মণিরামপুরে এনজিও’র ঋণের টাকা আদায়ের চাপ ও মামলার হুমকী সইতে না পেরে লিপিকা মন্ডল (২৫) নামের এক গৃহবধূর গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। সে উপজেলার হরিদাসকাটি ইউনিয়নের পাঁচকাটিয়া গ্রামের বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ভ্যান চালক সুশান্ত মন্ডলের স্ত্রী। পুলিশ লিপিকা মন্ডলের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে।
স্থানীয় ইউপি মেম্বর স্বপন বিশ্বাস জানান, লিপিকা মন্ডল নারী হলেও শ্বশুরবাড়ির সংসারের এক প্রকার অভিভাবক ছিলেন তিনি। তার ১০ বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। স্বামীর পাশাপাশি তার শশুড়িও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। তিনি সরকারের কর্মসৃজন প্রকল্পে রাস্তার মাটি কাটার পাশাপাশি অন্যের ক্ষেতে মজুরির কাজ করতেন।
জানাযায়, গৃহবধূ লিপিকা মন্ডল ৭/৮টি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী স্বামীর ইঞ্জিন ভ্যান কিনে দেয়াসহ সংসারের কাজে খরচ করেছেন। সম্প্রতি তার অচল সংসারের কথা চিন্তা করে গ্রামীণ ব্যাংকসহ কয়েকটি এনজিও কর্তৃপক্ষ তাদের পাওনা টাকা না নিয়ে মাফ করে দিয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, মণিরামপুর ব্র্যাক অফিসের পাশে অবস্থিত নবলোক পরিষদ নামের এক এনজিও থেকে বছর খানেক আগে লিপিকা মন্ডল ২০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করে ১৭ হাজার টাকা পরিশোধ করেছেন। বাকী টাকা আদায়ের জন্য তার উপর চাপ সৃষ্টিসহ মামলা করে পুলিশ দিয়ে আটকের হুমকী দেয়া হয়।
মণিরামপুর থানার এসআই হাসানুজ্জামান জানান, তিনি স্থানীয়দের মাধ্যমে জেনেছেন এনজিও’র ঋণের টাকার জন্য গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে শ্বশুর বাড়ির নিজ ঘরের আড়ার সাথে গলায় রশি দিয়ে লিপিকা মন্ডল আত্মহত্যা করেন।
ঋণের টাকার জন্য গৃহবধূ লিপিকা মন্ডলকে চাপসৃষ্টিসহ মামলার হুমকীর বিষয়ে জানতে চাইলে নবলোক পরিষদ এনজিও’র মাঠকর্মী মাহাবুবুর রহমান তা অস্বীকার করে বলেন, বাকী টাকা আদায়ের জন্য তাকে হুমকী অথবা চাপ প্রয়োগ করা হয়নি।
এনজিওটির শাখা ব্যবস্থাপক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, তাদের ঋণ গ্রহীতা লিপিকা মন্ডলের আত্মহত্যার খবর তিনি শোনেনি। মাঠকর্মী মাহাবুবুর রহমান তাকে চাপসৃষ্টি অথবা হুমকী দিয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে।
খুলনা গেজেট/কেএম