কসবা সাউথ ক্যালকাটা ল’ কলেজে তৃণমূল দুস্কৃতিদের দ্বারা ছাত্রী গণধর্ষনের ঘটনায় কলকাতা জেলা বামফ্রন্টের ডাকে মিছিল থেকে মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির পদত্যাগের দাবি উঠলো। পাশাপাশি রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির জন্য সর্বস্তরের মানুষকে তীব্র লড়াই-আন্দোলনে সামিল হওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
এদিন কসব বিজন সেতুর শেষ দিক পোস্ট অফিস মোড়ার থেকে বিশাল মিছিল কসবা থানার দিকে যায়। সেখানে থানা ঘেরাও করা হয় ও একটি সভাও হয়। মেঘ-বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগকে উপেক্ষা করে এদিন মিছিল কার্যত জনসমুদ্রে পরিণত হয়। মিছিল থেকে আরো যে দাবিগুলো তোলা হয়, সেগুলি হল, অবিলম্বে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, গণধর্ষনের ঘটনায় কলেজ থেকে প্রমাণ লোপাটের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করতে হবে।
শনিবার (২৮ জুন) বিজনসেতু ও কসবা পোষ্ট অফিস মোড় থেকে যে বিশাল মিছিল বের হয় তাতে পা মেলান সিপিআই কলকাতা জেলা সম্পাদক প্রবীর দেব, দলের কলকাতা জেলা নেতা নন্দ সেনগুপ্ত, ডা: তমোনাশ ভট্টাচার্য ও সুভাষ দাস, সিপিআইএম কলকাতা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যগণ তরুণ ব্যানার্জি, দেবাশিস রায় ও প্রতীক দাশগুপ্ত , আর এসপির জেলা সম্পাদক দেবাশিস মুখোপাধ্যায় ও দলের নেতা দীপক সাহা, ফরোয়ার্ড ব্লকের কলকাতা জেলা সম্পাদক জীবন সাহা, মার্কসবাদী ফরোয়ার্ড ব্লকের আশিস চক্রবর্তী। এছাড়া মিছিলে পা মেলান, কলকাতা পুরসভার পিএসি-র চেয়ারপার্সন মধুছন্দা দেব, পশ্চিমবঙ্গ মহিলা সমিতির নেত্রী মহুয়া মণ্ডল, নিখিলবঙ্গ মহিলা সঙ্ঘের সর্বাণী ভট্টাচার্য, অভয়া মঞ্চের পক্ষে স্বপন মণ্ডল, এআইএস এফ নেতা আইনজীবী রাজনীল মুখোপাধ্যায়।
এদিনের মিছিলে সর্বস্তরের মানুষ সামিল হন। মিছিল কে এন সেন রোড ধরে কসবা থানার কাছে পৌঁছায়। সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সভা হয়।
সভায় কলকাতা জেলা বামফ্রন্ট নেতৃবৃন্দ বলেন, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে শহর ও গ্রামাঞ্চলে তৃণমূলের গুণ্ডারাজ, সিণ্ডিকেট রাজ ও থ্রেট কালচার শুরু হয়েছে। আর এই গুণ্ডারাজের শিকার কালিগঞ্জের নিষ্পাপ কন্যাশিশু তামান্না খাতুন, তিলজলার রিক্সাওয়ালা সেকেন্দার সেখ। একইভাবে ল’ কলেজের মতো ক্যাম্পাসে গণধর্ষনের শিকার আইনের ছাত্রীর। এই থ্রেট কালচারের শিকার আর জি করের তিলোত্তমা তথা অভয়া। আজো ন্যায়বিচার হয়নি। আজ গোটা পশ্চিমবঙ্গ আতঙ্কিত ও ভীতসন্ত্রস্ত। আজ একজন অভিভাবক তার কন্যা সন্তানের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগে। সে কলেজে গিয়ে আর ফিরবে কি না তা নিয়ে চিন্তিত থাকেন মা-বাবা। এই পশ্চিমবঙ্গ চিটফাণ্ড কেলেঙ্কারির পশ্চিমবঙ্গ। এই পশ্চিমবঙ্গ পাচার ও কয়লা কেলেঙ্কারীর পশ্চিমবঙ্গ। এই পশ্চিমবঙ্গ পিসি-ভাইপোর চৌর্যবৃত্তির কলকাতা। এই পশ্চিমবঙ্গে মানুষের নিরাপত্তা নেই। তাই পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে নিরাপদ হতে গেলে তাদেরকেই রাস্তায় নামতে হবে। আগামীদিনে বামেদের নেতৃত্বে পশ্চিমবঙ্গে সর্বত্র গণ-আন্দোলন অপেক্ষা করছে।
খুলনা গেজেট/এএজে