যশোরে যৌতুকের দাবিতে মারপিট করে ভ্রুণ হত্যার অভিযোগে যবিপ্রবি’র দুই কর্মকর্তাসহ ছয়জনকে আসামি করে যশোর আদালতে মামলা হয়েছে। যবিপ্রবি’র সেকশন অফিসার বিপ্লব হোসেনের স্ত্রী বাদী হয়ে মঙ্গলবার এ মামলাটি দায়ের করেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঞ্জুরুল ইসলাম অভিযোগ আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন। এ মামলায় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি’র) সেকশন অফিসার বিপ্লব হোসেন, অফিসার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসানকে আসামি করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন, বিপ্লবের বাবা যশোর সদর উপজেলার হালসা গ্রামের আবু মুছা, মা নুর নাহার বেগম, বোন নওশিন শারমিলি বিভা, শহরের পুলিশ লাইন পাওয়ার হাউজপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে ফারুক হাসান হাওলাদার।
মামলায় বাদী বলেছেন, বাদীর সাথে আসামি বিপ্লব হোসেনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বিপ্লব তার সরলতার সুযোগ নিয়ে ভুয়া কাবিননামা তৈরি করে তার সাথে স্বামী-স্ত্রীর মতো জীবনযাপন করতে থাকে। তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাড়ি তুলে নিতে বল্লে নানা তালবাহানা শুরু করে। এরপর বাদী বাধ্য হয়ে আদালতে এ মামলা করেন। ওই মামলার সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশ হলে বিপ্লব চাকরি বাঁচানোর জন্য ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর তাকে বিয়ে করে। বিয়ের পর তার পরিবারের পক্ষ থেকে সংসারের যাবতীয় মালামাল ও বাড়ি করার জন্য দেড় লাখ টাকা দেয়া হয়। তারপরও নানা অজুহাতে বিপ্লব তাকে শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন করতে থাকে। এরমধ্যে বাদী অন্ত:সত্ত্বা হয়। বিষয়টি আসামি বিপ্লব মেনে নিতে না পেরে কৌশলে ওষুধ খাইয়ে বাদীর গর্ভের দুই মাস তিনদিনের সন্তান নষ্ট করে ফেলে। পরবর্তীতে আসামি বাদীর কাছে বাড়ির কাজের জন্য দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। এ টাকা না পেয়ে বিপ্লবসহ তার পরিবার নির্যাতন শুরু করে। এরমাঝে পুনরায় তিনি অন্ত:সত্ত্বা হলে আসামিরা সন্তান নষ্টের জন্য ফের ষড়যন্ত্র শুরু করে। এক পর্যায়ে গত ৯ অক্টোবর বিপ্লব ও তার পরিবারের সদস্যরা বাদীর তলপেটে লাথি ও কিলঘুষি মেরে গলা চিপে ধরে ওষুধ খাইয়ে দেয়। পরে যবিপ্রবির অফিসার এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান পুলিশ সেজে বিপ্লবের বাড়িতে যায়। সকল আসামিরা মিলে বাদীকে বেধড়ক মারপিট করে। এ ঘটনা বাদী তার পরিবারকে জানায়। বাদী পরিবারের পক্ষ থেকে ৯৯৯ কল করলে বিপ্লবের বাড়িতে পুলিশ যায়। পরে বাদীর মা ও স্থানীয়রা হালসায় বিপ্লবের বাড়িতে যেয়ে বাদীকে উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসা শেষে রোববার বাদী আদালতে এ মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত বিপ্লবের বক্তব্য নিতে তার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করলেও তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
খুলনা গেজেট/এএ