২৪ আগস্ট দিবাগত রাতে)। দল কোয়ারেন্টিন শুরু করেছিল ২৪ আগস্ট থেকে। বাকি সদস্যদের যখন কোয়ারেন্টিন শেষ, সাকিবকে তখন থাকতে হচ্ছে আরও একদিন অপেক্ষায়। একাধিক করোনা টেস্টে নেগেটিভ থাকা সাপেক্ষে সাকিবের দলের পরবর্তী অনুশীলন সেশনে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।
শুক্রবার সকাল ১০টায় দলীয় অনুশীলন শুরুর কথা থাকলেও সাড়ে নয়টা নাগাদ ক্রিকেটাররা ‘হোম অব ক্রিকেট’ খ্যাত মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেন। ওয়ার্ম আপের পর ফিল্ডিং ও ক্যাচ অনুশীলনে ঘাম ঝরান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদরা। এরপর দুপুর একটা পর্যন্ত চলে নেট সেশন।
এদিকে তিন দিনের কোয়ারেন্টাইন শেষে, প্রথমবারের মতো মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে অনুশীলন করেছে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দল। করোনার কারণে ফিন অ্যালেন না থাকলেও, উপস্থিত ছিলেন স্কোয়াডে থাকা বাকি সদস্যরা। পর্যবেক্ষক দলের সন্তুষ্টির পর মূল মাঠ এবং একাডেমি গ্রাউন্ডে অনুশীলন করেন কিউই ক্রিকেটাররা। প্রথম দিন ফিল্ডিং এবং স্কিল সেশনেই বেশি সময় পার করেছেন।
ছুটির দিনের দুপুরে দারুণ ব্যস্ত মিরপুর। সড়ক পথে নিরাপত্তা কর্মীদের অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি না থাকলেও, সব কিছুতে ছিল বাড়তি উত্তাপ। কারণ হোম অব ক্রিকেটে তখন উপস্থিত নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট দলকে বহনকারী দুটি বাস। প্রথমেই কয়েকজন নেমে বুঝে নিলেন চারদিকের অবস্থা।
এরপর একে একে মূল মাঠে প্রবেশ করলেন সবাই। কিন্তু সেখানে বেশিক্ষণ সময়ক্ষেপণ করার অবস্থা নেই কিউইদের। তিন দিনের হোটেলবন্দী কোয়ারেন্টাইনে জং ধরেছে শরীরের কলকব্জায় প্রথমেই তাই ওয়ার্ম আপ আর ফিল্ডিং সেশনে ব্যস্ত সবাই।
এদিকে বাংলাদেশে এসে করোনা আক্রান্ত হন ফিন অ্যালেন। তার বদলি হিসেবে একজন পেসার যুক্ত হচ্ছেন নিউজিল্যান্ড দলে।
নিউজিল্যান্ডের প্রধান কোচ গ্যারি স্টেড বলেন, ‘হেনরি অবশ্যই ফিনের বদলি হতে পারে না। তবে আমাদের এ ছাড়া কোনো উপায়ও নেই। এ মুহূর্তে যে সময় আছে তাতে, তাকেই পাঠাতে হচ্ছে। ইংল্যান্ড থেকে কাউকে আনলে আমাদের কোয়ারেন্টাইনের ঝামেলায় পড়তে হতো। এর চেয়ে হেনরি ভালো বিকল্প। তার দুই ডোজ ভ্যাকসিনও দেওয়া আছে। এ ছাড়া সে আসলে দলে অনেক ভ্যারিয়েশনও আসবে।’
অনুশীলনের মাঝেই ঘুরে ঘুরে ঢেকে রাখা উইকেট এবং আশপাশের পিচগুলো দেখেছেন দলের সঙ্গে থাকা স্টাফরা। সেখানে তারা কী বুঝেছেন, তা জানা না গেলেও একাডেমি মাঠের নেট সেশনে দেখা গেলো মিডিয়াম পেসারদের আধিক্য। স্পিনাররা একটা নেটে হাত ঘুরালেও, স্লো বোলিংয়েই বেশি সময় কাটালেন কিউই ব্যাটাররা।
গ্যারি স্টেড আরও জানান, ‘আমরা জানি, কন্ডিশন এবং আবহাওয়া কিছুই আমাদের সঙ্গে মিলবে না। আশা করবো ছেলেরা দ্রুত মানিয়ে নেবে। বায়োবাবলের অনেক বাধ্যবাধকতা আছে তাই আমি চাইবো স্কোয়াডের সবাইকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে খেলাতে। ওয়ার্ক লোডের বিষয়টাও আমাদের মাথায় রাখতে হবে।’
এদিকে হেনরি আসলেও, দলের সঙ্গেই থাকবেন ফিন অ্যালেন। দুইবার নেগেটিভ আসলে যোগ দিতে পারবেন অনুশীলনে।
একনজরে দুই দলের স্কোয়াড
বাংলাদেশ : মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (অধিনায়ক), সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, সৌম্য সরকার, লিটন দাস, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, আফিফ হোসেন, নাঈম শেখ, নুরুল হাসান সোহান, শামীম হোসেন পাটোয়ারি, রুবেল হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, শরিফুল ইসলাম, তাইজুল ইসলাম, মেহেদী হাসান, নাসুম আহমেদ, আমিনুল ইসলাম বিপ্লব।
নিউজিল্যান্ড : টম ল্যাথাম (অধিনায়ক), হামিশ বেনেট, টম ব্লান্ডেল, ডগ ব্রেসওয়েল, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম, জ্যাকব ডাফি, স্কট কুগেলেইন, কোল ম্যাককনকি, হেনরি নিকোলস, এজাজ প্যাটেল, রাচিন রবীন্দ্র, বেন সিয়ারস, উইল ইয়ং, ব্লেয়ার টিকনার, ম্যাট হেনরি।