বিস্ফোরণের ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের মসজিদের সামনে মাটি খোঁড়া হচ্ছে। গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ হয়েছে কি-না তা নিশ্চিত হতে মাটি খোঁড়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। সোমবার সকাল থেকে মসজিদের সামনের সড়কে মাটি খোঁড়ার জন্য তিতাসের ৪০ থেকে ৫০ শ্রমিক কাজ শুরু করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ৭টার দিকে পশ্চিম তল্লা বায়তুস সালাত জামের মসজিদের সামনের সড়কে মাটি খোঁড়ার জন্য শ্রমিকরা শাবল, ছেনি, কোদাল, টুকরিসহ অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে কাজ শুরু করেন। মসজিদের পূর্ব দিকের কোনায়, পূর্ব দিকের সামনের সড়ক ও উত্তর দিকের দুটি স্থানে আরসিসি কেটে তিতাস গ্যাসের পাইপলাইন শনাক্তের চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা।
এ বিষয়ে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড নারায়ণগঞ্জ অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মফিজুল ইসলাম বলেন, মাটি খোঁড়ার কাজ শুরু হয়েছে। তিতাসের নিযুক্ত অর্ধশতাধিক শ্রমিক কাজ করছেন। তিতাসের কোনো পুরোনো পাইপলাইন আছে কি-না, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর আগে রোববার সকালে তিতাসের শ্রমিকেরা ঘটনাস্থলে মাটি খোঁড়ার জন্য গেলেও তাদের সেখান থেকে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। এদিকে বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকে পশ্চিম তল্লা ও আশপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। তাদের লাকড়ি দিয়ে মাটির চুলায়, কেরোসিনের স্টোভ ও গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করে রান্নার কাজ সারতে হচ্ছে।
গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকায় বায়তুস সালাত জামে মসজিদে বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ সময় অর্ধশতাধিক মুসল্লি দগ্ধ হন। সোমবার পর্যন্ত ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিস্ফোরণে মসজিদের ৬টি এসি পুড়ে গেছে। জানালার কাচ বিস্ফোরণে উড়ে গেছে। ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ জানিয়েছে, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট ও পাইপলাইনের লিকেজ থেকে গ্যাস জমে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এই ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, জেলা প্রশাসন, তিতাস গ্যাস, ডিপিডিসি, সিটি করপোরেশন পৃথক পাঁচটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। তদন্ত কমিটি তাদের তদন্তকাজ শুরু করেছে। সোমবার জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এ বিষয়ে গণশুনানির আয়োজন করেছে। সকাল ১০টা থেকে শুরু হওয়া গণশুনানি বিকেল ৪টায় শেষ হবে।