হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর মেয়ে ফাতিমা (রাঃ) কে নিয়ে নির্মিত চলচিত্র ‘দ্যা লেডি অব হেভেন’ নিষিদ্ধ করা হয়েছে মরক্কোতে। দেশটির অভিযোগ, চলচিত্রটিতে ‘ইসলামের প্রতিষ্ঠিত ইতিহাসকে নির্লজ্জ্বভাবে বিকৃত’ করা হয়েছে। এরইমধ্যে আন্দোলনের মুখে সিনেমাটির প্রচার বন্ধ রেখেছে বৃটিশভিত্তিক সিনেমা চেইন সিনেওয়ার্ল্ড। মরক্কোর সিনেমাটোগ্রাফিক সেন্টার বা সিসিএম এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মরক্কোর কোনো সিনেমা হলে এই চলচিত্র প্রদর্শনের অনুমতি দেয়া হবে না। এ খবর দিয়েছে স্কাই নিউজ।
খবরে জানানো হয়, মরক্কোর উলামা কাউন্সিল থেকেও এই চলচিত্রের তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। এই চলচিত্রটি লিখেছেন ইসলাম ধর্ম প্রচারকারী শেখ ইয়াসির আল-হাবিব। তবে তিনি ‘কট্টোর’ শিয়া মতবাদ প্রচার করায় তার কুয়েতি নাগরিকত্ব বাতিল করা হয়েছে। এক বিবৃতিতে উলামা কাউন্সিল জানায়, সিনেমায় মহানবীকে চিত্রায়ন একটি জঘন্য কাজ এবং মুসলিমদের কাছে তা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। একইসঙ্গে এই চলচিত্রে ইসলামের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে বলেও অভিযোগ তোলা হয় ওই বিবৃতিতে।
ফাতিমা (রা) এর জীবনী নিয়ে এটাই প্রথম কোনো চলচিত্র। ইসলামি ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী, নবীকে কোনো সিনেমায় চিত্রায়ন বড় পর্যায়ের অপরাধ মনে করা হয়।
যদিও চলচিত্রটির নির্মাতারা জানিয়েছেন, তারা কোনো ব্যাক্তিকে দিয়ে ‘পবিত্র চরিত্র’গুলোতে অভিনয় করাননি। বরঞ্চ সিজিআই, আলো এবং ভিজ্যুয়াল ইফেক্টের মাধ্যমে সেটি করা হয়েছে। যদিও তাতে মুসলিমরা আশ্বস্ত হতে পারছেন না।
এটি সামনে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা সৃষ্টি করতে পারে, এমন আশঙ্কাও করা হচ্ছে। মুসলিমদের ওয়েবসাইট ফাইভপিলার্সের এডিটর রোশান এম সালিহ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এই চলচিত্র সহিংস বিক্ষোভ সৃষ্টি করতে পারে। তিনি টুইটারে লিখেন, লেডি অব হিভেন নিষিদ্ধ করতে হবে। মুসলিমরা নবী এবং সাহাবীদের এতটাই ভালোবাসে যে এই ধরনের উস্কানি কিছু পথভ্রষ্টকে সন্ত্রাসী কার্যক্রমে উৎসাহিত করতে পারে।
এর আগে গত ৩রা জুন বৃটেনে বিতর্কিত এই চলচ্চিত্র মুক্তি পায়। পরে সিনেমা হলের বাইরে মুসলিমরা বড় ধরনের বিক্ষোভ করেন। মুসলিমদের তীব্র আপত্তির মুখে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সিনেমা চেইন প্রতিষ্ঠান সিনেওয়ার্ল্ড চলচ্চিত্রটির সব প্রদর্শনী বাতিল করতে বাধ্য হয়। মিসর, পাকিস্তান, ইরান এবং ইরাকসহ অনেক মুসলিম দেশ চলচ্চিত্রটি ইসলাম ধর্মের অবমাননা আখ্যা দিয়ে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। সিনেওয়ার্ল্ড জানিয়েছে, কর্মী ও দর্শকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই তারা প্রদর্শনী বন্ধ করেছে।
খুলনা গেজেট/ এস আই