সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর এলাকায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তরের অভিযানে একটি গোডাউনে অবৈধভাবে ৫০০ বস্তা পেঁয়াজ মজুদ রাখার দায়ে এক ব্যবসায়িকে ৪৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে ভোমরা স্থলবন্দর এলাকার মেসার্স সৃষ্টি ট্রেডিং নামের একটি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের গোডাউনে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সাতক্ষীরার সহকারী পরিচালক মোঃ নাজমুল হাসান জানান, বাজারে কৃত্তিম সংকট তৈরি করে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর এলাকার কয়েকটি গোডাউনে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ মজুদ রাখা হয়েছে এমন গোপন সংবাদের ভিত্ততে তার নেতৃত্বে মঙ্গলবার দুপুরে সেখানে অভিযান চালানো হয়। এ সময় অবৈধভাবে প্রায় ৫০০ বস্তা আমদানিকৃত পেঁয়াজ মজুদ রাখার দায়ে মের্সাস সৃষ্টি ট্রেডিং এর স্বত্ত্বাধিকারী দীপঙ্কর মন্ডলকে ৪৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এসময় আগামী ১২ ঘন্টার মধ্যে গোডাউনে থাকা সমস্ত পেঁয়াজ বাজারজাত করার জন্য তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
অভিযান পরিচালনাকালে সেখানে আরো উপস্থিত ছিলেন, সাতক্ষীরা কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের পরিদর্শক মোঃ পারভেজ শরীফ, ক্যাবের সদস্য সাকিবুর রহমান বাবলাসহ প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকতারা।
এর আগে সোমবার (১১ ডিসেম্বর) ভোমরায় ভারতীয় আমদানিকৃত পেঁয়াজ মজুদ করে রাখার দায়ে ৪ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ১ লাখ ৫ হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমান আদালত। এছাড়া বেশ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিককে পেঁয়াজ মজুদ না করতে সতর্ক করা হয়। এরমধ্যে আখি ট্রেডার্সকে ২০ হাজার, এসআর এন্টারপ্রাইজকে ৫০ হাজার, আজাদ ইন্টারন্যাশনালকে ৩০ হাজার ও রাফসান ট্রেডার্সকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এদিকে ভোমরা বন্দরে পেঁয়াজের গোডাউনে অভিযানের পর একদিনের ব্যবধানে সাতক্ষীরার বাজারে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৭০ টাকা কমেছে। মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) সাতক্ষীরা শহরের সুলতানপুর বড়বাজারের পাইকারী বাজারে গিয়ে দেখা গেছে ভারতীয় আদমানিকৃত পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি এবং দেশী নতুন পেঁয়াজ ১০০ টাকা কেজি দরে। যা সোমবার (১১ডিসেম্বর) ছিল ১৯০ টাকা ও ১৬০ টাকা। অভিযানের খবরে হঠাৎ দর পতনে মূল্য বৃদ্ধিতে ব্যবসায়িদের কারসাজি বলে মন্তব্য করেছেন সাধারণ ক্রেতারা।
সুলতানপুর বড়বাজারের পাইকারী ব্যবসায়ি আব্দুল আজিজ জানান, মাত্র একদিনের ব্যবধানে হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম কমে গেছে। গতকাল ভারতীয় আমদানিকৃত পেঁয়াজ ১৯০ টাকা ও দেশী নতুন পেঁয়াজ ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছিলাম। আজ সেই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ১২০ টাকা ও ১০০ টাকা কেজি দরে।
পাইকারি ব্যবসায়ি মোঃ কামরুজ্জামান মুকুল জানান, আমার আড়তে বিক্রির জন্য সোমবার ৫ বস্তা পেঁয়াজ কিনেছিলাম ১৮০ টাকা কেজি দরে। হঠাৎ দাম পড়ে যাওয়ায় আজ সেই পেঁয়াজ ৬০ টাকা লসে ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে।
শহরের পলাশপোল এলাকার সিরাজুল ইসলাম জানান, অধিক মুনাফা লাভের আশায় এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়িরা পেঁয়াজ মজুদ করে রাখায় হঠাৎ করে বাজারে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রশাসনের অভিযানের খবরে একদিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কমেছে।
গত তিনদিন ধরে ভোমরা বন্দর দিয়ে ভারত থেকে কোন পেঁয়াজ বাংলাদেশে আসেনি তারপরও দাম কমলো কিভাবে এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, বাজারে মূল্য বৃদ্ধিতে সম্পূর্ন ব্যবসায়িদের কারসাজি রয়েছে। তারা কোন একটা কিছুর দোহাই দিয়ে বাজারে দাম বাড়িয়ে দিয়ে সাধারণ ক্রেতাদের ঠকিয়ে নিজেরা লাভবান হয়ে থাকে। তিনি বাজারে পেঁয়াজের মূল্য স্থিতিশিল রাখতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অব্যহত রাখার দাবি জানান।
খুলনা গেজেট/ এএজে