যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই রাজ্যের মাউইয়ে ভয়াবহ দাবানলের আগুনে পুড়ে এখন পর্যন্ত ৫৩ জন নিহত হয়েছে। কর্তৃপক্ষ সতর্কতা দিয়েছে, এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) মৃত্যের সংখ্যা ৩৬ ছিল। যা বেড়ে এখন ৫৩ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া ভয়াবহ এই আগুনে ভষ্মীভূত হয়ে গেছে রাজ্যটির মাউই দ্বীপ।
ধ্বংসাত্মক এই দাবানল ঘনবসতিপূর্ণ এ অঞ্চলকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। এছাড়া পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে কয়েক হাজার অবকাঠামো। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ১৯৬১ সালের পর রাজ্যের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয় হতে যাচ্ছে এই দাবানল। ওই বছর সুনামিতে সেখানে ৬১ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন। মাউইয়ের গভর্নর জানিয়েছেন, দাবানলে আগুনে এরচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা করছেন তারা।
সর্বনাশা এই দাবানলের সূত্রপাত হয় গত মঙ্গলবার। ওইদনি মাউইয়ে তিনটি জায়গায় আগুন ধরে। এতে করে দ্বীপটির পুর্বাঞ্চলটি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এই আগুন এত দ্রুতই ছড়িয়ে পড়ে যে জীবন বাঁচাতে অনেকে সমুদ্রের পানিতে লাফিয়ে পড়েন। তাদের কয়েকজনকে পরবর্তীতে কোস্টগার্ড উদ্ধার করে। সমুদ্রে লাফিয়ে পড়াদের অনেকেই ধোঁয়ার কারণে শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যা এবং দ্বগ্ধ হয়ে আহত হয়েছিলেন।
আগুনে মাউইয়ের ঐতিহাসিক শহর লাহিনা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সেখানে দুই একটি অবকাঠামো ছাড়া আর কোনো কিছু অবশিষ্ট নেই বলে জানিয়েছেন স্থানীয় মেয়র।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বৃহস্পতিবার মাউইয়ের দাবানলকে ‘বড় বিপর্যয়’ হিসেবে ঘোষণা দেন। তার এ ঘোষণার কারণে এখন সেখানকার মানুষ কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তা পাবে।
হাওয়াইয়ের মাউইয়ে দাবানলের সূত্রপাত কীভাবে হলো সেই কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, দ্বীপটি অস্বাভাবিক খরার মধ্যে ছিল। আর এই খরার কারণ সেখানে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। এছাড়া সেখানে যেসব ঘাস ছিল সেগুলো বেশ দাহ্য ছিল। আর দাবানল দ্রুত ছড়ানোর কারণ হলো প্রশান্ত মহাসাগরে সৃষ্ট একটি হ্যারিকেন। এই হ্যারিকেনের বাতাসের ঝাপটায় কোনো কিছু বোঝার আগেই দ্রুত গতিতে পুরো দ্বীপে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান