খুলনা, বাংলাদেশ | ২৯ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১৪ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  ইসরায়েলি সেনা ক্যাম্পে হিজবুল্লাহর ড্রোন হামলা, নিহত ৪

মানসিক চাপে পড়ে রামপালে ঔষধ ব্যবসায়ীর আত্মহত্যা!

রামপাল প্রতিনিধি

দেনার দায় থেকে মুক্তি পেতে রামপালের ওষুধ ব্যবসায়ী আত্মহত্যা করেছে এমন কথা শোনা গেলেও মৃত্যুর পর বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে মৃত্যুর কারণ। এ নিয়ে নানা গুনজন শুরু হয়েছে। পুলিশ বলছে ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে না পেলে মৃত্যু সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। স্বজনরা বলছে ভিন্ন কথা, পাওনাদারদের মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে এ আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে তাদের ধারণা। আত্মহত্যার প্ররাচনার জন্য তারা তিন ব্যক্তিকে দায়ী করেছে।

জানা গেছে উপজেলার গৌরম্ভা ইউনিয়নের সোনাকুড় গ্রামের আলাউদ্দিনের মেয়ে পাপিয়াকে খুলনা মহানগরের নিরালা আবাসিক এলাকার মত আরজ আলীর ছেলে মো. সফিকুর রহমান সফিক (৪০) বিয়ে করে ঘর জামাই হিসাবে শ্বশুর বাড়িতে থেকে স্থানীয় সোনাকুড় নুতন হাটে ঔষধের ব্যবসা করতেন। ব্যবসা করতে গিয়ে তিনি বেশ কিছু টাকার দেনা হয়ে পড়েন। দেনা পরিশোধ করতে না পারায় বেশ কিছুদিন তিনি মানসিক চাপের মধ্যে ছিলেন বলে তার স্ত্রী পাপিয়া বেগম জানান। তিনি আরও জানান, তার স্বামীর ঔষধের দোকানে বসে নিয়মিত রোগী দেখতেন বাগরহাটের খানপুর গ্রামের আবুল কালাম নামের একজন গ্রাম্য ডাক্তার। তিনি আমার স্বামীর দোকানের ঔষধ বিক্রি করে ৬৫ হাজার টাকা নিয়েছেন। এছাড়া এলাকার মেহেদী নামের একজন আমার স্বামীর কাছ ৮ হাজার টাকা পাবে শোনা গেলেও তিনি এখন বলছেন ৮০ হাজার টাকা পাবেন। আদাঘাটের তানজিমাত নামের আরও একব্যক্তি ৯ হাজার টাকা পাবেন এমন দাবি করে তিনি দোকানে গিয়ে টাকা পরিশোধের সময় বেধে দেন। বেধে দেয়া সময়ের মধ্যে টাকা পরিশাধ না করলে তাকে ন্যাংটা করে বাজারে ঘোরাবেন বলে হুমকি দেন। পাপিয়ার দাবি পাওনাদারদের মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে তার স্বামী আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। আর এরজন্য ওই তিন ব্যক্তি দায়ী। তিনি তাদের শাস্তির দাবি করেন।

নাম প্রকাশ না করে স্থানীয় লোকজন বলেন, দেনা পাওনা নিয়ে সফিকের শ্বশুর বাড়ির লোকজনের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল। সফিক যেদিন আত্মহত্যা করে সেদিন তার এক শ্যালক তাকে মারধর করে পুকুরে ফেলে দেয়। এরপর সফিক দোকানে আশার সময় সে হাতে রশি নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন বলে তারা দাবি করেন। পরবর্তীতে তিনি দোকানে এসে বিকাল পৌন ৫ টায় দোকানের ভিতরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।

তার স্ত্রী ও শ্যালকরা বলেন, তাকে মারধর করার প্রশ্ন ওঠেনা। সে আমাদের সবার প্রিয় ছিল। তাকে আমরা অনেক ভালোবাসতাম। সোনাকুড় বাজারে আমাদের দোকান নিয়ে একটা পক্ষের সাথে দ্বন্দ্ব ছিল। আইনি লড়াই করে সেই দোকান আমাদের মায়ের নামে রেকর্ড করেছি। এজন্য কিছু লোক আমাদের বিরুদ্ধে অপবাদ দিচ্ছে।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আবুল কালাম বলেন, আমার কাছে সে কোন টাকা পাবে না। সে আমার ও আমার বাবার কাছে হাতে পায়ে ধরে টাকা ধার চেয়েছিল। গত তিন মাস তার দোকানে বসতাম না। তবে সে দেনার দায়ে মানসিক সমস্যায় ছিল বলে তিনি জানান। মেহেদী বলেন, আমি টাকা পাবো। তবে দেখে বলতে হবে কত টাকা পাবো। অভিযুক্ত তানজিমাতের সাথে যোগাযোগ করতে না পারায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

উল্লখ্য, গত ১ অক্টোবর রবিবার সোনাকুড় নুতন হাটের ঔষধ ব্যবসায়ী ঘর জামাই সফিক গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে। এ ঘটনার পর রামপাল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দিন রাতে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গ পাঠায়। এ ব্যপারে রামপাল থানায় একটা ইউডি মামলা হয়েছে।

খুলনা গেজেট/ টি আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!