চার মাসের পরিচর্যা শেষে এখন ঝিনাইদহের মাঠে মাঠে পেঁয়াজ তোলার ধুম পড়েছে। সকাল থেকেই জেলার বিভিন্ন উপজেলার মাঠে মাঠে বেড়েছে কৃষকের ব্যস্ততা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকা আর পরিমিত পরিচর্যার কারণে এবার ভালো ফলন পেয়েছেন এ অঞ্চলের কৃষকেরা। সেই সাথে বাজারে দাম ভালো পেয়ে এবারও লাভের মুখ দেখবেন তারা।
ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য মতে, চলতি রবি মৌসুমের ঝিনাইদহ জেলায় ১০ হাজার ৪৭২ হেক্টরে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। এবার পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৩৫ হাজার ৭৫০ মেট্টিক টন। এ বছর জেলায় লালতীর, তাহেরপুরী, লালতীর কিং, হাইব্রিডসহ নানা জাতের পেঁয়াজের আবাদ করা হয়েছে। বিঘা প্রতি জাত ভেদে ৭০ থেকে ৯০ মন পেঁয়াজের ফলন পাচ্ছেন তারা।
ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার হিতামপুর গ্রামের কৃষক রাশেদুল আলম বলেন, আমি ৩ বিঘা জমিতে পেঁয়াজের আবাদ করিছি। জমিতি হাইব্রিড জাতের পিয়াজ লাগাইছি। এখন তোলা শুরু করিচি। ফলন মোটামুটি ৮০ মন করে হচ্ছে। বাজারে দামও ভালো যাচ্ছে। এতে খুশি আমরা।
শৈলকুপা উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের পেঁয়াজচাষী রুহুল আমিন বলেন, এবার পিয়াজের ফলন ভালো। গতবার এক বিঘে জমিতি ৬০ মন পাইছিলাম। এবার ৮০ মন করে পাচ্চি। বাজারে যে দাম বর্তমানে যাচ্চে তাতে এবারও লাভ হবি আশা করছি।
একই উপজেলার নাগপাড়া গ্রামের চাষি সেলিম মন্ডল বলেন, হাইব্রিড পেঁয়াজ ১২০ মন পর্যন্ত ফলন হচ্ছে। একুন তো দাম ভালো। কিন্তু কয়দিন পর যদি দাম কমে যায় তাহলে লোকসান হবি। আগামী ৪ টা মাস বিদেশ থেকে যদি পিয়াজ আমদানি না করে সরকার তাহলি কৃষক লাভবান হবে।
এদিকে জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি মণ পেয়াজ প্রকারভেদে ১ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১২শ’ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ জেলার অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা বিজয় কৃষ্ণ হালদার জানান, এ বছর জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ১ হাজার ৮২২ হেক্টর বেশি আবাদ করা হয়েছে। প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ না থাকায় এবার পেঁয়াজের বাম্পার ফলনের আশা করা যাচ্ছে। এ অবস্থায় ভালো দাম পেতে পরিপক্ক হওয়ার পর মাঠ থেকে পেঁয়াজ তুলে তা কিছুদিন সংরক্ষণ করে বিক্রি করলে কৃষক লাভবান হবেন।
খুলনা গেজেট/এনএম