হাটহাজারি মাদ্রাসা পরিচালনার জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট নতুন নেতৃত্ব ঘোষণা করা হয়েছে। মাদ্রাসাটি চলবে শুরা কমিটির ৩ সদস্যের সমন্বয়ে । এই তিন জন হলেন, হাটহাজারী মাদরাসার প্রধান মুফতি মুফতী আবদুস সালাম, বর্তমান সহকারী পরিচালক মাওলানা শেখ আহমদ ও মাওলানা ইয়াহইয়া। এছাড়া মাদ্রাসার সাবেক সহকারী পরিচালক মাওলানা জুনায়েদ বাবুনগরীকে মাদ্রাসাটির প্রধান শায়খুল হাদীস ও নাজিমে তালিমাতের (শিক্ষা পরিচালক) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে মাদ্রাসাটির শূরা কমিটি এই সিদ্ধান্ত নেয়।
আল্লামা শাহ আহমেদ শফী শুক্রবার (১৮ই সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ১০৪ বছর। আল্লামা শফীর জানাজার পর মাদ্রাসার শুরা কমিটির বৈঠকে মাদ্রাসা পরিচালনার জন্য তিনজনকে নির্বাচন করা হয়।
গত ১৭ জুন জুনায়েদ বাবুনগরীকে সরিয়ে শেখ আহমদকে সহকারী পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। আর সহকারী শিক্ষা পরিচালকের পদে ছিলেন আহমদ শফীর ছোট ছেলে আনাস মাদানি। ছাত্রদের বিক্ষোভের মুখে গত বৃহস্পতিবার আনাস মাদানিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে শূরা কমিটির সদস্য মাওলানা সালাউদ্দীন নানুপুরী রাতে সাংবাদিকদের বলেন, আগামী শূরা কমিটি পর্যন্ত মাদ্রাসার তিনজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষক মাদ্রাসা পরিচালনা করবেন। এছাড়া শিক্ষা পরিচালক করা হয়েছে জুনায়েদ বাবুনগরীকে। সহকারী শিক্ষা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন মাওলানা শুয়াইব। প্রধান শায়খুল হাদীস করা হয়েছে জুনায়েদ বাবুনগরীকে।
শুরা কমিটির সভায় মাদ্রাসার মহাপরিচালক নির্ধারণ করা হয়নি। ছয় মাস পর পরবর্তী শূরা কমিটির সভায় মহাপরিচালক নির্ধারণ করা হবে বলে জানা গেছে।
এর আগে শনিবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে প্রিয় প্রতিষ্ঠান আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে এর সদ্যসাবেক মহাপরিচালক, বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা আহমদ শফীর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রামসহ দেশের দূর-দূরান্ত থেকে লাখ লাখ মানুষ এই জানাজায় অংশ নিয়ে তাঁদের বড় হুজুরের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া করেন। পরে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণেই তাঁকে দাফন করা হয়।
দাফন সম্পন্ন হওয়ার পর বিকেল ৪টায় মাদ্রাসায় বৈঠকে বসেন শূরা কমিটির সদস্যরা। বৈঠক শেষ হয় রাত ৮টায়। এতে সভাপতিত্ব করেন মাওলানা নোমান ফয়েজী। শূরা কমিটির বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুফতি নূর আহমদ, শেখ আহমদ, মাওলানা শুয়াইব, ওমর ফারুক, মাওলানা ফোরকান আহমদ, মাওলানা আশফাক আলী, মাওলানা আহমেদ দিদার প্রমুখ।
হেফাজতে ইসলামের আমির কে হবেন এমন প্রশ্নের জবাবে জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, ‘এটা তো আমি বলতে পারব না, এটা আল্লাহ তায়ালা জানেন। তবে আমরা চেষ্টা করব উনার আদর্শ বাস্তবায়ন করার। সেটা হাটহাজারী মাদ্রাসা ও হেফাজতে ইসলামের ব্যাপারেও। উনি হেফাজতের আমির ছিলেন। এখন কাউন্সিল হবে, কাউন্সিলে নির্ধারণ করা হবে কে হেফাজতে ইসলামের আমির হবেন। এককভাবে কেউ ঠিক করতে পারবে না।’
‘আর মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্ব তিনি জীবিত থাকাকালীন লিখে গেছেন, মাদ্রাসার শূরা কমিটি মাদ্রাসা পরিচালনা করবে। মাদ্রাসার শূরা কমিটি নির্ধারণ করবে মাদ্রাসার মহাপরিচালক কে হবেন।’ বলছিলেন বাবুনগরী।
খুলনা গেজেট / এমএম