প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মার্কিন ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জাহাজ নির্মাণ, অটোমোবাইল এবং ফার্মাসিউটিক্যালে ব্যাপকভাবে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন এবং শুধুমাত্র মার্কিন বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি নিবেদিত ‘বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’ রাখার প্রস্তাব পুনর্ব্যক্ত করেছেন। বাংলাদেশে সুযোগ অন্বেষণ ও বিনিয়োগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী নেতাদের প্রতিও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি “ইউএস-বাংলাদেশ ইকোনমিক পার্টনারশিপ: শেয়ার্ড ভিশন ফর স্মার্ট গ্রোথ” শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের এক্সিকিউটিভ বিজনেস গোলটেবিলের মূল বক্তব্য উপস্থাপনের সময় এ আহবান বলেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ইউএস বাংলাদেশ আইটি কানেক্ট পোর্টাল উদ্বোধন করেন।
ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল এখানে ইউএস চেম্বার অব কমার্স ওয়াশিংটন, ডিসির গ্রেট হলে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন যে, যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল আমাদের দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি বলেন, “২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আমাদের যাত্রায় অংশীদার হিসেবে আমাদের সাথে থাকার জন্য আমি আজকে এখানে আপনাদের আহ্বান জানাচ্ছি।”
তিনি বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে দেশের বিভিন্ন স্থানে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) এবং ২৯টি হাই-টেক পার্ক স্থাপন করছে।
প্রধানমন্ত্রী এ অঞ্চলে বাংলাদেশের সবচেয়ে উদার বিনিয়োগ নীতির কথা আবারও স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশে আইন দ্বারা বিদেশী বিনিয়োগ সুরক্ষা, ট্যাক্স হলিডে, রয়্যালটি রেমিটেন্স, বাধাহীন প্রস্থান নীতি, লভ্যাংশ ও মূলধন সম্পূর্ণ প্রত্যাবর্তন সুবিধা রয়েছে। তিনি আশ্বাস ব্যক্ত করে বলেন যে, আমরা আমাদের বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত করতে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছি।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের প্রচেষ্টায় গত ১৪ বছরে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য আর্থ-সামাজিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। “বাংলাদেশ এখন সর্বজনীনভাবে “আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের রোল মডেল” হিসাবে স্বীকৃত। সুশাসনের ধারাবাহিকতা, আইনের শাসন ও স্থিতিশীলতা, গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিনিয়োগ, নারীর ক্ষমতায়ন এবং আইসিটি খাতে অগ্রগতির কারণে এটা সম্ভব হয়েছে যা আমাদেরকে “ডিজিটাল বাংলাদেশ” অর্জনের পথে এগিয়ে নিয়ে গেছে।
প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক এবং চেয়ারম্যান এক্সেলরেট এনার্জি স্টিভেন কোবোস, বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপের গ্লোবাল চেয়ার ইমেরিটাস (বিসিজি) হ্যান্স-পল বার্কনার, মাস্টারকার্ডের গ্লোবাল পাবলিক পলিসি অ্যান্ড ইন্দো-প্যাসিফিক পলিসি অপারেশনের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রবি অরোরা, বিকাশের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদির, শেভরন বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর এরিক ওয়াকার এবং গ্লোবাল হেড অব এক্সপ্রোরেশন অ্যান্ড নিউজ এক্সনমোবিলের ভেঞ্চার ডঃ জন আর্ডিল উচ্চ-স্তরের গোলটেবিলে বক্তৃতা করেন।
ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট এবং ইউএস চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট-সাউথ এশিয়া অ্যাম্বাসেডর অতুল কেশপ স্বাগত বক্তব্য রাখেন।
এ ছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, বোয়িং ইন্ডিয়া ও দক্ষিণ এশিয়ার প্রেসিডেন্ট শাইল গুপ্ত, ইউএস সয়াবিন এক্সপোর্ট কাউন্সিলের দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান কেভিন রোপেকে, প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
উপস্থিত ছিলেন টইঊজ-এর পাবলিক পলিসি অ্যান্ড গভর্নমেন্ট অ্যাফেয়ার্স-এশিয়া প্যাসিফিক মাইক অরগিল, ইউএস চেম্বার অফ কমার্সের দক্ষিণ এশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট রায়ান মিলার, ইউএস চেম্বার অফ কমার্সের নির্বাহী পরিচালক সন্দীপ মাইনি এবং ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের পরিচালক সিদ্ধান্ত মেহরা।
খুলনা গেজেট/এইচ