মণিরামপুরে স্বামীর মোবাইল ফোনে বিতর্কিত এসএমএস দেখে প্রতিবাদ করায় চুমকি দত্ত (২৩) নামে এক গৃহবধূকে মারপিটের পর শ্বাসরোধে হত্যার পর আত্মহত্যার প্রচার চালাতে সিলিং ফ্যানে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে। তবে শ্বশুর পরিবারের দাবি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়ার জের ধরে সামান্য মারপিটে সে আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনায় পুলিশ প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যার প্ররোচনায় ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে নিহতের স্বামীকে আটক করা হয়। হাসপাতাল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। রবিবার রাত ১২টার দিকে পৌর এলাকার হাকোবা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, আনুমানিক ৮ বছর আগে পৌর শহরের ব্যবসায়ী তরুন চন্দ্রের কন্যা চুমকি লেখাপড়া করা অবস্থায় প্রেমজ সম্পর্কে জড়িয়ে পাশ্ববর্তী হাকোবা গ্রামের ট্রাক ড্রাইভার কৃষ্ণ দত্তের পুত্র মৃত্যুঞ্জয়কে বিয়ে করে। স্বামী বেকার হলেও বছর তিনেক তারা অনেকটা ভালভাবে চলেছে। এরই মধ্যে তাদের কোলজুড়ে জন্ম হয় নিহারিকা নামের একটি কন্যা সন্তান। সন্তান জন্মের পর থেকেই কারণে অকারণে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে অশান্তির পাশাপাশি চুমকি স্বামীর পরিবারে অনেক কষ্টে দিনপাত করেছে।
নিহতের ৫ বছরের শিশু কন্যা নিহারিকা পুলিশ ও গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে বলেছে, ঘটনার দিন তার বাবা তার মাকে অনেক মারপিট করেছে।
চুমকির স্বজনদের অভিযোগ তাকে হত্যার পর আত্মহত্যার প্রচার চালাতে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখা হয়।
এ ব্যাপারে নিহতের শ্বশুর কৃষ্ণ দত্ত দাবি করেন, পারিবারিক কলহে সামান্য মারপিটে তার পুত্রবধূ গলায় ওড়না দিয়ে ফ্যানের সাথে আত্মহত্যা করেছে। বৌমাকে ফ্যান থেকে নামিয়ে ওই রাতেই স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়।
জানতে চাইলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ সুমন নাগ বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু ঘটেছে।
এ ঘটনায় প্রাথমিকভাবে নিহতের স্বামী মৃত্যুঞ্জয়, দেবর আকাশ ও শ্বাশুড়ি চায়না দত্তকে আসামী করে থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনার ধারায় মামলা হয়েছে। যার মামলা নং-২১। মামলার বাদী হয়েছেন নিহতের পিতা তরুন কুমার চন্দ্র।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নাজমুস শাকিব জানান, সোমবার নিহতের মরদেহ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করার পাশাপাশি তার স্বামী মৃত্যুঞ্জয়কে আটক করে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
জানতে চাইলে মণিরামপুর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘চুমকি দত্তকে হত্যা করা হয়েছে নাকি সে আত্মহত্যা করেছে তা ময়নাতদন্ত রিপোর্ট হাতে আসার পর পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
খুলনা গেজেট/এনএম