মণিরামপুরে বহুল আলোচিত সেই কসাই আলমগীর সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে এবার চোরাই ও মরা গরুর মাংসের রমরমা পাইকারী ব্যবসার অভিযোগ উঠেছে। গভীর রাতে মরা গরু এনে কসাইখানার পাশে জবাই দেওয়ার সময় জনতা ধাওয়া দিয়ে আব্দুল্লাহ নামে এক ব্যক্তিকে আটক করে পুলিশে দেয়। এসময় সিন্ডিকেট প্রধান আলমগীর কসাইসহ অন্যরা পালিয়ে যায়।
নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নির্দেশে (১ মার্চ বুধবার) সকালে স্থানীয়রা ওই মরা গরুটি মাটিচাপা দেয়। তবে অভিযোগ রয়েছে জনতার হাতে একজন আটক হলেও অজ্ঞাত কারনে পুলিশ তাকে ছেড়ে দিয়েছে। ফলে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে জনমনে অসন্তোষের পাশাপাশি নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কুয়াদা বাজারে কসাই আলমগীর ও তার ছোটভাই হাসানের নেতৃত্বে একটি সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন এলাকা থেকে কমমূল্যে চোরাই, রোগাক্রান্ত, গর্ভবতী ও মরা গরু কিনে বিক্রী করে আসছিল। এ কর্মকান্ড করতে গিয়ে আলমগীর ইতিপূর্বে যশোর কোতয়ালী থানা পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। সেখান থেকে মুক্ত হবার পর এলাকাবাসীর চাপের মুখে আলমগীর কুয়াদা বাজার থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নেয়। পরে সে মণিরামপুর পৌর শহরের স্বরুপদাহ এলাকায় শফিউল্লাহ নামে এক কৃষকের মেয়েকে দ্বিতীয় বিয়ে করে ঘরজামাই হিসেবে বসবাসের পাশাপাশি বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজসহ পৌরশহরে পুনরায় সিন্ডিকেট গড়ে তোলে।
কসাই আলমগীরের সিন্ডিকেটের সহযোগী হিসেবে কাজ করে আসছে সুমন, বাটুল হোসেনসহ ১০/১২ জন। (২৮ ফেব্র“য়ারি মঙ্গলবার) গভীর রাতে গাংড়া এলাকা থেকে একটি মরা গরু ভ্যানে করে নিয়ে আসা হয় পৌরশহরের জয়নগর এলাকায় কসাইখানার পাশে একটি বাগানে।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় কামরুজ্জামান ও গৃহবধু যমুনা বেগমসহ অনেকেই জানান, গভীররাতে বাগানের সামনে কসাই আলমগীর ও সুমনকে দেখে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। এ সময় তারা বাগানের দিকে এগিয়ে গেলে কসাই আলমগীর ও সুমন হোসেনসহ অন্যরা পালিয়ে যায়। সেখান থেকে ভ্যানে মরাগরুসহ আটক করা হয় আব্দুল্লাহ নামে এক যুবককে। পরে খবর পেয়ে থানা থেকে এসআই আল এমরান গিয়ে জনতার কাছ থেকে আটক আব্দুল্লাহকে উদ্ধার করে।
এসআই আল এমরান বলেন, কাসই আলমগীর ও তার সহযোগী সুমনসহ অন্যদের আটকের জন্য বিভিন্ন্ এলাকায় অভিযান চালানো হচ্ছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আটক আব্দুল্লাহ ভ্যান চালক হওয়ায় তাকে স্থানীয় পৌর কাউন্সিলরের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, কসাই আলমগীরসহ তার সিন্ডিকেটের সদস্যরা ইতিপূর্বে কয়েকবার এমন কর্মকান্ড ঘটিয়ে ধরা খাওয়ার পর মোটা অংকের টাকা দিয়ে ছাড়া পায়। ফলে এবারও আশঙ্কা করা হচ্ছে মানুষের জন্য অখাদ্য মরা গরুর মাংশের পাইকারী ব্যবসায়ী আলমগীরসহ তার সিন্ডিকেটের সদস্যরা একই ভাবে পার পেয়ে যেতে পারে।