নারায়ণগঞ্জ শহরের ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকায় মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে ফতুল্লা থানায় মামলা করেছে পুলিশ। ফতুল্লা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে গতকাল শনিবার রাতে এ মামলা করেন।
মামলায় বলা হয়েছে, এ বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ এবং মসজিদ নির্মাণে অবহেলাজনিত কারণ রয়েছে।
এদিকে নারাণগঞ্জের মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ মোহাম্মদ আলী মাস্টার (৫৫), জুলহাস (৩৫) ও শামীম হাসান (৪৫) নামের আরও তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৪ জনে। রবিবার সকাল এবং শনিবার রাতে শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিন জনের মৃত্যু হয়। ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. পার্থ শংকর পাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে রাত সাড়ে ৮টার দিকে ওই মসজিদের ইমাম আব্দুল মালেকসহ আরও একজনের মৃত্যু হয়। এর আগে সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাহারউদ্দিন (৫৫) নামে একজনের মৃত্যু হয়।
মৃতরা হলেন- মসজিদের ইমাম আবদুল মালেক (৬০), মুয়াজ্জিন দেলোয়ার হোসেন (৪৮), মোহাম্মদ আলী মাস্টার (৫৫), জুলহাস (৩৫), শামীম হাসান (৪৫), সাব্বির (২১), মোস্তফা কামাল (৩৪), রিফাত (১৮), জুবায়ের (১৮), কুদ্দুস ব্যাপারী (৭০), হুমায়ুন কবীর (৭০), ইব্রাহিম (৪৩), জুনায়েদ (১৭), জামাল (৪০), জুয়েল (০৭), রাশেদ (৩০), জয়নাল (৫০), মাইনউদ্দিন (১২), কাঞ্চন হাওলাদার (৫০), নয়ন (২৭), রাসেল (৩৪), বাহাউদ্দিন (৬২) ও নিজাম (৪০), নাদিম (৪৫)।
এ ঘটনায় শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১২টার দিকে প্রথম মৃত্যু হয় জুয়েল নামের এক শিশুর। এরপর রাতে, সকালে ও বিকেলে অন্যদের মৃত্যু হয়। মৃতের তালিকায় রয়েছেন মসজিদের মুয়াজ্জিনও।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদের বিস্ফোরণ হয়। মসজিদের নিচে গ্যাসের লাইনে অসংখ্য লিকেজ থেকে গ্যাস বের হয়ে এই বিস্ফোরণ ঘটে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা।
ভর্তির পর ডা. সামন্ত লাল সেন জানিয়েছিলেন, এ পর্যন্ত ৩৭ মুসল্লিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের সবারই ডিপ বার্ন রয়েছে। শতাংশের হিসেবে কোন রোগীর কতটুকু বার্ন হয়েছে তা তাৎক্ষণিক বলা যাচ্ছে না। প্রাথমিকভাবে বলা যায়, কেউ শঙ্কামুক্ত নন।
এ ঘটনায় তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর মধ্যে ফায়ার সার্ভিস একটি, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ একটি ও জেলা প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
খুলনা গেজেট /এমএম