খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ১৯ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  রাজধানীর উত্তরা থেকে সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম গ্রেপ্তার
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০৮৩
  ১৬ ডিসেম্বর ঘিরে কোনো ধরণের হামলার শঙ্কা নেই : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

মণিরামপুরে ডাকাতির ঘটনায় মালামালসহ গ্রেপ্তার ৮

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর

যশোরের মণিরামপুরের কোদলাপাড়ায় মেঘনা বেকারির মালিকের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা ডিবি পুলিশ। গত দু’তিন দিনে অভিযান চালিয়ে খুলনার তেরখাদা, গোপালগঞ্জ ও মাদারিপুর থেকে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়।

সূত্র জানায়, গত ৩০ নভেম্বর রাত ৯টার দিকে আটক ডাকাতদের দু’জনকে সঙ্গে নিয়ে ডাকাতি হওয়া বাড়িতে যায় পুলিশ। পরে তাঁদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ঘটনাস্থলের তিন কিলোমিটার দূরে টেংরামারী বিলের বকুলের মাছের ঘের থেকে ডাকাতি হওয়া দুটি মোবাইল ফোন উদ্ধার হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মণিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান, যশোর ডিবি পুলিশের ওসি রুপন কুমার সরকার, রোহিতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন, ইউপি সদস্য মেহেদী হাসান, রেজাউল ইসলাম প্রমুখ।

গ্রেফতারকৃত ৮ ডাকাতের মধ্যে ৫ জনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন, ঢাকার মিন্টু, মাদারিপুরের লিটন, খুলনার কালু, ঝিনাইদহের কবির ও গোপালগঞ্জের রিকসা চালক সুরুজ।
গ্রেফতারকৃত লিটন স্বীকার করেছেন, একটি চুরির মামলায় তিনি মাদারিপুর জেলে ছিলেন। সেখানে ডাকাতদলের একজনের সাথে তার পরিচয় হয়। এরপর বাইরে এসে তাঁরা ডাকাতির পরিকল্পনা করে। এক পর্যায়ে যশোর রেলস্টেশন এলাকার রিকসা চালক সুরুজের সাথে তার পরিচয় হয়। সুরুজের দেয়া সূত্র ধরে তাঁরা ৭ জন মণিরামপুরের মেঘনা বেকারি মালিক মশিয়ার রহমানের বাড়িতে ডাকাতি করেন।

লিটন বলেন, ৫ দিন আগে গত শুক্রবার রাত ২টায় ডাকাতি করার পর বিল দিয়ে নেমে তাঁরা বকুলের মাছের ঘেরের পাড়ে এসে বিশ্রাম নেন। সেখানে ওই বাড়ি থেকে আনা দুটি মোবাইল তারা ভুল করে ফেলে। তারা ৩৯ হাজার টাকা ও দুটো স্বর্ণের চেইন, একজোড়া কানের দুল ও একটি আংটি নিয়েছি। পরে সর্দার কালুর সহায়তায় খুলনায় একটা দোকানে ১ লাখ ৮ হাজার টাকায় অলঙ্কারগুলো বিক্রি করেছি। এ কাজে আমরা প্রত্যেকে ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা করে ভাগ পেয়েছি।

পুলিশ ও ডাকাতি হওয়া বেকারি মালিক মশিয়ার রহমান জানান, যশোরের একটি দোকান থেকে বেকারির জন্য কেনা মালামাল দীর্ঘদিন রিকসায় করে মেঘনা বেকারিতে আনতেন রেলস্টেশন এলাকার সুরুজ নামে এক চালক। সেই সূত্রে বেকারির মালিকের সাথে তাঁর ভাল জানাশোনা হয়। গত সপ্তাহে বেকারির মালামাল এনে মালিকের রান্না ঘরে তুলে দেয় সুরুজ। এরপর শুক্রবার বিকেলে ডাকাত মন্টু ও লিটনকে রিকসায় করে এনে বেকারিতে ঢোকে সে। সেখান থেকে বেরিয়ে আশপাশের এলাকায় ঘুরে বেড়ায়। এরপর রাতে এসে তাঁরা ডাকাতির ঘটনা ঘটনায়।

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার রাতে মণিরামপুরের কোদলাপাড়ায় মেঘনা বেকারি মালিকের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এসময় ডাকাতরা বাড়ির লোকজনকে বেধে মারপিট করে ৪ লাখ টাকা, ৫ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও দুটি মোবাইল লুট করে। এরপর ডিবি পুলিশ এ ঘটনার তদন্তে নামে। বেকারি মালিক মশিয়ারের দেয়া তথ্যের সূত্র ধরে ঘটনার একদিন পরে সুরুজকে আটক করে ডিবি। এরপর তাঁর দেয়া সূত্র ধরে বাকি ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে ডিবি।

ডিবির ওসি রুপন সরকার বলেন, মন্টু ও লিটন পেশাদার ডাকাত। তাঁরা বৈদ্যুতিক বাল্ব বা লাইট হকারি করে বিক্রির মাধ্যমে ডাকাতির পরিকল্পনা করে। এ দু’জন সুরুজের রিকসায় ঘোরাফেরা করার সময় তাঁর মোবাইল নম্বর নেয়। এরপর তাঁরা একসাথে কয়েকটি স্থানে ডাকাতি করেছে।
ডিবির ওসি বলেন, ১৭ বছর যশোরে থাকার কারণে এ অঞ্চলের সব রাস্তা সুরুজের চেনা। গত শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে সে লিটন ও মন্টুকে নিয়ে মেঘনা বেকারিতে যায়। সুরুজকে আটকের পর তাঁর মোবাইলের কল লিস্ট থেকে এসব তথ্যের প্রমাণ মিলেছে।

ওসি রুপন আরো বলেন, তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা খুলনার তেরখাদা, গোপালগঞ্জ ও মাদারিপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে জড়িত ৮ জনকে গ্রেফতার করেছি।

খুলনা গেজেট/ এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!