মাগুরায় বেড়েছে শিশুদের ঠান্ডাজনিত রোগ নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ার প্রকোপ। প্রতিদিন এই দুই রোগে আক্রান্ত হয়ে গড়ে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ জন রোগী আসছে মাগুরা ২৫০ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে। তবে মাগুরা ২৫০ হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে শয্যার সংখ্যা মাত্র ২০টি। এতে হাসপাতালেও বাড়ছে ভিড়।
বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) সন্ধ্যা পর্যন্ত ১১৬ জন শিশু এই ওয়ার্ডে ভর্তি রয়েছে। এতে নির্ধারিত শয্যায় জায়গা না হওয়ায় অনেক শিশুর পরিবারই আশ্রয় নিচ্ছেন মেঝে ও বারান্দায়।
মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, ঠান্ডাজনিত রোগ ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অনেক শিশু গাদাগাদি করে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন। এমনকি এক বেডে দুইজন শুয়েও চিকিৎসা দিতে দেখা গেছে।
সদরের দোড়ামতনা গ্রামে থেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশু সন্তানকে নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন ফাতেমা বেগম। তিনি বলেন, হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি চার দিন হলো। ডাক্তার এসে চিকিৎসা দিচ্ছেন। তবে সব ধরনের ওষুধ বাইরে থেকে কিনে আনতে হচ্ছে। এতে আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যদি কিছু ওষুধের ব্যবস্থা করে দেয় তাহলে আমাদের উপকার হয়।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, নামে ২৫০ শয্যা হাসপাতাল হলেও এটি এখনো খাতা-কলমেই রয়েছে। শিশু ওয়ার্ডে শিশু রোগীর জন্য ডাক্তার রয়েছে তিন জন। এছাড়া গত ১ নভেম্বর থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত শিশু ওয়ার্ডে ঠান্ডা ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে দুইজন শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
এ বিষয়ে কথা হলে মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার তানভির রহমান বলেন, এখন শীতের শুরুতে শিশুদের ঠান্ডাজনিত রোগ বেশি দেখা দিচ্ছে। সারা বছর কম-বেশি এই রোগ দেখা যায়। তবে এই শীতের শুরুতে কুয়াশা যখন পড়ে অনেক সময় শিশুর মা সচেতন থাকেন না, যে কারণে শিশু ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়।
এই সময়ে ধুলা বেশি হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ধুলার ফলে জীবাণু এক বাচ্চা থেকে অন্য বাচ্চার মধ্যে সংক্রমিত হয়। শীতের শুরুতে বিভিন্ন জলাশয়ে পানির স্রোত কমে যায়। যার ফলে জীবাণুর ধরন পাল্টে যায়। খুব শ্বাসকষ্ট হলে নেবুলাইজার করা যেতে পারে। আর ডায়রিয়ার ক্ষেত্রে বাচ্চাকে খাবার স্যালাইন খাওয়ানোর পাশাপাশি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মেনে চললে শিশুর ঠান্ডাজনিত রোগ থেকে মুক্ত হওয়া সম্ভব।
খুলনা গেজেট/ টিএ