উন্নত চিকিৎসার জন্য বর্তমানে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অবস্থান করছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। সেখানে ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে এবারের পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন তিনি। রোববার (৩০ মার্চ) রাতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মা খালেদা জিয়াসহ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করেছেন।
সেখানে তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশের জনগণ এবং বিশ্বের মুসলিম ভাইবোনদের ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানাই – ঈদ মোবারক।
১৭ বছর ধরে বাংলাদেশের নিপীড়িত মানুষ একটি মুক্ত ও গণতান্ত্রিক দেশে ঈদ উদযাপনের জন্য অপেক্ষায় ছিলেন – এমন একটি দেশ যেখানে স্বৈরাচার আর তাদের কণ্ঠরোধ করবে না। ২০২৪ সালে সেই ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। একটি ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে, দুই হাজারের বেশি প্রাণের বিনিময়ে স্বৈরাচারের শৃঙ্খল মুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ। প্রায় দুই দশক পর এই প্রথম আমরা স্বৈরাচারমুক্ত দেশে পবিত্র এই দিনটি উদযাপন করছি। সর্বশক্তিমান আল্লাহর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আমি সেই শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি, যারা এই স্বাধীনতার জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন এবং যারা আজও সেই সংগ্রামের ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছেন।
এই ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার দিনে আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি নেতা ও কর্মীসহ সব বাংলাদেশিকে আহ্বান জানাই স্বৈরাচারমুক্ত দেশে আমাদের প্রথম ঈদের আনন্দ সেসব পরিবারের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার জন্য, যারা তাদের প্রিয়জনদের হারিয়েছেন এবং যারা গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন।
যাদের সময় এবং সামর্থ্য আছে, আমি আপনাদের অনুরোধ করছি আপনাদের নিজ সম্প্রদায়ের মানুষের খেয়াল রাখার জন্য, দেশের সব নারী-পুরুষদের প্রতি বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য। আপনারা এতিমখানার শিশুদের সঙ্গে খাবার ভাগাভাগি করে নিন যাদের পরিবারের অনুপস্থিতিতে প্রাতিষ্ঠানিক বাড়িতেই ঈদ উদযাপন করতে হয়। অসহায়দের পাশে দাঁড়ান, যাতে অর্থনৈতিক কষ্ট তাদেরকে আনন্দের মুহূর্ত থেকে বঞ্চিত করতে না পারে।
আমি পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের অতিরিক্ত ভাড়া আদায় থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি, যাতে বাড়ি ফেরা মানুষজন কোনো প্রকার অতিরিক্ত বোঝা ছাড়াই তাদের পরিবারের সঙ্গে মিলিত হতে পারে।
আমরা যখন ঈদ উদযাপন করছি, তখনও অতীতের কিছু শক্তি আমাদের দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। আমি সকলকে সতর্ক ও ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে তারা তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে না পারে। যদি আমরা ঐক্যবদ্ধ হতে ব্যর্থ হই, তবে এই শক্তিগুলো আমাদের ঐতিহাসিক বিজয়কে দুর্বল করার সুযোগ নেবে।
সবশেষে আমি আমাদের দেশপ্রেমিক সশস্ত্র বাহিনী এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে ঈদের সময় সর্বোচ্চ সতর্কতা বজায় রাখার আহ্বান জানাচ্ছি, যাতে কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে জনজীবন ও সম্পত্তির ক্ষতি করতে না পারে।
আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করি– স্বাধীন বাংলাদেশের এই প্রথম ঈদ সবার জন্য শান্তি, ঐক্য এবং আনন্দের হোক।
খুলনা গেজেট/এএজে