মাউন্ট মঙ্গানুই’র শুষ্ক উইকেটে দিনের শুরুটা ছিল খুব চ্যালেঞ্জিং। সে চ্যালেঞ্জ সামলাতে গিয়ে বাংলাদেশও হারায় জোড়া উইকেট। কিন্তু, সময়ের সঙ্গে সে চিত্র বদলেছে। পঞ্চম উইকেটে চমৎকার জুটি উপহার দেন লিটন দাস ও মুমিনুল হক। দুজনেই সেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়ে ফিরলেও এ জুটিতেই নিউজিল্যান্ডের ইনিংস টপকে লিড পেয়ে যায় বাংলাদেশ। কিউই দুর্গে লিড পেয়ে আরেকটি ঝলমলে দিন পার করল মুমিনুল হকের দল।
আজ সোমবার ৬ উইকেটে ৪০১ রান নিয়ে টেস্টের তৃতীয় দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ। ৭৩ রানের লিড নিয়ে আগামীকাল মঙ্গলবার চতুর্থ দিন শুরু করবে মুমিনুল হকের দল। আজ দিন শেষে উইকেটে ২০ রানে অপরাজিত ছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তাঁর সঙ্গে ১১ রানে ব্যাট করছিলেন ইয়াসির আলী রাব্বি।।
লে ওভালে ১৫৩ রানে পিছিয়ে থেকে আজ তৃতীয় দিন শুরু করে বাংলাদেশ। তবে, শুরুটা ভালো হয়নি। দিনের তৃতীয় ওভারেই থিতু হয়ে যাওয়া মাহমুদুলকে হারায় বাংলাদেশ। নিল ওয়্যাগনারের বাইরের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে তাড়া করতে গিয়ে গালিতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ২২৮ বল খেলে ৭৮ রান করে থামলেন মাহমুদুল। দেশের বাইরে নিজের প্রথম টেস্ট ইনিংসে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটার আর এত বেশি বল খেলতে পারেননি।
এরপর কিছুক্ষণ মুমিনুলকে সঙ্গ দেন মুশফিক। দুজনের মন্থর ব্যাটিংয়ে শুরুটা পার করে বাংলাদেশ। প্রথম ঘণ্টায় ১৪ ওভারে বাংলাদেশ নিতে পারে ১৯ রান। কিন্তু, এ জুটি পুরো সেশন স্থায়ী হলো না। বোলিংয়ে এসে এ জুটি ভাঙেন ট্রেন্ট বোল্ট। বাঁ-হাতি পেসারের রাউন্ড দ্য উইকেটে করা বলে বোল্ড হন মুশফিক। ৫৩ বল খেলে ১২ রান করেন তিনি।
জোড়া উইকেট হারানোর পর কিছুটা চাপে পড়ে বাংলাদেশ। তবে, সে চাপ ভালোভাবেই সামলান মুমিনুল ও লিটন দাস। উইকেটে এসেই বেশ আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিং করেন লিটন। দুই ব্যাটারে চড়ে দ্বিতীয় সেশনে দারুণভাবে পার করে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সেশনে দুজন মিলে স্কোরবোর্ডে ২৬ ওভারে যোগ করেন ৮৭ রান। এ সেশনেই হাফসেঞ্চুরি পেয়ে যান লিটন-মুমিনুল।
তবে, খুব ধীর গতির ব্যাটিং করেন মুমিনুল। ১৪৭ বলে হাফসেঞ্চুরিতে পা রাখেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। যেটা তাঁর ক্যারিয়ারের সবচেয়ে ধীরগতির হাফসেঞ্চুরি। তবে, দুজনের জুটিতে নিউজিল্যান্ডকে টপকে লিডের দেখা পেয়ে যায় বাংলাদেশ। লিড এনে দিয়ে দুজনই হাঁটছিলেন সেঞ্চুরির পথে। কিন্তু, সেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়ে ফিরতে হলো দুজনকেই।
শেষ সেশনে বোল্টের এলবির ফাঁদে পড়ে ৮৮ রানে সাজঘরে ফেরেন মুমিনুল। এ রান তুলতে তিনি খেলেন ২৪৪ বল, উইকেটে ছিলেন ৩৭০ মিনিট। খেলেছেন ১২টি বাউন্ডারি। তাঁর বিদায়ে ভাঙে ১৫৮ রানের জুটি। মুমিনুল ফেরার সঙ্গে আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরে লিটনেরও। তিনিও ফিরে যান ৮৬ রানে। তাঁর ইনিংস সাজানো ছিল ১০টি বাউন্ডারি দিয়ে।
লিটন-মুমিনুলের বিদায়ের পর দিনের বাকি অংশে আর উইকেট পড়তে দেননি ইয়াসির আলী ও মেহেদী হাসান মিরাজ। দুজনের ব্যাটে চড়ে দিনের বাকি অংশ পার করে বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর : (তৃতীয় দিন শেষে)
নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস : ১০৮.১ ওভারে ৩২৮ (ল্যাথাম ১, ইয়ং ৫২, কনওয়ে ১২২, টেইলর ৩১, টম ব্লান্ডেল ১১, নিকোলস ৭৫, রাচিন ৪, জেমিসন ৬, সাউদি ৬, ওয়্যাগনার ০, বোল্ট ৯*; তাসকিন ২৬-৭-৭৭-০, শরিফুল ২৬-৭-৬৯-৩, ইবাদত ১৮-৩-৭৫-১, মিরাজ ৩২-৯-৮৬-৩, শান্ত ২-০-১০-০, মুমিনুল ৪.১-০-৬-২)।
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : (আগের দিন ১৭৫/২) ৪০১/৬ (সাদমান ২২, মাহমুদুল ৭৮, শান্ত ৬৪, মুমিনুল ৮৮, মুশফিক ১২, লিটন ৮৬, ইয়াসির ১১*, মিরাজ ২০*; সাউদি ৩২-৪-৯৪-০, বোল্ট ৩০-১১-৬১-৩, জেমিসন ৩০-৯-৭২-০, ওয়্যাগনার ৩৮-৯-৯৮-৩, রবীন্দ্র ২৬-৪-৬৪-০)।
খুলনা গেজেট/এনএম